ইনসাইড পলিটিক্স

নারায়ণগঞ্জ আওয়ামী লীগে শুদ্ধি অভিযান আসছে?


প্রকাশ: 19/01/2022


Thumbnail

নারায়ণগঞ্জের সিটি কর্পোরেশন নির্বাচন শেষ হয়েছে। নির্বাচনে বিপুল ভোটে বিজয়ী হয়েছেন আওয়ামী লীগের মনোনীত প্রার্থী সেলিনা হায়াৎ আইভী। কিন্তু এই বিজয়ের পরও নারায়ণগঞ্জের রাজনীতির টালমাটাল অবস্থা এখনও শেষ হয়ে যায়নি। নির্বাচনের পর পর কপাল পুড়েছে বিএনপি'র স্বতন্ত্র প্রার্থী  তৈমুর আলম খন্দকারের। আগে তাকে চেয়ারপারসনের উপদেষ্টা পদ থেকে অব্যাহতি দেয়া হয়েছিল এখন তাকে দল থেকেই বহিষ্কার করা হয়েছে। তবে বিএনপির দায়িত্বশীল সূত্রগুলো বলছে যে, এটি স্রেফ একটি নাটক। যেহেতু নির্বাচনে তিনি পরাজিত হয়েছেন সে জন্য সাময়িকভাবে এটা করা হয়েছে। কিছুদিনের মধ্যেই আবার তৈমুর আলম খন্দকার কে বিএনপিতে ফিরিয়ে নেওয়া হবে। বিএনপির রাজনীতিতে বহিষ্কার এবং ঘরে ফেরা ডাল-ভাতের মত ব্যাপার। অনেক নেতাই বহিষ্কৃত হন আবার ফিরে আসেন। ওয়ান-ইলেভেনের সময় সংস্কারের কারণে ইমরান সালেহ প্রিন্সের মতো অনেকেই দল থেকে বহিষ্কৃত হয়েছিলেন, তারা আবার দলে ফিরে এসেছেন। এখন তারা দলের পক্ষ থেকে নানারকম বক্তৃতা বিবৃতিও দেন। আর একারণেই তৈমুর আলম খন্দকারের বহিষ্কারাদেশ নিয়ে বিএনপির নেতৃবৃন্দ খুব একটা চিন্তিত নন। তৈমুর আলম খন্দকার নিজেও বলেছেন তিনি বিএনপির একজন কর্মী হিসেবে কাজ করবেন। অন্যদিকে নারায়ণগঞ্জ সিটি কর্পোরেশন নির্বাচনে আওয়ামী লীগের বিজয়ের পর আওয়ামী লীগের বিজয় কে সংহত করা এবং ভবিষ্যতে নারায়ণগঞ্জকে বিতর্কমুক্ত এবং বিভক্তি মুক্ত রাখার জন্য উদ্যোগ গ্রহণ করেছে। 

cর আগেই শামীম ওসমানের সাথে সেলিনা হায়াত আইভীর বিরোধ প্রকাশ্যে রূপ ছিল। এই নির্বাচনে শুরুতেই শামীম ওসমান আইভীর বিরুদ্ধে অবস্থান গ্রহণ করেছিলেন এবং তার পছন্দের কাউন্সিলরা তৈমুর আলম খন্দকার এর পক্ষেই কাজ করেছিলেন। এরপর পরই আওয়ামী লীগের হাইকমান্ড সেখানে হস্তক্ষেপ গ্রহণ করে এবং আওয়ামী লীগের শীর্ষ নেতাদের হস্তক্ষেপে শেষ পর্যন্ত শামীম ওসমান সংবাদ সম্মেলন করতে বাধ্য হন। তিনি সংবাদ সম্মেলনে নৌকার পক্ষে প্রচার করবেন বলে জানান। যদিও তাকে কোনো প্রচারণায় দেখা যায়নি। এমনকি তার নিজস্ব লোক জন্ও এই নির্বাচনে নিরাপদ দূরত্বে ছিল। আইভী তার নিজের যোগ্যতা এবং জনপ্রিয়তায় বিজয়ী হয়েছেন। তবে নারায়ণগঞ্জ নির্বাচন চলাকালীন সময়ে ছাত্রলীগের মহানগর কমিটি বিলুপ্ত করা হয়েছে। নির্বাচনের পর পর স্বেচ্ছাসেবক লীগের কমিটি বিলুপ্ত হয়েছে। নারায়ণগঞ্জের এখন শুদ্ধি অভিযান শুরু হবে বলে আওয়ামী লীগের দায়িত্বশীল সূত্রগুলো নিশ্চিত করেছে। নারায়ণগঞ্জের নির্বাচন পরিচালনার দায়িত্বে থাকা আওয়ামী লীগের একজন নেতা বলেছেন যে, নারায়ণগঞ্জে এখনো অনেক কাজ বাকি আছে এবং এই কাজগুলোতে তারা হাত দেবেন। এ ব্যাপারে আওয়ামী লীগ সভাপতির সঙ্গে তারা বৈঠক করবেন বলে জানা গেছে। 

