ইনসাইড বাংলাদেশ

ভারত বাংলাদেশে কি চায়?


প্রকাশ: 26/01/2022


Thumbnail

আজ ভারতের প্রজাতন্ত্র দিবস। ভারতের প্রজাতন্ত্র দিবসে ভারতের পার্শ্ববর্তী রাষ্ট্রগুলোর সঙ্গে সম্পর্ক নিয়ে নতুন করে বিশ্লেষণ হচ্ছে। দক্ষিণ-পূর্ব এশিয়ায় ভারত এখন মোটামুটি একঘরে হয়ে পড়েছে। নেপালের সঙ্গে ভারতের আগের সম্পর্ক নেই বরং নেপালে ভারতবিরোধী জনমানসিকতা তীব্র আকার ধারণ করেছে। মালদ্বীপের সরকারটি ভারতপন্থী হলেও সাধারণ জনগণ এখন ভারত বিরোধী হিসেবে পরিচিত। মালদ্বীপ এখন চীন এবং ভারতের কর্তৃত্ব দখলের একটি রণভূমিতে পরিণত হয়েছে। শ্রীলংকা সঙ্গে ভারতের সম্পর্ক শীতল এবং সেদেশের জনগণের একটি বড় অংশই এখন ভারত বিরোধী হিসেবে পরিচিত। পাকিস্তানের সঙ্গে ভারতের সম্পর্ক সেই শুরু থেকেই খারাপ। কাজেই উপমহাদেশে ভারত মিত্রহীন একঘরে। এর মধ্যে শুধুমাত্র বাংলাদেশের সঙ্গে ভারতের সম্পর্ক উষ্ণ এবং গত এক যুগে এই সম্পর্ককে অনেক দূর এগিয়ে নিয়ে যেতে সক্ষম হয়েছে দুইটি দেশ। কিন্তু দ্বিতীয় মেয়াদে নরেন্দ্র মোদি সরকার ক্ষমতা গ্রহণের পর বাংলাদেশ-ভারত সম্পর্কের ক্ষেত্রে নানা রকম টানাপোড়েন লক্ষ্য করা যায়। বিশেষ করে সীমান্তহত্যা, তিস্তার পানিবণ্টন চুক্তি করতে ভারতের নানা রকম গড়িমসি সহ বিভিন্ন ইস্যুতে এখন দুই দেশের সম্পর্কের মধ্যে নানা রকম অস্বস্তি লক্ষ্য করা যাচ্ছে। বিশেষ করে সাম্প্রতিক সময়ে মার্কিন যুক্তরাষ্ট্র যে বাংলাদেশের বিরুদ্ধে নেতিবাচক অবস্থান নিচ্ছে সেই নেতিবাচক অবস্থান এর ক্ষেত্রেও ভারতের একটি ভূমিকা রয়েছে বলে কোনো কোনো মহল মনে করেন। 

তাছাড়া মিয়ানমারের সঙ্গে ভারতের সম্পর্ক থাকার কারণে রোহিঙ্গা ইস্যুতেও বাংলাদেশ আন্তর্জাতিক পরিমণ্ডলে কোণঠাসা হয়ে পড়েছেন। অনেকেই মনে করেন যে বাংলাদেশের সঙ্গে চীনের অর্থনৈতিক সম্পর্ক বাংলাদেশ-ভারত সম্পর্কের ক্ষেত্রে এক ধরনের অবিশ্বাস এবং দূরত্ব তৈরি করেছে। যদিও দুই দেশের পক্ষ থেকে আনুষ্ঠানিকভাবে এ বক্তব্যকে অস্বীকার করা হয়। কিন্তু তারপরও অনেকে মনে করেন যে চীনের সঙ্গে বাংলাদেশের ঘনিষ্ঠতার কারণে ভারত এখন বাংলাদেশের উপর এক ধরনের চাপ সৃষ্টির কৌশল নিয়েছে। আর সেই চাপ সৃষ্টির জন্য মার্কিন যুক্তরাষ্ট্র ব্যবহৃত হচ্ছে। কারণ জো বাইডেন সরকারের পররাষ্ট্রনীতি খুব সুস্পষ্ট। তারা এই অঞ্চলে ভারতের উপরে অনেকখানি নির্ভরশীল। আর তাই বাংলাদেশের গণতন্ত্র, মানবাধিকার ইত্যাদি বিষয় নিয়ে যে মার্কিন প্রশাসন এখন নাক গলাচ্ছে তার একটি বড় কারণ ভারত হতে পারে বলে অনেকে মনে করেন। তবে এইসব চাপের পরও ভারতের থিঙ্ক ট্যাঙ্ক মনে করে বাংলাদেশে বর্তমান সরকারের কোনো বিকল্প নেই। 

ভারতে এটা খুব ভালো মতই জানে যে, আওয়ামী লীগ সরকার বিশেষ করে শেখ হাসিনা প্রধানমন্ত্রী আছেন জন্যই বাংলাদেশের বিচ্ছিন্নতাবাদী তৎপরতা বন্ধ হয়েছে। তারা খুব ভালোমতোই জানেন যে, শেখ হাসিনা ক্ষমতায় আছেন জন্যই বাংলাদেশে জঙ্গিবাদ এবং সন্ত্রাসবাদ মাথাচাড়া দিয়ে উঠতে পারে নাই। আর এই দুটি জিনিসে যদি বাংলাদেশে ভারতীয় বিচ্ছিন্নতাবাদীদের আশ্রয় প্রশ্রয় দেওয়া হয়, কিংবা বাংলাদেশের যদি জঙ্গিবাদ ও সন্ত্রাসবাদের উত্থান ঘটে সে ক্ষেত্রে ভবিষ্যতে তা ভারতের জন্যই বুমেরাং হয়ে যাবে। তাই ভারত বাংলাদেশে কি চায় তা মোটামুটি সুস্পষ্ট এবং সুনির্দিষ্ট। ভারত বাংলাদেশে চায় তার কূটনীতিতে চীন এবং পাকিস্তানের সঙ্গে এক ধরনের দূরত্ব তৈরি করুন। আবার এটিও চায় যে বাংলাদেশ ভারতের যে সম্পর্কের উষ্ণতা সেটি বজায় থাকুক। অর্থাৎ চাপ দিয়ে ভারত বাংলাদেশকে তার মত করে রাখতে চায় কিনা সেটি নিয়েও বিভিন্ন মহলে নানামুখী আলোচনা রয়েছে।


প্রধান সম্পাদকঃ সৈয়দ বোরহান কবীর
ক্রিয়েটিভ মিডিয়া লিমিটেডের অঙ্গ প্রতিষ্ঠান

বার্তা এবং বাণিজ্যিক কার্যালয়ঃ ২/৩ , ব্লক - ডি , লালমাটিয়া , ঢাকা -১২০৭
নিবন্ধিত ঠিকানাঃ বাড়ি# ৪৩ (লেভেল-৫) , রোড#১৬ নতুন (পুরাতন ২৭) , ধানমন্ডি , ঢাকা- ১২০৯
ফোনঃ +৮৮-০২৯১২৩৬৭৭