ইনসাইড হেলথ

সর্দি-জ্বরে পরিণত হবে করোনা?


প্রকাশ: 18/01/2022


Thumbnail

ওমিক্রনে লণ্ডভণ্ড হচ্ছে পুরো বিশ্ব। মার্কিন যুক্তরাষ্ট্রে ওমিক্রনের কারণে দোকানে খাবার পাওয়া যাচ্ছেনা, বিভিন্ন ফ্লাইট বাতিল হয়ে যাচ্ছে। ইউরোপেও ওমিক্রনের তাণ্ডবে লণ্ডভণ্ড হচ্ছে গোটা ইউরোপ। কিন্তু এই সমস্ত তাণ্ডবের পরও কোন দেশই এখনো লকডাউনে যাচ্ছে না। একমাত্র চীন ছাড়া লকডাউনে ফিরছে না কোন দেশই। বরং তারা অর্থনীতিকে গতিশীল করার ওপরই জোর দিচ্ছে। মার্কিন যুক্তরাষ্ট্র এখন নিয়ম করেছে, ওমিক্রনে আক্রান্ত হওয়ার পর পাঁচ দিনের মাথায় যে কেউ যদি করোনা পরীক্ষা করে নেগেটিভ পায়, বের হতে পারবেন। আগে যেটি ছিলো ১৪ দিন, তা এখন পাঁচদিনে পরিণত হয়েছে। যুক্তরাজ্য এটিকে ১০ দিন করেছে আর ইউরোপীয় দেশগুলো করেছে ৭ দিন।

ওমিক্রনের সংক্রমণ তীব্র হলেও এটি তেমন আতঙ্ক ছড়াচ্ছে না এই কারণে যে ওমিক্রনে আক্রান্ত ব্যক্তির হাসপাতালে ভর্তি হওয়ার সম্ভাবনা অনেক কম। সাধারণত ওমিক্রনে আক্রান্ত হলে হালকা উপসর্গ দেখা যাচ্ছে এবং তারপরই আক্রান্ত ব্যক্তি স্বাভাবিক জীবনে ফিরে আসছেন। আর এ কারণেই ওমিক্রনকে পাত্তা দিচ্ছে না বিশ্ব। বরং ওমিক্রনের চেয়ে অর্থনৈতিক সংকট মোকাবেলার দিকে গুরুত্ব দিচ্ছে সারা বিশ্ব। গোটা বিশ্বের মতো বাংলাদেশেও করোনার দাপট বাড়তে শুরু করেছে। গত কয়েকদিন ধরে লাফিয়ে লাফিয়ে বাড়ছে করোনার সংক্রমণ কিন্তু তারপরও সরকারও এখন পর্যন্ত যে ১১ দফা বিধিনিষেধ কাগজে-কলমে দিয়েছে সে বিধিনিষেধ ছাড়া নতুন কোনো বিধিনিষেধ দেয়নি। কাগজে-কলমে যে বিধি-নিষেধ দেয়া হয়েছে সেই বিধি-নিষেধও বাস্তবায়নের দিকে খুব একটা মনোযোগ দেয়া যাচ্ছে না। আর এ কারণেই মনে করা হচ্ছে যে, এখন করোনার যে ভয় ২০২০ সালে মানুষ পেয়েছিল সেই ভয়ে কাটতে শুরু করেছে। করোনাকে এখন একটা স্বাভাবিক অসুখ হিসেবেই মানুষ মেনে নিতে শুরু করেছে এবং করোনার সঙ্গে বসবাসের অভ্যস্ততা মানুষের মধ্যে তৈরি হচ্ছে।

বিশেষজ্ঞরা বলছেন যে, বিশ্ব স্বাস্থ্য সংস্থা বা চিকিৎসা বিশেষজ্ঞরা যাই বলুক না কেন, সামনের দিনগুলোতে করোনা সর্দি-কাশির মত হয়ে যাবে। বাংলাদেশে করোনা বিশেষজ্ঞরা বলছেন যে, বাংলাদেশের যে পরিমাণ ওমিক্রনের হিসেবে দেখানো হচ্ছে বাস্তবায়ন এখন ওমিক্রন ঘরে ঘরে ছড়িয়ে পড়েছে, ঘরে ঘরে নানারকম সর্দি-কাশি হচ্ছে। কিন্তু মানুষ এইসব সর্দি-কাশির কারণে করোনা পরীক্ষার ক্ষেত্রে তেমন উৎসাহী নয়। বরং তারা সর্দি-কাশি নিয়ে এক-দুইদিন বাসায় থেকে আবার বেরিয়ে যাচ্ছে। এর ফলে ওমিক্রনের সামাজিক সংক্রমণ হচ্ছে। কিন্তু প্রথম দিকে বা গত বছরও ডেল্টার যে ভয়াবহতা, তার চিহ্ন দেখা যাচ্ছে না। এর ফলে মানুষ এটিকে ৮-১০টা স্বাভাবিক অসুখ, বিশেষ করে সর্দি-জ্বর, ফ্লুর মতো অসুখ হিসেবে মানতে শুরু করেছে। কোন কোন আশাবাদী বিশ্লেষকরা মনে করছেন যে, এটি হলো করোনার শেষের শুরু। ওমিক্রনের মধ্য দিয়ে বিশ্ব থেকে করোনা বিদায় নিবে অথবা করোনার সঙ্গে মানুষ বসবাসে অভ্যস্ত হবে। করোনা হয়ে যাবে অন্য ৮-১০টা অসুখের মতো, যেটি থাকলে মানুষ আতঙ্কিত হবেন না বরং চিকিৎসা নিয়ে সুস্থ হয়ে স্বাভাবিক জীবনে ফিরে আসবে।

ইতিমধ্যে করোনার টিকা কার্যক্রম সারা বিশ্বেই চলছে এবং উন্নত দেশগুলো বুস্টার ডোজ দেওয়া শুরু করেছে। উন্নত দেশের সাথে তাল মিলিয়ে বাংলাদেশের মতো দেশগুলো এখন সীমিত আকারে বুস্টার ডোজ চালু করেছে। এখন পর্যন্ত বাংলাদেশে ৭ লক্ষের বেশি মানুষ বুস্টার ডোজ দিয়েছে। অন্যদিকে, স্বাস্থ্যবিধি মানা এবং বিশ্বের বিভিন্ন দেশে করোনার ওষুধও ব্যবহার হচ্ছে। এই সবকিছুই করোনাকে একটি সাদামাটা রোগ হিসেবে উপস্থাপিত করবে এবং বিশ্বের মানুষ করোনার সঙ্গে বসবাসের অভ্যস্ততা অর্জন করবে বলে মনে করছেন কেউ কেউ। এই বছরই হয়তো সে বছর যখন করোনা একটি সাধারণ সর্দি-জ্বরের মতো অসুখে পরিণত হবে।


প্রধান সম্পাদকঃ সৈয়দ বোরহান কবীর
ক্রিয়েটিভ মিডিয়া লিমিটেডের অঙ্গ প্রতিষ্ঠান

বার্তা এবং বাণিজ্যিক কার্যালয়ঃ ২/৩ , ব্লক - ডি , লালমাটিয়া , ঢাকা -১২০৭
নিবন্ধিত ঠিকানাঃ বাড়ি# ৪৩ (লেভেল-৫) , রোড#১৬ নতুন (পুরাতন ২৭) , ধানমন্ডি , ঢাকা- ১২০৯
ফোনঃ +৮৮-০২৯১২৩৬৭৭