ইনসাইড টক

‘হল খোলা রেখে অনলাইন ক্লাসের কোনো মানে নেই’


প্রকাশ: 19/01/2022


Thumbnail

জগন্নাথ বিশ্ববিদ্যালয়ের সাবেক উপাচার্য এবং ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের মার্কেটিং বিভাগের অধ্যাপক ড. মীজানুর রহমান বলেছেন, আমার মনে হয় ইতোমধ্যে হলগুলোতে প্রায় সবাই আক্রান্ত হয়ে গেছে। তবে এখন পর্যন্ত কাউকেই হাসপাতালে ভর্তি হতে হয়নি এবং সবাই এমনিতেই ভালো হয়ে গেছে। ১০ থেকে ১৫ দিন আগে হয়তো আক্রান্ত হয়েছিল, পরে নিজের অজান্তেই ভালো হয়ে গেছে। তবে ঠিক কতজন আক্রান্ত আর কতজন হয়নি, তা স্বাস্থ্য বিভাগ ভালো বলতে পারবে। 

বিশ্ববিদ্যালয়ের হলগুলোতে করোনা প্রকোপ বৃদ্ধি পাওয়া, শাবিপ্রবিতে শিক্ষার্থীদের চলমান আন্দোলনসহ নানা বিষয়ে বাংলা ইনসাইডার এর সঙ্গে একান্ত আলাপচারিতায় অধ্যাপক ড. মীজানুর রহমান এসব কথা বলেছেন। পাঠকদের জন্য অধ্যাপক ড. মীজানুর রহমান এর সাক্ষাৎকার নিয়েছেন বাংলা ইনসাইডার এর নিজস্ব প্রতিবেদক অলিউল ইসলাম।

ড. মীজানুর রহমান বলেন, আমার ধারণা, ঢাকা শহরের অধিকাংশ মানুষ ইতোমধ্যে আক্রান্ত হয়ে গেছে। এখন যারা হলে আছে তাদের মধ্যে যদি একজন আক্রান্ত হয়, তাহলে তো ওই রুম, আশেপাশের সকল ছাত্রই আক্রান্ত হয়েছে। হলে আবার ভালোও হয়ে গেছে এবং তেমন কোনো লক্ষণও শিক্ষার্থীরা বুঝতে পারেনি। হালকা সর্দি-কাশি হয়তো হয়েছে। এগুলো তো আমাদের এমনিতেই হয়। স্বাস্থ্য মন্ত্রণালয় যদি হল বন্ধের কথা বলে তাহলে ব্যবস্থা নেওয়া হবে। কিন্তু মন্ত্রণালয় এখনও এ ধরণের কোনো নির্দেশ দেয়নি। 

অনলাইন এবং সরাসরি ক্লাস নিয়ে বিশ্ববিদ্যালয়গুলোর স্বমন্বয়হীনতা আছে কিনা জানতে চাইলে মীজানুর রহমান বলেন, বর্তমানে আমাদের বিশ্ববিদ্যালয়গুলোতে অনলাইন-অফলাইন, দুইভাবেই ক্লাস চলছে। বিশ্ববিদ্যালয়গুলোতে স্বমন্বয়হীনতা বলে কিছু নেই, সব মিডিয়ার সৃষ্টি। এখন এক মিডিয়া থেকে আমারে প্রশ্ন করা হলো, আমি একভাবে বললাম, পরে আবার মার্কেটিং বিভাগের চেয়ারম্যানকে আলাদা করে এই বিষয় নিয়ে প্রশ্ন করলে ওনি তো আমার মতো করে বলবে না। এখন কথা একরকম হয়নি বলেই তো আপনি স্বমন্বয়হীনতা বলতে পারেন না। কোনো স্বমন্বয়হীনতা নেই। 

