ইনসাইড বাংলাদেশ

জাতিসংঘে অরক্ষিত বাংলাদেশ


প্রকাশ: 23/01/2022


Thumbnail

মার্কিন প্রশাসনে লবিংয়ের পর এবার জাতিসংঘের দিকে নজর দিয়েছে বিএনপি-জামায়াতপন্থিরা। এখন তারা জাতিসংঘে বাংলাদেশের মানবাধিকারসহ বিভিন্ন ইস্যুতে অভিযোগ করছে, যেন বাংলাদেশের ওপর জাতিসংঘ চাপ সৃষ্টি করে। এ পর্যায়ে হিউম্যান রাইটস ওয়াচ একটি চিঠি দিয়েছে জাতিসংঘের কাছে, যে চিঠিতে ১২ টি মানবাধিকার সংগঠন স্বাক্ষর করেছে। এই চিঠিতে র‍্যাবকে জাতিসংঘের শান্তি মিশনে নিষিদ্ধ করার দাবি উত্থাপন করা হয়েছে। যদিও জাতিসংঘ এখন পর্যন্ত এ ব্যাপারে কোনরকম ইতিবাচক সাড়া দেয়নি। বরং এ ধরনের আবেদন জাতিসংঘের যে ম্যান্ডেট তার পরিপন্থী। কারণ, একটি পেশাদার সংগঠনকে শান্তিরক্ষা বাহিনীতে নিষিদ্ধ করার প্রস্তাব কখনোই গ্রহণযোগ্য না। যেকোনো একটি পেশাদার সংগঠনের কোন ব্যক্তি অপরাধ করতে পারে বা ব্যক্তির ভুল হতে পারে, তার জন্য পুরো একটি বাহিনীকে দোষী করা কখনোই যুক্তিসংগত নয়। জাতিসংঘ এ বিষয়টিতে এক ধরনের নীরবতাই অবলম্বন করছে। কিন্তু হিউম্যান রাইটস ওয়াচ এই একটি চিঠি দিয়েই ক্ষান্ত হয়নি, বিএনপি-জামায়াতের অর্থায়নে এবং মদদপুষ্ট হয়ে জাতিসংঘে আরো বিভিন্ন বিষয়ে বাংলাদেশের বিরুদ্ধে অভিযোগ করা হয়েছে।

একাধিক সূত্র বলছে যে, বাংলাদেশে মানবাধিকার লঙ্ঘনের ঘটনা এবং গুমের ঘটনা তদন্তের জন্য জাতিসংঘের কাছে আবেদন জানানো হয়েছে। এ সংক্রান্ত আনুষ্ঠানিক কোন ঘোষণা এখনও আসেনি। তবে একাধিক সূত্র নিশ্চিত করেছে যে, মার্কিন যুক্তরাষ্ট্রের কাছে যে ৮৬ জনের গুম হবার তালিকা দেয়া হয়েছিল, এখন সে তালিকা জাতিসংঘেও দেয়া হয়েছে। জাতিসংঘে বাংলাদেশের গণমাধ্যম নিয়েও একটি অভিযোগ দাঁড় করানোর প্রক্রিয়া শুরু হয়েছে বলে একাধিক দায়িত্বশীল সূত্র নিশ্চিত করেছে। আর এই ধরনের ঘটনাগুলো যখন ঘটছে, তখন জাতিসংঘে বাংলাদেশের স্থায়ী মিশনের ভূমিকা নিয়ে রহস্য এবং প্রশ্ন উঠেছে। জাতিসংঘে বাংলাদেশ অরক্ষিত অবস্থায় রয়েছে বলেই অনেকে মনে করছেন। বিশেষ করে একের পর এক যে অভিযোগগুলো হচ্ছে, সেই অভিযোগগুলোর বিরুদ্ধে বাংলাদেশ যে সচেতন হবে বা এ ধরনের অভিযোগ করার আগেই যে বাংলাদেশ ব্যবস্থা গ্রহণ করবে সে ব্যাপারে জাতিসংঘে বাংলাদেশের মিশনের তৎপরতা খুব একটা সন্তোষজনক নয় বলে মনে করা হচ্ছে। শুধু জাতিসংঘ নয়, এর আগে যুক্তরাষ্ট্রে যে বাংলাদেশবিরোধী তৎপরতা চালানো হয়েছিল এবং যে তৎপরতা এখনও অব্যাহত আছে তার বিরুদ্ধেও যুক্তরাষ্ট্রে বাংলাদেশ হাইকমিশন কোন পদক্ষেপ গ্রহণ করতে পারেনি।

উল্লেখ যে, বিভিন্ন মহল যুক্তরাষ্ট্রে বাংলাদেশের রাষ্ট্রদূতদের ভূমিকা নিয়ে প্রশ্ন তুলেছে। যুক্তরাষ্ট্রে বাংলাদেশের রাষ্ট্রদূত ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের ছাত্রদলের নেতা ছিলেন বলে বিভিন্ন মহল থেক অভিযোগ উঠেছে এবং হল ছাত্র সংসদে তিনি ছাত্রদল থেকে নির্বাচিত প্রতিনিধিও ছিলেন বলে জানা গেছে। বিভিন্ন সূত্রগুলো বলছে যে, তার পদায়নের ব্যাপারে পররাষ্ট্র সচিবও নোট পাওয়ার আগে জানতেন না বলে বিভিন্ন মহল মনে করছে। জাতিসংঘে বাংলাদেশের মিশনে স্থায়ী প্রতিনিধি হিসেবে দায়িত্ব পালন করছেন রাবাব ফাতেমা। তিনি ১৯৯৬ থেকে ২০০১ সাল পর্যন্ত সময় কোলকাতায় বাংলাদেশের উপ-হাইকমিশনার ছিলেন। এই সময় খালেদা জিয়ার উপদেষ্টা রিয়াজ রহমান রাবাবের কোলকাতার বাসায় কয়েকদিন অবস্থান করেন বলে অভিযোগ উঠে। পরে রাবাব ফাতেমা এই বলে আত্মসমর্থন করেন যে, তার বাবা পররাষ্ট্র মন্ত্রণালয়ে অধস্তন পদে চাকরিকালে রিয়াজ রহমানের পিএ ছিলেন। সেই সম্পর্কের কারণে রিয়াজ রহমান তার বাসায় ছিলেন। আসলে পররাষ্ট্র সচিব এবং তার পিএর সম্পর্ক কন্যার বাসায় থাকার মত হয় কিনা, তা সিভিল সার্ভিসে এক প্রশ্ন বটে। এ সমস্ত বিতর্কিত ব্যক্তিরাই এখন বিভিন্ন পদে রয়েছেন। যে কারণে বাংলাদেশের স্বার্থ রক্ষায় যে ধরনের ব্যবস্থা গ্রহণ করা উচিত ছিলো, তা রক্ষিত হচ্ছে না বলে বিভিন্ন মহল মনে করছে।


প্রধান সম্পাদকঃ সৈয়দ বোরহান কবীর
ক্রিয়েটিভ মিডিয়া লিমিটেডের অঙ্গ প্রতিষ্ঠান

বার্তা এবং বাণিজ্যিক কার্যালয়ঃ ২/৩ , ব্লক - ডি , লালমাটিয়া , ঢাকা -১২০৭
নিবন্ধিত ঠিকানাঃ বাড়ি# ৪৩ (লেভেল-৫) , রোড#১৬ নতুন (পুরাতন ২৭) , ধানমন্ডি , ঢাকা- ১২০৯
ফোনঃ +৮৮-০২৯১২৩৬৭৭