ইনসাইড বাংলাদেশ

যুক্তরাষ্ট্রে বাংলাদেশ দূতাবাসের দায়িত্বে সাবেক ছাত্রদল নেতা


প্রকাশ: 24/01/2022


Thumbnail

এম শহীদুল ইসলাম, মার্কিন যুক্তরাষ্ট্রে বাংলাদেশের রাষ্ট্রদূত। একজন ক্যারিয়ার ডিপ্লোম্যাট হিসেবে তিনি পরিচিত। কিন্তু একটু গভীরে গেলেই বোঝা যায় যে, এই ক্যারিয়ার ডিপ্লোম্যাট আসলে আওয়ামীবিরোধী পরিবারের সন্তান। তিনি এবং তার পরিবারের অন্য সদস্যরা সরাসরিভাবে আওয়ামীবিরোধী রাজনীতির সঙ্গে যুক্ত। এম শহীদুল ইসলাম ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয় ছাত্রদলের নেতা ছিলেন। ছাত্র হল সংসদে ছাত্রদল থেকে তিনি নির্বাচনে প্রতিদ্বন্দ্বিতাও করেছিলেন। তার ছোট ভাই কামরুল ইসলাম শিবিরের সক্রিয় ক্যাডার ছিলেন। প্রকৌশল বিশ্ববিদ্যালয়ে ছাত্র সংসদ নির্বাচনে ১৯৮৯ সালে তিনি এজিএস পদে প্রতিদ্বন্দ্বিতা করেছিলেন। পরের বছর ১৯৯০ সালের ইকসু নির্বাচনে তিন জিএস পদে প্রতিদ্বন্দ্বিতা করেন। তাঁর বড় ভাই জাহিদুল ইসলাম ব্যবসায়ী। তিনি আওয়ামী বিরোধী ব্যবসায়ী হিসেবে পরিচিত। এম শহিদুল ইসলামের বাড়ি গোপালগঞ্জে হলেও তার পুরো পরিবার আওয়ামীবিরোধী হিসেবে পরিচিত। তার শ্বশুরবাড়ির অবস্থাও একই রকম।

তাঁর পারিবারিক সূত্রগুলো বলছে যে, শুধুমাত্র আওয়ামীবিরোধী নয় এরা এক অর্থে বাংলাদেশবিরোধী। এরকম একজন ব্যক্তি যখন মার্কিন যুক্তরাষ্ট্রের মতো গুরুত্বপূর্ণ জায়গায় রাষ্ট্রদূতের দায়িত্ব পালন করছেন ঠিক সেই সময় মার্কিন প্রশাসনে বাংলাদেশবিরোধী তৎপরতা প্রবল আকার ধারণ করেছে। এটির সঙ্গে কোনো যোগসূত্র আছে কিনা তা খতিয়ে দেখা দরকার। এর আগে মার্কিন যুক্তরাষ্ট্রে বাংলাদেশের রাষ্ট্রদূত হিসেবে দায়িত্ব পালন করেছিলেন জিয়া উদ্দিন। তিনি যখন এই দায়িত্ব পালন করেন তখন যেভাবে বাংলাদেশের ভাবমূর্তি মার্কিন প্রশাসনে প্রতিষ্ঠা করা হয়েছিল, যেভাবে মার্কিন প্রশাসনের মধ্যে বাংলাদেশের অবস্থান এবং কার্যক্রমকে ব্যাখ্যা করা হয়েছিল তার ধারেকাছেও তৎপরতা এখন নেই। বরং মার্কিন যুক্তরাষ্ট্রে অবস্থিত বাংলাদেশ দূতাবাস রুটিন কাজের মধ্যে দায়িত্ব পালন করছে।

