ইনসাইড পলিটিক্স

নারায়ণগঞ্জ কি জাতীয় নির্বাচনের টার্নিং পয়েন্ট?


প্রকাশ: 15/01/2022


Thumbnail

 আগামীকাল নারায়ণগঞ্জ সিটি কর্পোরেশনের (নাসিক) নির্বাচন অনুষ্ঠিত হতে যাচ্ছে। নির্বাচন নারায়ণগঞ্জে হলেও একাধিক কারণে এ নির্বাচনটি জাতীয় রাজনীতিতে অত্যন্ত গুরুত্বপূর্ণ হয়ে উঠেছে। ফলে নারায়ণগঞ্জ সিটি নির্বাচন গুরুত্বের সাথে পর্যবেক্ষণ করছেন রাজনৈতিক বিশ্লেষকরা। বিশেষ করে বিগত দুটি সংসদ নির্বাচনের পাশাপাশি স্থানীয় নির্বাচনের ভোটের পরিবেশ নিয়ে বিরোধী দলগুলোর বিস্তর অভিযোগের কারণে আগামী জাতীয় নির্বাচন ও নির্বাচনী পরিবেশ নিয়ে রাজনৈতিক মহল বেশ চিন্তিত। এ রকম পরিস্থিতিতে নারায়ণগঞ্জে অনুষ্ঠিত হতে যাওয়া নির্বাচনের পরিবেশ-পরিস্থিতির ওপর জাতীয় নির্বাচনের অনেক কিছু নির্ভর করবে এবং নাসিক নির্বাচনই আগামী সংসদ নির্বাচনের ব্যারোমিটার হিসেবে বিবেচিত হবে বলে মনে করছেন বিশ্লেষকরা।

দ্বাদশ জাতীয় সংসদ নির্বাচনের দুই বছরের বেশি সময় বাকি থাকলেও দেশের রাজনৈতিক দলগুলোর মধ্যে এ নিয়ে ইতোমধ্যে আলোচনা শুরু হয়েছে। বিগত দুটি সংসদ নির্বাচনের চিত্র ও কৌশল বিশ্লেষণ করে আগামী নির্বাচনের বহুমাত্রিক ছবি আঁকার চেষ্টা করছেন দলগুলোর নেতারা। স্থানীয় সরকার নির্বাচনে বিএনপি অংশগ্রহণ না করলেও নারায়ণগঞ্জে বিএনপির স্বতন্ত্র হিসেবে দাঁড়ানো প্রার্থী তৈমুর আলম খন্দকার আছেন। বিএনপি তৈমুর আলমকে দল থেকে অব্যাহতি দিলেও বহিষ্কার করেনি। ফলে তৈমুরকে অব্যাহতি দেওয়াকে নির্বাচনী কূটকৌশল হিসেবেই দেখছেন বিশ্লেষকরা। অন্যদিকে, তৈমুরের বিপরীতে আওয়ামী লীগের প্রার্থী হিসেবে নির্বাচনে আছেন ডা. সেলিনা হায়াৎ আইভী। নির্বাচনকে ঘিরে প্রচারণায় তেমন কোন অনিয়ম ঘটেনি। তৈমুর আলম খন্দকারও নির্বিঘ্নে প্রচার-প্রচারণা চালিয়েছেন। সরকার দলীয় নেতা-কর্মীদের দ্বারা কোনো ধরনের বাধার মুখেও পড়েননি, যদিও প্রচারণার শেষদিকে এসে তিনি বিভিন্ন অভিযোগ করেছেন। এমন দু'চারটি অভিযোগ প্রতিটি নির্বাচনেই উঠে বলে বিশ্লেষকরা মনে করেন। জাতীয় নির্বাচনের পরিবেশ যদি এরকম বা এর কাছাকাছিও রাখা যায়, তাহলে জাতিকে একটি ভালো নির্বাচন উপহার দেওয়া সম্ভব বলে মনে করছেন নির্বাচন বিশ্লেষকরা।

নারায়ণগঞ্জ সিটি নির্বাচনের সঙ্গে জাতীয় নির্বাচনের কোনো সম্পর্ক আছে কিনা, এ বিষয়ে জানতে চাইলে সুজন সম্পাদক ড. বদিউল আলম মজুমদার বাংলা ইনসাইডারকে বলেন, নারায়ণগঞ্জের সিটি নির্বাচন জাতীয় নির্বাচনের একটি ব্যারোমিটার হিসেবে কাজ করবে। অনেকেরই আশঙ্কা, ক্ষমতাসীন দল এতবছর ক্ষমতায় থাকার কারণে তাদের জনসম্পৃক্ততা কমে গেছে। নারায়ণগঞ্জে যদি সুষ্ঠু নির্বাচন হয়, তাহলে কোন দলের জনপ্রিয়তা বেশি, তার প্রমাণ পাওয়া যাবে এবং এর প্রভাব রাষ্ট্রীয় অন্যান্য প্রতিষ্ঠানের উপরও পড়বে। আইনশৃঙ্খলা রক্ষাকারী বাহিনী ও প্রশাসনেও এর প্রভাব পড়বে, নির্বাচনে যাদের ভূমিকা নিয়ে নিকট অতীতে অনেক প্রশ্ন উঠেছিল। নারায়ণগঞ্জ নির্বাচন যদি নিরপেক্ষ না হয়, এটি বর্তমান সংকটকে আরো ঘনীভূত করবে এবং আগামীতে নির্বাচনকে নিরপেক্ষ করার দাবিতে রাজপথেও আন্দোলন হতে পারে বলেও মনে করছেন তিনি।

উল্লেখ্য, সংবিধান অনুযায়ী জাতীয় নির্বাচনটি অনুষ্ঠিত হবে ২০২৩ সালের শেষ সপ্তাহে অথবা ২০২৪ সালের জানুয়ারির প্রথম সপ্তাহে। সেই হিসাবে বাকি রয়েছে দুই বছর তিন মাসের মতো সময়। করোনার সংক্রমণ যদি কমে আসতে থাকে তাহলে রাজনৈতিক সভা সমাবেশ বা কর্মকাণ্ড হয়ত স্বাভাবিক গতিতে দলগুলো পরিচালিত করতে মাঠে নামবে। কিন্তু সেই নামাটি নির্ভর করছে করোনার ভয়াবহতার উপর। ফলে আবার নতুন কোনো কোভিড ভ্যারিয়েন্টের রূপান্তর ঘটায় তাহলে পরিস্থিতি কী হবে বলা মুশকিল।


প্রধান সম্পাদকঃ সৈয়দ বোরহান কবীর
ক্রিয়েটিভ মিডিয়া লিমিটেডের অঙ্গ প্রতিষ্ঠান

বার্তা এবং বাণিজ্যিক কার্যালয়ঃ ২/৩ , ব্লক - ডি , লালমাটিয়া , ঢাকা -১২০৭
নিবন্ধিত ঠিকানাঃ বাড়ি# ৪৩ (লেভেল-৫) , রোড#১৬ নতুন (পুরাতন ২৭) , ধানমন্ডি , ঢাকা- ১২০৯
ফোনঃ +৮৮-০২৯১২৩৬৭৭