ইতিমধ্যে নারায়ণগঞ্জ নির্বাচন নিয়ে একটি পোস্টমর্টেম রিপোর্ট চূড়ান্ত করেছেন আওয়ামী লীগের দায়িত্বপ্রাপ্ত ৫ নেতা। নারায়ণগঞ্জ যেহেতু ঢাকা বিভাগের মধ্যে পড়ে সেহেতু ঢাকা বিভাগের দায়িত্বপ্রাপ্ত সাংগঠনিক সম্পাদক মির্জা আজম এই প্রতিবেদনটি তৈরি করবেন এবং আওয়ামী লীগের কার্যনির্বাহী কমিটির বৈঠকে দিবেন। বিভিন্ন সূত্র বলছে যে, নারায়ণগঞ্জে আওয়ামী লীগের যে অঙ্গ সহযোগী সংগঠনের কমিটিগুলো রয়েছে সেই কমিটিগুলো সবই শামীম ওসমানের পকেট কমিটি এবং এই কমিটিগুলোকে রেখে নারায়ণগঞ্জে আওয়ামী লীগকে ঐক্যবদ্ধ করা অসম্ভব। আর এ কারণেই নারায়ণগঞ্জে একটি বড় ধরনের শুদ্ধি অভিযান পরিচালিত হওয়ার সম্ভাবনা আছে। আওয়ামী লীগ সভাপতি এই নারায়ণগঞ্জ নির্বাচন সম্পর্কে মূল্যায়ন প্রতিবেদন পাওয়ার পর এ সম্পর্কে সিদ্ধান্ত নিবেন। যেখানে যেখানে বিভক্তি আছে যেখানে যেখানে পকেট কমিটি আছে সেগুলো বিলুপ্ত করে দেওয়া হবে এবং বেশ কিছু ব্যক্তি হয়তো নারায়ণগঞ্জে পথ হারাবেন। আওয়ামী লীগের একাধিক নেতা বলছে নির্বাচনের আগে আওয়ামী লীগ সংগঠনের দিকে মনোযোগী এবং সংগঠনে যারা বিভক্তি সৃষ্টি করবে তাদের বিরুদ্ধে ব্যবস্থা নিতে বদ্ধপরিকর। 


প্রধান সম্পাদকঃ সৈয়দ বোরহান কবীর
ক্রিয়েটিভ মিডিয়া লিমিটেডের অঙ্গ প্রতিষ্ঠান

বার্তা এবং বাণিজ্যিক কার্যালয়ঃ ২/৩ , ব্লক - ডি , লালমাটিয়া , ঢাকা -১২০৭
নিবন্ধিত ঠিকানাঃ বাড়ি# ৪৩ (লেভেল-৫) , রোড#১৬ নতুন (পুরাতন ২৭) , ধানমন্ডি , ঢাকা- ১২০৯
ফোনঃ +৮৮-০২৯১২৩৬৭৭