এডিটর’স মাইন্ড

নারায়ণগঞ্জ সিটি নির্বাচন: চমকের অপেক্ষা


প্রকাশ: 15/01/2022


Thumbnail

নারায়ণগঞ্জ সিটি নির্বাচনে কি কোনো চমক হবে? আজ নির্বাচনী প্রচারণা ছিল না কিন্তু তারপরও তৈমুর আলম খন্দকার সংবাদ সম্মেলন করে বলেছেন যে, তিনি নির্বাচনে লক্ষাধিক ভোটে বিজয়ী হবেন এবং মরে গেলেও মাঠ ছাড়বো না। তার এই বক্তব্যের আগেই গতকাল নারায়ণগঞ্জের কিছু ভোটার তাকে চমকে দেন। তিনি যখন জনসংযোগ করছিলেন তখন কয়েক'শ মানুষ হঠাৎ করেই তার সঙ্গে যুক্ত হন। এই সমস্ত ঘটনাগুলো নারায়ণগঞ্জ নির্বাচনে চমকের আভাস দিচ্ছে। তবে রাজনৈতিক বিশ্লেষকরা বলছেন যে, নারায়ণগঞ্জ নির্বাচনে শেষ পর্যন্ত কোনো চমক হবেনা, নির্বাচনে অনিবার্যভাবেই আওয়ামী লীগের প্রার্থী সেলিনা হায়াৎ আইভী বিজয়ী হবে। চমক হোক না হোক, নারায়ণগঞ্জ থেকে একটি সুষ্ঠ নির্বাচন জাতি প্রত্যাশা করে। বিশেষ করে গত কিছুদিন ধরে মানুষের মধ্যে নির্বাচন সম্পর্কে যে অনীহা, অনাস্থা তৈরি হয়েছে সেই অনীহা, অনাস্থা দূর করার ক্ষেত্রে নারায়ণগঞ্জ নির্বাচন একটি গুরুত্বপূর্ণ ভূমিকা পালন করবে বলে অনেকে বিশ্বাস করে। নানা কারণে নারায়ণগঞ্জ নির্বাচনের ব্যাপারে ভোটাররা এবং সাধারণ জনগণ আশাবাদী হয়ে উঠেছেন।

প্রথমত, এই নির্বাচনে দুই পক্ষই সমান্তরালভাবে প্রচারণা করেছে। আওয়ামী লীগের প্রার্থী আইভী এবং বিএনপির স্বতন্ত্র প্রার্থী তৈমুর আলম খন্দকার দুজনেই প্রায় সমানে-সমানে প্রচারণা করেছেন। অনেক সময় দেখা যায় যে, নির্বাচনী প্রচারণার মাঝপথেই অভিযোগ ওঠে যে বিএনপিকে নির্বাচনী প্রচারণা করতে দেওয়া হচ্ছে না বা বিরোধীদলের পোস্টার লাগাতে দেওয়া হচ্ছে না, বিরোধী দলের কর্মীদেরকে বাদ দেওয়া হচ্ছে ইত্যাদি ইত্যাদি এবার নারায়ণগঞ্জের নির্বাচনে এ ধরনের কোন ঘটনাই ঘটেনি। বরং এই নির্বাচনের প্রচারণার শেষদিন পর্যন্ত দুই পক্ষই সমান প্রতিদ্বন্দ্বিতা করে নির্বাচনী প্রচারণা করেছেন।

দ্বিতীয়ত, নারায়ণগঞ্জ নির্বাচনে কাদা ছোড়াছুড়ি কম হয়েছে। একবার মাত্র তৈমুর আলম খন্দকার আইভীকে গডমাদার বলে সম্বোধন করেছিলেন এর কিন্তু পরবর্তীতে তিনি এই ধরনের নেতিবাচক প্রচারণার দিকে আর এগিয়ে যাননি।

তৃতীয়ত, নারায়ণগঞ্জে প্রশাসন এবং আইনশৃঙ্খলা রক্ষাকারী বাহিনীকে মোটামুটি নিরপেক্ষ ভূমিকাই পালন করতে দেখা গেছে প্রচারণার সময়।

চতুর্থত, অন্যান্য নির্বাচনে যেটা দেখা যায় যে বিএনপি মনোনীত প্রার্থী শেষ মুহূর্তে নির্বাচনে প্রচারণা থেকে সরে দাঁড়ান, ভোটের দু'এক ঘণ্টা পরেই তারা নানা রকম অভিযোগ এনে ভোট থেকে নিজেকে গুটিয়ে নেন। কিন্তু তৈমুর আলম খন্দকার বলেছেন যে, মরে গেলেও তিনি নির্বাচন থেকে সরে দাঁড়াবেন না। অবশ্য এর আগে আরেকবার নির্বাচনে প্রতিদ্বন্দ্বিতা করে তিনি নির্বাচনের দিন নিজেকে গুটিয়ে নিয়েছিলেন। তবে এবার তিনি সেটি করবেন না বলে জনগণকে আশ্বস্ত করেছেন।

ফলে শেষ পর্যন্ত নারায়ণগঞ্জে ভোট উৎসবে সাধারণ মানুষ ফিরবে, এটাই সকলে প্রত্যাশা করে। সাধারণ মানুষ যদি ভোট দেয় তাহলে সেটিই হবে বাংলাদেশের নির্বাচনে একটা বড় চমক। ২০১৮ সালের পর থেকে নির্বাচন সম্পর্কে যে অনাস্থা এবং অনীহা সেটা দূর করার ক্ষেত্রে নারায়ণগঞ্জ একটা বড় ভূমিকা পালন করবে বলে অনেকে প্রত্যাশা করেন। পাশাপাশি একটি অবাধ, সুষ্ঠু এবং নিরপেক্ষ নির্বাচনের মাধ্যমে নারায়ণগঞ্জবাসী তাদের মেয়র বাছাই করবে। এর ফলে নির্বাচন নিয়ে যে সংকট এবং নেতিবাচক কথাবার্তা, সেটিও অনেকাংশে দূর হবে বলে অনেক মহল আশা করে। নারায়ণগঞ্জের নির্বাচনে চমক হোক বা নাই হোক, নির্বাচনের পরে যেন সকল পক্ষ এই নির্বাচনকে সুষ্ঠু নির্বাচন হিসেবে স্বীকৃতি দেয় সেটি হবে নারায়ণগঞ্জ সিটি নির্বাচনের সবচেয়ে বড় প্রাপ্তি। ভোটাররা সেই প্রত্যাশাই করেন।


প্রধান সম্পাদকঃ সৈয়দ বোরহান কবীর
ক্রিয়েটিভ মিডিয়া লিমিটেডের অঙ্গ প্রতিষ্ঠান

বার্তা এবং বাণিজ্যিক কার্যালয়ঃ ২/৩ , ব্লক - ডি , লালমাটিয়া , ঢাকা -১২০৭
নিবন্ধিত ঠিকানাঃ বাড়ি# ৪৩ (লেভেল-৫) , রোড#১৬ নতুন (পুরাতন ২৭) , ধানমন্ডি , ঢাকা- ১২০৯
ফোনঃ +৮৮-০২৯১২৩৬৭৭