ইনসাইড পলিটিক্স

মানুষের ভালবাসায় শেখ হাসিনা মৃত্যুর দুয়ার থেকে ফিরে আসেন


প্রকাশ: 24/01/2022


Thumbnail

আজ ২৪ জানুয়ারি। ১৯৮৮ সালের এই দিনে চট্টগ্রাম বিশাল জনসমুদ্রে পরিণত হয়েছিল। স্বৈরাচারের পতনের দাবিতে চট্টগ্রামে মহাসমাবেশ ডেকেছিলেন আওয়ামী লীগ সভাপতি তৎকালীন ১৫ দলীয় জোট নেত্রী শেখ হাসিনা। এই উপলক্ষে চট্টগ্রামে গিয়েছিলেন। কিন্তু চট্টগ্রামে যখন তার উপস্থিতিতে জনতার ঢল নামে, তখন দিশেহারা হয়ে ওঠে স্বৈরাচার। শেখ হাসিনাকে হত্যার জন্য লেলিয়ে দেওয়া হয় পুলিশকে। পুলিশ নির্বিচারে গুলি চালায় শেখ হাসিনাকে স্বাগত জানানো জনসমুদ্রে। লক্ষ ছিলো একটাই, আওয়ামী লীগ সভাপতিকে হত্যা করা। কিন্তু শেষ পর্যন্ত সেট সফল হয়নি। অকুতোভয় কর্মীরা তাদের জীবন দিয়ে আওয়ামী লীগ সভাপতিকে বাঁচিয়েছেন।

শেখ হাসিনা ১৯৮১ সালে বাংলাদেশে ফেরেন এক ঝঞ্ঝা-বিক্ষুব্ধ সময়। পঁচাত্তরের ১৫ই আগস্ট জাতির পিতা বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবুর রহমানকে সপরিবারে হত্যা করার পর আমাদের মুক্তিযুদ্ধের চেতনা ছিলো ভূলুণ্ঠিত, বাংলাদেশ জাতিরাষ্ট্র হিসেবে হতাশাগ্রস্ত, শব্দহীন এবং বুটের তলায় পিষ্ট ছিলো গণতন্ত্র। ঠিক এরকম সময়ে এ দেশের মানুষের গণতান্ত্রিক অধিকার ফিরিয়ে দিতে, মানবাধিকার প্রতিষ্ঠা করতেই শেখ হাসিনা তার জীবনের মায়া ত্যাগ করে ১৯৮১ সালের ১৭ই মে দেশে ফিরেছিলেন। তখন থেকেই বিভিন্ন সময় বারবার তাকে হত্যার চেষ্টা করা হয়। বিভিন্ন পরিসংখ্যানে তার ওপর একুশটি হত্যাচেষ্টার তথ্য পাওয়া যায়। আর এই চেষ্টাগুলো থেকে তিনি কখনও অলৌকিকভাবে, কখনো জনতার প্রতিরোধের মুখে বেঁচে যান।

১৯৮৮ সালের রকিবুল হুদার যে আক্রমণ তা ছিলো সুস্পষ্টভাবে আওয়ামী লীগ সভাপতি শেখ হাসিনাকে হত্যার জন্যই। এই ধারা অব্যাহত থাকে বিভিন্ন সময়ে। ১৯৯১ সালেও শেখ হাসিনা যখন গ্রিনরোডে ভোটকেন্দ্র পরিদর্শন করতে গিয়েছিলেন তখনও তার ওপর আক্রমণ হয়েছিল। বিভিন্ন সময়ে তার গাড়িবহরের ওপর আক্রমণ হয়েছিল, তাকে হত্যার জন্য পুঁতে রাখা হয়েছিল গ্রেনেড। আর ২০০৪ সালের ২১ আগস্ট গ্রেনেড হামলা থেকে শেখ হাসিনার বেঁচে যাওয়াটা ছিলো এক বিস্ময়কর ঘটনা। আর এভাবেই বারবার তিনি মৃত্যুর দুয়ার থেকে ফিরে আসেন। তিনি মৃত্যুর দুয়ার থেকে বারবার ফিরে আসেন মানুষের ভালোবাসা এবং সৃষ্টিকর্তার কৃপায়। হয়তো সৃষ্টিকর্তার এমনই অভিলাষ আছে যে তাকে দিয়েই বাংলাদেশের স্বপ্ন পূরণ করানো হবে, তার হাত ধরে বাংলাদেশ এগিয়ে যাবে উন্নয়নের এক নতুন মাইলফলকে। যে অভিযাত্রায় গত ১৩ বছর তিনি বাংলাদেশকে এগিয়ে নিয়ে যাচ্ছেন। শেখ হাসিনা যেন ফিনিক্স পাখি। যতবার তাকে ধ্বংসের চেষ্টা করা হয় ততবার তিনি আরো তীব্র, বেগবান হিসেবে জনতার ভালোবাসা নিয়ে ফিরে আসেন।

তবে দুর্ভাগ্যজনক হলো এই যে, আজ ২৪ জানুয়ারি গণতন্ত্র হত্যা দিবস। এই দিবসটিতে শেখ হাসিনাকে স্বৈরাচারের পেট্রোল বাহিনী নির্মমভাবে হত্যা প্রচেষ্টা চালিয়েছিলো, অলৌকিকভাবে তিনি বেঁচে গিয়েছিলেন। কিন্তু আজকের দিনে বাংলাদেশের প্রধান গণমাধ্যমগুলোতে এ সংক্রান্ত কোনো খবর নেই, আওয়ামী লীগের কোনো কর্মসূচি নেই। আওয়ামী লীগের কোন নেতাও এ নিয়ে কোনো কথা বলেননি। এই হলো আজকের বাংলাদেশের রাজনৈতিক অবস্থা। যে ২৪শে জানুয়ারি শেখ হাসিনাকে রক্ষা করার জন্য জনতা মানবপ্রাচীর গড়েছিল, সেই ২৪শে জানুয়ারিকে স্মরণ করে না আওয়ামী লীগই। এটাই বোধহয় ক্ষমতায় থাকার দুর্ভাগ্য।


প্রধান সম্পাদকঃ সৈয়দ বোরহান কবীর
ক্রিয়েটিভ মিডিয়া লিমিটেডের অঙ্গ প্রতিষ্ঠান

বার্তা এবং বাণিজ্যিক কার্যালয়ঃ ২/৩ , ব্লক - ডি , লালমাটিয়া , ঢাকা -১২০৭
নিবন্ধিত ঠিকানাঃ বাড়ি# ৪৩ (লেভেল-৫) , রোড#১৬ নতুন (পুরাতন ২৭) , ধানমন্ডি , ঢাকা- ১২০৯
ফোনঃ +৮৮-০২৯১২৩৬৭৭