পূর্ববাংলার মানুষের অধিকার ও স্বার্থ আদায়ে বিশ শতকের গোঁড়ার দিকে যিনি নেতৃত্বের হাল ধরেন, তিনি হলেন নওয়াব স্যার সলিমুল্লাহ। আজ জাতীয় ইতিহাসের অন্যতম রূপকার নবাব স্যার সলিমুল্লাহর ১০৭ তম মৃত্যুবার্ষিকী।
১৯১৫ সালের এই দিনে তিনি মারা যান এবং ঢাকার ঐতিহাসিক আহসান মঞ্জিলে ১৮৬৬ সালে সলিমুল্লাহ জন্মগ্রহণ করেন। তার পিতা নবাব খাজা আহসানউল্লাহ ও দাদা নবাব খাজা আবদুল গনি। নবাব স্যার খাজা সলিমুল্লাহ ঢাকার চতুর্থ নবাব ছিলেন এবং তিনি মাত্র ৪৪ বছর জীবনে ১৪ বছর ঢাকার নবাব ছিলেন।
তিনি নিখিল ভারত মুসলিম লীগের অন্যতম প্রতিষ্ঠাতা। এ ছাড়া ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয় প্রতিষ্ঠার জন্য তিনি বিশেষ ভূমিকা পালন করেন। যদিও তিনি জীবদ্দশায় এই বিশ্ববিদ্যালয় দেখে যেতে পারেননি। প্রচলিত আছে যে, তিনি ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয় প্রতিষ্ঠার জন্য নিজের জমি দান করেছেন, যদিও প্রকৃতপক্ষে এটি একটি শ্রুতি বা মিথ। দান করার মতো জমি নবাব পরিবারের ছিলো না। ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয় প্রতিষ্ঠিত হয়েছে সরকারি খাসজমিতে।
১৮৯৩ সালে তিনি ডেপুটি ম্যাজিস্ট্রেটের চাকরি নেন। ১৮৯৫ সালে চাকরি ছেড়ে ময়মনসিংহে ব্যবসা শুরু করেন। ১৯০১ সালে পিতার মৃত্যুর পর জীবিত জ্যেষ্ঠ পুত্র হিসেবে তিনি ঢাকা নবাব এস্টেট এর কর্তৃত্ব লাভ করেন।পূর্বপুরুষের আর্থিক স্থিতিশীলতা নবাব সলিমুল্লাহর সময়ে এসে ব্যাহত হয়েছিল।
শিক্ষা, সমাজ, জনকল্যাণমূলক কাজের সঙ্গে নানা ধরনের সাংস্কৃতিক চিন্তা ও কর্ম ছিল নবাব স্যার সলিমুল্লাহর জীবনের অপরিহার্য অংশ। তার পৃষ্ঠপোষকতার ফলে উনিশ শতকের শেষ ভাগ থেকে বিশ শতকের প্রায় দেড় দশক পর্যন্ত শাহবাগের নওয়াব বাড়ি শুধু রাজনৈতিক বা সামাজিক কর্মস্থলই নয়, নাটক, সঙ্গীত, চিত্রকলা, ক্রীড়া তথা দেশের প্রধান সংস্কৃতি চর্চার কেন্দ্রে পরিণত হয়েছিল।