১৫ আগস্ট স্বাধীনতা দিবসের মতোই ২৬ জানুয়ারিও প্রত্যেক ভারতবাসীর জন্য অত্যন্ত গুরুত্বপূর্ণ ও গর্বের দিন। ১৯৪৭ সালের ১৫ আগস্ট ভারত ইংরেজ শাসনের থেকে স্বাধীনতা পায়। কিন্তু সে সময় ভারতের নিজস্ব কোনও স্থায়ী সংবিধান না থাকায় ব্রিটিশ সরকারের ১৯৩৫ সালের সংবিধান অনুযায়ী শাসিত হত স্বাধীন ভারত। ২৯ আগস্ট ভারতে স্থায়ী সংবিধান প্রণয়নের উদ্দেশ্যে একটি খসড়া কমিটি গড়ে তোলা হয়। এরপর ৪ নভেম্বর ভারত খসড়া কমিটি সংবিধান সভায় তাদের সংবিধান জমা দেয়। ঐ বছরের ২৬ নভেম্বর ভারতীয় সংবিধান সভায় গৃহীত হয়। ২৪ জানুয়ারি সংবিধান সভার ৩০৮ জন সদস্য সংবিধানের হস্তলিখিত কপিগুলিতে সই করেন। এর মাত্র দু’দিন পর ২৬ জানুয়ারি ভারতীয় সংবিধান কার্যকর হয় আর সার্বভৌম গণতান্ত্রিক রাষ্ট্র হিসেবে আনুষ্ঠানিকভাবে আত্মপ্রকাশ করে ভারত। এই দিনটিই ভারতের রিপাবলিক ডে বা প্রজাতন্ত্র দিবস হিসাবে পালিত হয়।
বিভিন্ন কার্যক্রমে এ দিনটি সাজিয়ে তোলে ভারতীয়রা। দিনের শুরুতেই রাষ্ট্রপতি রাম নাথ কোবিন্দ রাজপথে দেশের জাতীয় পতাকা উত্তোলন করেন। তারপর দিল্লিতে অনুষ্ঠিত হয় জমকালো কুচকাওয়াজ। কুচকাওয়াজ শুরু হয় দিল্লির রাজপথ থেকে। আট কিলোমিটারের এ কুচকাওয়াজ শেষ হয় ইন্ডিয়া গেটে এসে। প্যারেডে অংশগ্রহণ করে ভারতীয় সেনা, নৌ ও বায়ুসেনা। এটি একটি বড় আকর্ষণ দেশের মানুষের কাছে। দিবসটি উপলক্ষে কাজাখিস্তান, কিরগিস্তান, তাজিকিস্তান, তুর্কমেনিস্তান ও উজবেকিস্তান থেকে বিশিষ্টজনেরা আসবেন এবং প্রজাতন্ত্র দিবসের কর্মসূচিতে অংশ নেবেন। তবে করোনা সংক্রমণের কারণে ২৪ হাজারের বদলে রাজপথে মাত্র আট হাজার মানুষকে জমায়েতের অনুমতি দেওয়া হয়েছে। একইসঙ্গে প্রতিরক্ষা মন্ত্রণালয়ের তরফে জানানো হয়েছে, ১৫ বছরের নীচে কোনও শিশু এবং ভ্যাকসিন নেননি এমন মানুষ কুচকাওয়াজে অংশ নিতে পারবেন না।
প্রজাতন্ত্র দিবসের প্যারেডে প্রতি বছর বিভিন্ন রাজ্যের ট্যাবলো অংশগ্রহণ করে। ট্যাবলোগুলি দেশের ভিন্ন সংস্কৃতির পরিচয় বহন করে। ভিন্ন ধরনের সংস্কৃতির সঙ্গে দেশবাসীকে পরিচয় করায়। এদিন সেনাবাহিনীতে বীরত্বের জন্য পরম বীর চক্র, অশোক চক্র এবং বীর চক্র দেওয়া হয়। আর রাষ্ট্রপতি প্রদান করেন বিখ্যাত পদ্মশ্রী পুরস্কার।
উল্লেখ্য, এই বছর প্রজাতন্ত্র দিবসে প্রধানমন্ত্রী নরেন্দ্র মোদী এবং বিশিষ্ট অতিথিদের ওপর হামলার ছক কষেছে আতঙ্কবাদীরা, এমনই তথ্য পেয়েছে ভারতীয় গোয়েন্দা সংস্থাগুলি। সম্প্রতি গোয়েন্দা সংস্থার তরফে একটি নয় পাতার রিপোর্ট তৈরি করা হয়। ফলে নিশ্ছিদ্র নিরাপত্তার ব্যবস্থা করা হয়েছে।