ইনসাইড টক

‘মানুষ স্বাভাবিক জীবনে ফিরে আসতে চাইছে’


প্রকাশ: 18/01/2022


Thumbnail

স্বাধীনতা চিকিৎসা পরিষদ (স্বাচিপ) এর মহাসচিব অধ্যাপক ডা. এম এ আজিজ বলেছেন, দক্ষিণ আফ্রিকায় ওমিক্রন ধরা পড়ার পরে এটি নিয়ে বিশ্ব স্বাস্থ্য সংস্থা হু’সহ জনস্বাস্থ্য বিশেষজ্ঞ এবং গবেষকরা সম্মিলিতভাবে কোনো মতামত দিচ্ছে না। বিশ্ব স্বাস্থ্য সংস্থা প্রথমে বললো যে এটি সুনামি। কিন্তু পরবর্তী সময়ে দেখা গেলো হু তার অবস্থান থেকে সরে এসেছে। আবার ইসরাইলের একজন চিকিৎসক টুইটারে বললো যে, ওমিক্রনের মৃদু উপসর্গ। সেরকম ভয়াবহতা নেই। পাশাপাশি তিনি ওমিক্রনে আক্রান্ত হলে রোগ প্রতিরোধ ক্ষমতা বাড়বে এবং করোনা মহামারি এই বছরই শেষ হবে বলে দাবি করেন। ফলে এ নিয়ে অনেক আলোচনা-সমালোচনা আমরা দেখছি। 

ইউরোপের করোনা সংক্রমণের বিধিনিষেধ থেকে সরে আসা, দেশে করোনার প্রকোপ বেড়ে যাওয়া, করোনার নতুন ভ্যারিয়েন্ট ওমিক্রন, চলমান বিধি-নিষেধসহ বিভিন্ন বিষয় নিয়ে বাংলা ইনসাইডারের সঙ্গে একান্ত আলাপচারিতায় এসব কথা বলেছেন অধ্যাপক ডা. এম এ আজিজ। পাঠকদের জন্য অধ্যাপক ডা. এম এ আজিজ এর সাক্ষাৎকার নিয়েছেন বাংলা ইনসাইডারের নিজস্ব প্রতিবেদক অলিউল ইসলাম।

অধ্যাপক ডা. এম এ আজিজ বলেন, করোনা নিয়ে গবেষকদের মধ্যেও একাধিক মতামত আমরা লক্ষ্য করেছি। কোনো কোনো গবেষক ওমিক্রন নিয়ে সতর্ক থাকতে বলছেন। আবার কোনো কোনো গবেষক বলছে যে, এর ভয়াবহতা নেই। ফলে এটি নিয়ে এখনও বিভিন্ন আলাপ-আলোচনা চলছে। 

ইউরোপের পরিস্থিতি নিয়ে ডা. এম এ আজিজ বলেন, স্পেনসহ ইউরোপের দেশগুলো হয়তো পরিস্থিতি বিবেচনা করেছে যে, ওমিক্রন দ্রুতগতিতে সংক্রমণ ঘটালেও এর ভয়াবহতা কম এবং মৃদু উপসর্গ। এছাড়া গত দুই বছর সারাবিশ্ব এই করোনা নিয়ে একটি বিপদজনক অবস্থায় ছিল। এর ফলে সব দেশের মানুষই এখন স্বাভাবিক জীবনে ফিরে আসতে চাইছে। মানুষের নিজস্ব কাজকর্ম, অফিস-আদালতসহ সবকিছু বন্ধ করে তো বেশিদিন থাকা যায় না। সেই প্রেক্ষাপটে হয়তোবা ইউরোপের দেশগুলো স্বাভাবিক জীবনে ফিরতে যাচ্ছে।