বাংলাদেশকে গত গণতন্ত্র সম্মেলনে আমন্ত্রণ জানানো হয়নি। মার্কিন যুক্তরাষ্ট্রে বাংলাদেশের দূতাবাস তখন কি করেছে এই প্রশ্ন অনেকের মধ্যে। বাংলাদেশের সাত কর্মকর্তার বিরুদ্ধে ট্রেজারি বিভাগ নিষেধাজ্ঞা জারি করেছে। এই নিষেধাজ্ঞা জারির আগে-পরে ওয়াশিংটনে বাংলাদেশ দূতাবাসের কর্মতৎপরতা নিয়ে নানা রকম প্রশ্ন এবং রহস্যের জন্ম দিয়েছে। এখন জো বাইডেন সরকার নতুন আইন করে দুর্নীতির বিরুদ্ধে নীতিমালা ঘোষণা করেছে। এই নীতিমালার আওতায় বাংলাদেশকে চাপের মধ্যে ফেলা হবে বলে কোনো কোনো মহল বলছে। এ ব্যাপারে ওয়াশিংটনে বাংলাদেশ মিশন কতটা তৎপর তা নিয়েও প্রশ্ন উঠেছে।

অনেকে বলছেন যে, যে সর্ষ দিয়ে ভূত তাড়ানো হবে সেই সর্ষের মধ্যেই ভূত। মার্কিন যুক্তরাষ্ট্রে জামায়াত এবং বিএনপি কোটি কোটি টাকা খরচ করছে বিভিন্ন লবিস্ট ফার্মের মাধ্যমে। তাদের মূল লক্ষ্য হলো, বাংলাদেশেবিরোধী তৎপরতাকে মার্কিন প্রশাসনের কানে তুলে দেওয়া, যেন মার্কিন প্রশাসন বাংলাদেশবিরোধী অবস্থান গ্রহণ করে। এক্ষেত্রে তারা যে অনেকখানি অনেকখানি সফল হয়েছে তা বলার অপেক্ষা রাখেনা। বিভিন্ন ক্ষেত্রে মার্কিন যুক্তরাষ্ট্রের এখন বাংলাদেশ সম্পর্কে নেতিবাচক অবস্থান অবস্থান সুস্পষ্ট হয়েছে। অথচ এর বিপরীতে বাংলাদেশের মার্কিন দূতাবাসের যে ভূমিকা পালন করার কথা ছিলো সেই ভূমিকা তারা আদৌ পালন করছে না বলে মনে করা হচ্ছে। আর এই পালন না করাটা অযোগ্যতা, অদক্ষতা নাকি উদ্দেশ্যপূর্ণ তা নিয়ে এখন আলোচনা হচ্ছে কূটনীতিকপাড়ায়। কারণ, যিনি পারিবারিক ঐতিহ্যভাবেই বিএনপি এবং জামায়াতপন্থী, তিনি যখন এরকম দায়িত্বে থাকেন তখন তিনি কতটা মুক্তিযুদ্ধের চেতনার পক্ষে কতটা তৎপর থাকবেন তা নিয়ে বিভিন্ন মহলে প্রশ্ন উঠেছে। তাই সাম্প্রতিক সময়ে যখন বাংলাদেশবিরোধী অবস্থান মার্কিন প্রশাসনের মধ্যে সুস্পষ্ট দৃশ্যমান হচ্ছে, তখন যদি ওয়াশিংটনে বাংলাদেশ মিশন তৎপর না হয় তাহলে ভবিষ্যতে দুই দেশের সম্পর্কের ক্ষেত্রে আরও নেতিবাচক প্রভাব পড়তে পারে বলে বিভিন্ন মহল আশঙ্কা প্রকাশ করছে।


প্রধান সম্পাদকঃ সৈয়দ বোরহান কবীর
ক্রিয়েটিভ মিডিয়া লিমিটেডের অঙ্গ প্রতিষ্ঠান

বার্তা এবং বাণিজ্যিক কার্যালয়ঃ ২/৩ , ব্লক - ডি , লালমাটিয়া , ঢাকা -১২০৭
নিবন্ধিত ঠিকানাঃ বাড়ি# ৪৩ (লেভেল-৫) , রোড#১৬ নতুন (পুরাতন ২৭) , ধানমন্ডি , ঢাকা- ১২০৯
ফোনঃ +৮৮-০২৯১২৩৬৭৭