ইনসাইড হেলথ

আড়াই কোটিরও বেশি মানুষ করোনার টিকার দ্বিতীয় ডোজ নেয়নি


প্রকাশ: 15/01/2022


Thumbnail

করোনার টিকা নিয়ে শুরুতে মানুষের মাঝে যে সাজ সাজ রব দেখা গিয়েছিলো তা যেনো দিন দিন অনেকখানি কমে গেছে। করোনার টিকার প্রথম ডোজ গ্রহণের তুলনায় দ্বিতীয় ডোজ গ্রহণের পরিমাণ অনেকখানি কম। এদিকে সরকার আবার ৬০ ঊর্ধ্ব ব্যক্তিদের সুরক্ষার জন্য করোনার টিকার বুস্টার ডোজ শুরু করলেও দেশে এখনো প্রায় আড়াই কোটির বেশি মানুষ করোনার টিকার দ্বিতীয় ডোজ গ্রহণ করেনি। 

এর পেছনে সবচেয়ে বড় কারণ হিসেবে মানুষের অসেচনতাকে দায়ী করছে বিশেষজ্ঞরা। সঠিক প্রচারণা, টিকার সংক্রান্ত এসএমএস সঠিক সময়মত না আসা সহ নানা কারণ এর পেছনে দায়ী। তাছাড়া টিকা নিয়ে মানুষের ভিতরে উৎসাহকে বৃদ্ধি করানো নিয়ে সরকারের পক্ষ থেকে তেমন উদ্যোগ গ্রহণ না করানোকে দায়ী করছেন সংশ্লিষ্টরা। 

তবে এবারো এসব কিছুর দায়ভার নিতে নারাজ স্বাস্থ্য অধিদপ্তর। তাদের দাবি, প্রতিটি এলাকায় পর্যাপ্ত প্রচারণা চালানো হয়েছে। টিকাকে জনগণের দোরগোড়ায় পৌঁছে দেওয়া হয়েছে। বিভিন্ন সরকারি বেসরকারি প্রতিষ্ঠানগুলোতে টিকা নেওয়া বাধ্যতামূলক করা হয়েছে।

স্বাস্থ্য অধিদফতরের তথ্য বলছে, দেশে এখনও টিকার ২য় ডোজ নেয়নি এমন আড়াই কোটিরও বেশি মানুষের মধ্যে অক্সফোর্ড-অ্যাস্ট্রাজেনেকার কোভিশিল্ড টিকার দ্বিতীয় ডোজ নেয়নি ৮৩ লাখ ৮১ হাজার ৩৫ জন। এছাড়াও ফাইজারের টিকার দ্বিতীয় ডোজ নেয়নি ৬৫ লাখ ৬৩ হাজার ৪১৪ জন, মডার্নার টিকার দ্বিতীয় ডোজ নেয়নি ৬৯ হাজার ৮৬০ জন, সিনোফার্মের টিকার দ্বিতীয় ডোজ নেয়নি ৭৯ লাখ ২৮ হাজার ৩০৫ জন, সিনোভ্যাক টিকার দ্বিতীয় ডোজ নেয়নি ২২ লাখ ১৪ হাজার ৫৮০ জন। সবমিলে দেশে প্রথম ডোজের টিকা নিয়ে এখনও দ্বিতীয় ডোজ নেয়নি ২ কোটি ৫১ লাখ ৫৭ হাজার ১৯৪ জন।

দেশে গত বছরের (২০২১ সাল) ২৭ জানুয়ারি করোনার টিকাদান কার্যক্রম শুরু হয়। প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা রাজধানীর কুর্মিটোলা জেনারেল হাসপাতালে এ কর্মসূচির উদ্বোধন করেন। ভারতের সিরাম ইনস্টিটিউট উৎপাদিত অক্সফোর্ড অ্যাস্ট্রোজেনেকার টিকার মাধ্যমে দেশে টিকাদান শুরু হলেও বর্তমানে ফাইজার, সিনোফার্ম এবং মডার্নার টিকা দেওয়া হচ্ছে।

রোগতত্ত্ব, রোগ নিয়ন্ত্রণ ও গবেষণা প্রতিষ্ঠানের (আইইডিসিআর) উপদেষ্টা ও সাবেক প্রধান বৈজ্ঞানিক কর্মকর্তা ডা. মুশতাক হোসেন বলেন, বিভিন্ন কারণে মানুষের মধ্যে টিকা নেওয়ার আগ্রহ কমে গেছে। আবার কেউ কেউ টিকার প্রথম ডোজ নিয়ে দ্বিতীয় ডোজের জন্য অপেক্ষা করছে। অনেকেই আছে স্থান পরিবর্তনের কারণে কীভাবে দ্বিতীয় ডোজ দেবে সেটি বুঝতে পারছে না। সবমিলিয়ে টিকা নেওয়ার প্রতি মানুষের আগ্রহ কমে গেছে, পাশাপাশি অনেকে টিকা নিতে চাইলেও নানা জটিলতায় পড়ছেন।

তিনি বলেন, অনেকে বলে আমি তো চট্টগ্রাম ছিলাম, এখন ঢাকায় চলে এসেছি। ওখানে প্রথম ডোজ দিলেও ঢাকায় কীভাবে দ্বিতীয় ডোজ দেবো বুঝতে পারছি না। আবার অনেকেই বলছে প্রথম রোজ নেওয়ার দীর্ঘ দিন পার হলেও দ্বিতীয় ডোজ টিকার কোনো এসএমএস পাচ্ছে না। অনেকের মেসেজ আসলেও আবার সে খেয়াল করেনি, টিকা কার্ড ডাউনলোড করলে সে দেখতে পারবে। এসব বিষয়ে মানুষকে অবহিত করা দরকার। তাহলেই প্রথম এবং দ্বিতীয় ডোজের মাঝখানে এই গ্যাপের পরিমাণ অনেকটাই কমে আসবে।

বিশিষ্ট এই সংক্রমণ বিশেষজ্ঞ আরও বলেন, যারা প্রথম ডোজ নেওয়ার পর দ্বিতীয় ডোজ নিচ্ছে না, স্থানীয় স্বাস্থ্য কর্তৃপক্ষের কাছে তো তাদের সব ধরনের ডাটা আছে। স্বাস্থ্য কর্তৃপক্ষ যোগাযোগ করুক, তাদের ফোন করে জানতে চাওয়া হোক কেন তারা দ্বিতীয় ডোজ নিচ্ছে না। তাদের যদি কোনো সমস্যা থেকে থাকে সেক্ষেত্রে প্রয়োজনে তাদের সহায়তা করা হোক। এক্ষেত্রে সারাদেশে আমাদের হাজার হাজার ভলান্টিয়ার আমরা চাইলেই কাজে নামিয়ে দিতে পারি। তারা মানুষকে ফোন করে টিকা নিতে উদ্বুদ্ধ করতে পারে।


প্রধান সম্পাদকঃ সৈয়দ বোরহান কবীর
ক্রিয়েটিভ মিডিয়া লিমিটেডের অঙ্গ প্রতিষ্ঠান

বার্তা এবং বাণিজ্যিক কার্যালয়ঃ ২/৩ , ব্লক - ডি , লালমাটিয়া , ঢাকা -১২০৭
নিবন্ধিত ঠিকানাঃ বাড়ি# ৪৩ (লেভেল-৫) , রোড#১৬ নতুন (পুরাতন ২৭) , ধানমন্ডি , ঢাকা- ১২০৯
ফোনঃ +৮৮-০২৯১২৩৬৭৭