এই পরিস্থিতিতে বাংলাদেশের করণীয় কি, জানতে চাইলে এম এ আজিজ বলেন, বিভিন্ন দেশের নামকরা গবেষক ও ডাক্তারদের মতামতের ভিত্তিতে আমাদের চলতে হবে। যেহেতু বিশ্ব স্বাস্থ্য সংস্থা এটি নিয়ে স্পষ্টভাবে কিছু বলছে না, সেই প্রেক্ষাপটে আমরা মনে করি যে, আমাদের এই মুহূর্তে সবচেয়ে বেশি গুরুত্ব দিতে হবে মাস্ক, স্বাস্থ্যবিধি মানা এবং টিকা নেওয়া। এই তিনটি জিনিসই গুরুত্বপূর্ণ। কারণ আপনি যদি শুধুমাত্র মাস্ক পড়েন, তাহলেই আপনি ৭০ শতাংশ ঝুঁকিমুক্ত থাকবেন। পাশাপাশি স্বাস্থ্যবিধি মানলেও আপনি অনেকটাই নিরাপদে থাকবেন এবং আমরা দেখেছি যারা টিকা নিয়েছে, তাদেরও খুব একটা হচ্ছে না। হলেও মৃদু উপসর্গ। 

তিনি বলেন, যারা হাসপাতালে ভর্তি হচ্ছে, তাদের মধ্যে টিকা নেওয়া লোক খুব একটা পাওয়া যাচ্ছে ন। ডেল্টা ভ্যারিয়েন্টে আক্রান্ত রোগীদের মধ্যে কিছু টিকা নেওয়া লোক পাওয়া গেলেও ওমিক্রনে আক্রান্ত লোক পাওয়া যাচ্ছে না। যেমন বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবুর রহমান বিশ্ববিদ্যালয়ের একটি রিপোর্টে দেখা গেছে, হাসপাতালে যারা ভর্তি হয়েছে, তারা সবাই ডেল্টা ভ্যারিয়েন্টে আক্রান্ত। অর্থাৎ শতভাগই ডেল্টা। আবার আউটডোরে যেসব রোগী এসেছে, তাদের নিয়ে একটি গবেষণায় দেখা গেছে যে, রোগীদের মাত্র ২০ শতাংশ ওমিক্রনে আক্রান্ত। এসব রোগীদের ক্ষেত্রে দেখা যাচ্ছে যে, রোগীদের মধ্যে অধিকাংশই টিকা নেননি। সেই ক্ষেত্রে আমার মনে হয় যে, এখন যেহেতু সহজেই টিকা পাওয়া যাচ্ছে, সেই ক্ষেত্রে মানুষের টিকা নিয়ে নেওয়া উচিত। আমাদের পর্যাপ্ত টিকা মজুদ আছে, আরও আসছে। সরকারও টিকা নেওয়ার নিয়ম-নীতি সহজ করেছে। ছাত্রদের দিচ্ছে। বয়স্কের বয়সও ৫০ নির্ধারণ করা হয়েছে। যেহেতু নিয়ম-নীতি সহজতর করা হচ্ছে, সেই প্রেক্ষিতে জনগণের উচিত এটি নিয়ে হেলা না করে যত দ্রুত সম্ভব টিকা নিয়ে নেওয়া।

আমাদের মতো ঘনবসতির দেশে বিধিনিষেধ কতটা মানা সম্ভব প্রশ্নের জবাবে তিনি বলেন, আমরা যদি বিগত দুই বছরের কথা বিবেচনা করি, তাহলে আমরা দেখবো যে সংক্রমণের হার গত মাসেও ১ শতাংশের নিচে নেমে এসেছিল। মানুষও স্বস্তির জায়গায় ফিরে গিয়েছিল এবং স্বাভাবিক জীবনযাপন করা শুরু করেছিল। কিন্তু করোনা পরিস্থিতি আবার খারাপের দিকে যেতে শুরু করেছে। মানুষকে তার স্বাভাবিক জীবনযাপন থেকে আগের জায়গায় অর্থাৎ বিধিনিষেধ মেনে চলতে একটু সময় লাগবে। তবে আমি মনে করি যে, এই সমস্যাটি শুধু আমাদের দেশেই নয়, উন্নত বিশ্বেও একই অবস্থা।


প্রধান সম্পাদকঃ সৈয়দ বোরহান কবীর
ক্রিয়েটিভ মিডিয়া লিমিটেডের অঙ্গ প্রতিষ্ঠান

বার্তা এবং বাণিজ্যিক কার্যালয়ঃ ২/৩ , ব্লক - ডি , লালমাটিয়া , ঢাকা -১২০৭
নিবন্ধিত ঠিকানাঃ বাড়ি# ৪৩ (লেভেল-৫) , রোড#১৬ নতুন (পুরাতন ২৭) , ধানমন্ডি , ঢাকা- ১২০৯
ফোনঃ +৮৮-০২৯১২৩৬৭৭