তিনি বলেন, এটি আগে থেকেই নিয়ম করা হয়েছে যে, কিছু ক্লাস অনলাইনে হবে, কিছু অফলাইনে। কেউ যদি মনে করে তার বিভাগে শিক্ষার্থী কম, তাহলে সে তো অফলাইনে ক্লাস নিতেই পারে। আবার শিক্ষার্থী সংখ্যা যদি বেশি হয়, তাহলে ওই ক্লাসটি তো অনলাইনেই হবে। এটি প্রত্যেকটি শিক্ষক ও তার বিভাগের ওপর নির্ভর করবে, তারা কোন পথে ক্লাসটি নিতে চায়। ফলে এখানে আমি স্বমন্বয়হীনতার কোনো ব্যাপার আমি দেখছি না। তবে আমি মনে করি, হল খোলা রেখে অনলাইন ক্লাসের কোনো মানে নেই। আক্রান্তরা তো হলেই গাদাগাদি করে আছে। টিএসসিতে গেলে দেখা যায়, শতশত ছেলে-মেয়ে একসাথে বসে আছে। তাহলে সরাসরি ক্লাস করতে অসুবিধা থাকার কথা না। 

তিনি আরও বলেন, আমরা শুধু বলবো, প্রত্যেকটি শিক্ষার্থী যেন স্বাস্থ্যবিধি মানে। আমি ক্লাসে জিজ্ঞেস করে দেখেছি ওপরের দিকের সব ছাত্রই দুই ডোজ করে টিকা নিয়েছে। আর ১ম বর্ষে যারা আছে, তারাও এখন নিচ্ছে। আর ওপরের ২য় বর্ষ, ৩য় বর্ষ, ৪র্থ বর্ষ ও মাস্টার্সের শিক্ষার্থীদের দুই ডোজ করে টিকা নিয়েছে। 

শাহজালাল বিজ্ঞান ও প্রযুক্তি বিশ্ববিদ্যালয়ের চলমান আন্দোলনের বিষয়ে জানতে চাইলে মীজানুর রহমান বলেন, শাহজালাল বিশ্ববিদ্যালয়ে ছোট্ট একটি ঘটনাকে এতদূর আসতে দেওয়াটাকে আমি মনে করি, ওখানের শিক্ষক নেতৃবৃন্দ, প্রক্টরিয়াল বডি প্রভোস্ট, সর্বোপরি বিশ্ববিদ্যালয় প্রশাসনের সামগ্রিক ব্যর্থতা। এটি শুরুতেই সমাধান করলে এই সমস্যাটি এতদূর বিস্তৃত হতে পারতো না। আর ছাত্রদের যখন কোনো ইস্যুতে আন্দোলন চলে, তখন এটিকে সমাধান না করে যদি প্রলম্বিত করা হয়, তখন এই আন্দোলনের মধ্যে অনেক উপাদান যুক্ত হয়ে যায়। রাজনৈতিক গোষ্ঠী, স্থানীয় স্বার্থান্বেষী মহলসহ বিভিন্ন কিছু ঢুকে শেষ পর্যন্ত এটি উপাচার্য বিরোধী আন্দোলনে রূপান্তরিত হয়। এটি হলো আমার অভিজ্ঞতা। ফলে আমি মনে করি, সমস্যা ছোট থাকতেই বিশ্ববিদ্যালয় প্রশাসনের উচিত এর সমাধান করা।


প্রধান সম্পাদকঃ সৈয়দ বোরহান কবীর
ক্রিয়েটিভ মিডিয়া লিমিটেডের অঙ্গ প্রতিষ্ঠান

বার্তা এবং বাণিজ্যিক কার্যালয়ঃ ২/৩ , ব্লক - ডি , লালমাটিয়া , ঢাকা -১২০৭
নিবন্ধিত ঠিকানাঃ বাড়ি# ৪৩ (লেভেল-৫) , রোড#১৬ নতুন (পুরাতন ২৭) , ধানমন্ডি , ঢাকা- ১২০৯
ফোনঃ +৮৮-০২৯১২৩৬৭৭