ইনসাইড পলিটিক্স

সব হারালেন তৈমুর?


প্রকাশ: 19/01/2022


Thumbnail

নারায়ণগঞ্জ সিটি কর্পোরেশন নির্বাচনে স্বতন্ত্র প্রার্থী হিসেবে প্রতিদ্বন্দ্বিতা করেছিলেন তিনি। এই প্রতিদ্বন্দ্বিতা করে বেশ সাড়াও জাগিয়েছিলেন। প্রায় ১ লাখের কাছাকাছি ভোট পেয়েছেন। এ নির্বাচনী প্রচারণার মাধ্যমে তিনি নারায়ণগঞ্জের বিএনপিকে কিছুটা হলেও চাঙ্গা করেছেন। কিন্তু নির্বাচনে প্রতিদ্বন্দ্বিতা করার সিদ্ধান্তের মাঝপথেই তাকে দলে চেয়ারপার্সনের উপদেষ্টা পদ থেকে অব্যাহতি দেয়া হয়। নির্বাচনে পরাজয়ের পর তাকে দল থেকে বহিষ্কার করা হয়। এর ফলে তৈমুর আলম কি সব হারালেন কিনা এ প্রশ্ন উঠেছে রাজনৈতিক অঙ্গনে। নারায়ণগঞ্জ বিএনপিতে তৈমুর আলম খন্দকার এক অবিচ্ছেদ্য অংশ। তিনি সবসময় বিএনপির অন্যতম গুরুত্বপূর্ণ নেতা হিসেবে নারায়ণগঞ্জে কাজ করেছেন। কিন্তু সেই তৈমুর আলম খন্দকারকে বিএনপি যখন দল থেকে বহিষ্কার করল, তখন স্বাভাবিক ভাবে নারায়ণগঞ্জের রাজনীতিতে বিএনপি একটি বড় ধরনের হোঁচট খেল। বিএনপি এমনিতেই সাংগঠনিক ভাবে দুর্বল হয়ে পরেছিল।  নারায়ণগঞ্জে বিএনপির রাজনীতি এমনিতেই সীমানা গণ্ডির মধ্যেই করতে হত ওসমান পরিবারের জন্য। তার মধ্যে এখন তৈমুর আলম খন্দকারকে বহিষ্কারের মধ্যদিয়ে নারায়ণগঞ্জে বিএনপির রাজনীতির শেষ অধ্যায় রচিত হল কিনা সেই প্রশ্ন উঠেছে। অবশ্য বহিষ্কার আদেশ পাওয়ার পর তৈমুর আলম খন্দকার বলেছেন যে, তিনি বিএনপির একজন কর্মী হিসেবেই কাজ করবেন। 

বিএনপির নেতাকর্মীরা মনে করেন যে, তৈমুর আলম খন্দকারের বহিষ্কারাদেশের বিষয়টি সাময়িক। সময় এলেই তার বিরুদ্ধে বহিষ্কার আদেশ তুলে নেয়া হবে। কিন্তু এর ফলে বিএনপির যে সাংগঠনিক ক্ষতি হল, সে ক্ষতি কে পোষাবে এটি একটি বড় প্রশ্ন। রাজনৈতিক বিশ্লেষকরা মনে করছেন যে, নারায়ণগঞ্জে তৈমুর আলম খন্দকার সব হারাননি বরং বিএনপি সব হারিয়েছে। তৈমুর আলম খন্দকারকে যদি বিএনপি সমর্থন দিত তাহলে বিএনপি এখানে অনেককিছু অর্জন করতে পারত। এই নির্বাচনে তৈমুর আলম খন্দকার প্রায় এক লক্ষ ভোট পেয়েছেন। এটি বিএনপির ভোট ব্যাংক এ নিয়ে সন্দেহ নাই এবং রাজনৈতিক বিশ্লেষকরা বলে বিএনপি যদি দলগত ভাবে এ নির্বাচনে প্রতিদ্বন্দ্বিতা করত তাহলে হয়ত ভোট আর বাড়ত। ফলে নারায়ণগঞ্জে যে বিএনপির একটি ভালো ভোট আছে এটা এ নির্বাচনের মাধ্যমে প্রমাণিত হয়েছে এবং এ নির্বাচনের মাধ্যমে বিএনপি যে সাংগঠনিক তৎপরতা করেছে সেটিও বিএনপির জন্য ইতিবাচক ছিল। এর ফলে নির্বাচনের পর যারা মাঠে কাজ করেছেন তাদেরকে একত্রিত করে সংগঠন গোছানোর একটি সুযোগ তৈরি হয়েছিল। কিন্তু বিএনপি কোন সুযোগই না নিয়ে একতরফা ভাবে তৈমুর আলম খন্দকারকে বহিষ্কার করেছে। তবে নারায়ণগঞ্জের কোন কোন বিশ্লেষকরা বলছেন যে, নারায়ণগঞ্জের রাজনীতিতে বিএনপি এবং তৈমুর আলম খন্দকারের একটি বড় লাভ হয়েছে এই নির্বাচনের মধ্য দিয়ে। সেটি হল এই নির্বাচনের মধ্য দিয়ে শামীম ওসমানের অধ্যায় শেষ হয়েছে নারায়ণগঞ্জের রাজনীতিতে। 

নারায়ণগঞ্জে এমনিতেই শামীম ওসমানের প্রভাব প্রতিপত্তি অনেকখানিই কমছিল। এখন এই নির্বাচনের পর পর শামীম ওসমান নারায়ণগঞ্জের রাজনীতিতে আরও কোণঠাসা হয়ে পড়বেন। বিএনপির নেতারা স্বীকার করেন যে, নারায়ণগঞ্জে আইভী কোন সমস্যা না, তাদের সমস্যা হল একমাত্র ওসমান পরিবার। যারা বিএনপি এবং জামাতকে কোনভাবে রাস্তায় নামতে দেয় না এবং প্রয়োজনে শক্তি প্রয়োগ করে। আর সেকারণেই তৈমুর আলম খন্দকার আত্মহনন করে নারায়ণগঞ্জে বিএনপির জন্য একটি রাজনৈতিক জমিন উপহার দিয়েছেন বলে অনেকে মনে করেন। তারা মনে করছেন যে, এই নির্বাচনের পর নারায়ণগঞ্জে বিএনপির যে কোণঠাসা অবস্থা সেখান থেকে মুক্তি মিলবে। তবে, বিএনপি যদি সঠিকভাবে সিদ্ধান্ত নিতে না এবং সঠিক কাজ না করতে পারে তাহলে শামীম ওসমান কোণঠাসা হলেও বিএনপি ধ্বংসস্তূপে পরিণত হবে।


প্রধান সম্পাদকঃ সৈয়দ বোরহান কবীর
ক্রিয়েটিভ মিডিয়া লিমিটেডের অঙ্গ প্রতিষ্ঠান

বার্তা এবং বাণিজ্যিক কার্যালয়ঃ ২/৩ , ব্লক - ডি , লালমাটিয়া , ঢাকা -১২০৭
নিবন্ধিত ঠিকানাঃ বাড়ি# ৪৩ (লেভেল-৫) , রোড#১৬ নতুন (পুরাতন ২৭) , ধানমন্ডি , ঢাকা- ১২০৯
ফোনঃ +৮৮-০২৯১২৩৬৭৭