ইনসাইড বাংলাদেশ

বাংলাদেশে জঙ্গিবাদের উত্থানের শঙ্কা: ব্লিংকেন


প্রকাশ: 24/01/2022


Thumbnail

দীর্ঘকাল ধরে বাংলাদেশ একটি মধ্যপন্থী মুসলিম দেশ হলেও বাংলাদেশকে একটি অসাম্প্রদায়িক দেশ হিসেবে বিবেচনা করতো পশ্চিমা দেশগুলো। তবে সাম্প্রতিক সময়ে দূর্গাপূজাকে কেন্দ্র করে ঘটে যাওয়া সাম্প্রদায়িক সহিংসতাকে সাধারণ কোনো ঘটনা হিসেবে বিবেচনা করছে না পশ্চিমা দেশগুলো। 

বাংলাদেশকে একটি ধর্মনিরপেক্ষ ও সহনশীল রাষ্ট্র হলেও ২০০৪-০৫ সালের দিকে জঙ্গি হামলার বিষয়টি একেবারে প্রকাশ্যে আসে এবং দেশব্যাপী একাধিক জঙ্গি হামলা চালানো হয়। তৎকালীন বিএনপি-জামায়াত সরকারের প্রত্যক্ষ মদদে স্বাধীন বাংলাদেশের বুকে সাম্প্রদায়িক জঙ্গিবাদের যে ভয়াবহ ক্ষেত্র গড়ে উঠেছিল, তা বলিষ্ঠ হাতে নির্মূল করার মাধ্যমে দেশের স্বাধীনতা ও সার্বভৌমত্ব রক্ষায় অভেদ্য প্রাচীরের মতো আবির্ভূত হয়েছিলেন দেশের বর্তমান প্রধানমন্ত্রী ও বঙ্গবন্ধু কন্যা শেখ হাসিনা। বিশেষ করে দেশের মাটিতে জঙ্গিদের সশস্ত্র তাণ্ডব, হত্যা-নৈরাজ্য ও যুব সমাজকে শান্তির ধর্ম ইসলামের নামে অপশিক্ষা ও ভ্রান্ত পথনির্দেশনা দেয়ার মাধ্যমে যে অভিশপ্ত নতুন প্রজন্ম গড়ে তোলার নীল নকশা বাস্তবায়ন শুরু করেছিল তারেক-বাবর-হান্নান চক্র, তা ভেস্তে দিয়ে শাপিত আগামীর দুর্বিষহতা থেকে জাতিকে রক্ষায় কাণ্ডারি রূপে আবির্ভূত হয়েছিলেন প্রধানমন্ত্রী।

কিন্তু এরই মাঝে অতীতে ঘটে যাওয়া কিছু অপ্রত্যাশিত ঘটনা গোটা জাতির জন্য বিভীষিকাময় কালচিত্র হয়ে উঠেছে। এরমাঝে অন্যতম আলোচিত একটি ঘটনা হচ্ছে আজ থেকে ৫ বছর আগে ২০১৬ সালের ১ জুলাই গুলশান-২ এর লেক পাড়ে অবস্থিত হলি আর্টিজান বেকারিতে ঘটে যাওয়া দেশের ইতিহাসের সব থেকে বড় জঙ্গি হামলার ঘটনা। নারকীয় সেই হত্যাযজ্ঞে দুই পুলিশ কর্মকর্তা ও ১৭ জন বিদেশি নাগরিকসহ নিহত হন ২২ জন। এছাড়াও বাংলাদেশে বিদেশি নাগরিক ও ধর্মীয় সংখ্যালঘুদের ওপর চালানো ১১টি গুরুতর হামলার দায় স্বীকার করে নিয়েছে ইসলামিক স্টেট। এছাড়া ২০১৩ সাল পর্যন্ত আনসারুল্লাহ বাংলা টিম ও আল-কায়েদা বাংলাদেশের অন্তত ১১ জন প্রগতিশীল লেখক ও ব্লগারকে হত্যার দায় স্বীকার করেছে। 

এসব জঙ্গি ঘটনাগুলো সামাল দেওয়া গেলেও সাম্প্রতিক সময়ে জঙ্গি হামলার বিষয়টি আবারও সামনে চলে আসে সনাতন ধর্মালম্বীদের সবচেয়ে বড় উৎসব দূর্গাপূজাতে ঘটে যাওয়া সাম্প্রদায়িক সহিংসতাকে কেন্দ্র করে। এ নিয়ে আন্তর্জাতিক মহলেও দেশের ভাবমুর্তি নষ্ট হয় এবং সমালোচনার মুখে পরতে হয় বাংলাদেশকে। 

দূর্গাপূজার সময় ঘটে যাওয়া এ সহিংসতার সাথে চরমপন্থি ইসলামিক অসহিষ্ণু কোনো গ্রুপ যুক্ত আছে কিনা এবং এ ব্যাপারে কি করা যেতে পারে প্রসংগে মার্কিন পররাষ্ট্র মন্ত্রী অ্যান্থনি ব্লিংকেন বলেন, “এটি আমাদের সবার জন্য একটি উদ্বেগের ব্যাপার। আমরা গত কয়েক মাস যাবৎই বাংলাদেশে এ ধরনের ধারাবাহিক সন্ত্রাসী হামলা দেখেছি। যদিও দেশটির সরকার বলছে এ ধরণের ঘটনা এবং হামলার সাথে বিরোধীদল যুক্ত। কিন্তু এখন পর্যন্ত আমাদের কাছে আসা যাবতীয় তথ্যাবলী প্রমাণ করে যে, অভ্যন্তরীণ অথবা বাহির থেকে আগত চরমপন্থি গ্রুপগুলোই এ ঘটনাগুলোর সাথে জড়িত।

মি. ব্লিংকেন আশঙ্কা করছেন যে, বাংলাদেশে আইএসআইএল বা দায়েশের মতো টেরোরিস্ট গ্রুপগুলোও ঘাঁটি বাধতে পারে। পাশাপাশি সহিংস চরমপন্থা বাংলাদেশে শিকড় গাড়ার আগেই আমরা বাংলাদেশের সঙ্গে একসাথে কাজ করার চেষ্টা করছি বলেও মন্তব্য করেন তিনি। 

তিনি বলেন, এই সমস্যা মোকাবিলায় আমরা বাংলাদেশের সরকারের সাথে সরাসরি জড়িত হয়েছি এবং ভারতকেও এর সাথে সম্পৃক্ত করার চেষ্টা করছি। বাংলাদেশ এবং ভারতের মাঝে সম্পর্ক বিবেচনায় আমরা দুই দেশের সাথে একযোগে কাজ করার চেষ্টা করছি যাতে করে বাংলাদেশে জঙ্গিবাদ শেকড় গাড়ার আগেই তা মোকাবেলা করা যায়।


প্রধান সম্পাদকঃ সৈয়দ বোরহান কবীর
ক্রিয়েটিভ মিডিয়া লিমিটেডের অঙ্গ প্রতিষ্ঠান

বার্তা এবং বাণিজ্যিক কার্যালয়ঃ ২/৩ , ব্লক - ডি , লালমাটিয়া , ঢাকা -১২০৭
নিবন্ধিত ঠিকানাঃ বাড়ি# ৪৩ (লেভেল-৫) , রোড#১৬ নতুন (পুরাতন ২৭) , ধানমন্ডি , ঢাকা- ১২০৯
ফোনঃ +৮৮-০২৯১২৩৬৭৭