ইনসাইড থট

প্রধানমন্ত্রীর সত্য ভাষণ

নিজস্ব প্রতিবেদক

প্রকাশ: 07/12/2017


Thumbnail

ঘটনাটি ১৯৯৫ সালের। বিবিসির সাংবাদিক রিচার্ড গ্যালপিন বাংলাদেশ ছেড়ে চলে যাবেন। শেখ হাসিনা তখন সবে সংসদ থেকে পদত্যাগ করেছেন। একযোগে তাঁর নেতৃত্বে পদত্যাগ করেছে বিরোধী দলের সব সংসদ সদস্য। ধানমণ্ডি পাঁচ নম্বরের সুধা সদনে উঠেছেন শেখ হাসিনা। সেখানেই রিচার্ড গ্যালপিনকে চায়ের দাওয়াত দিলেন আওয়ামী লীগ সভাপতি। চায়ের দাওয়াত শেষ করে বেরিয়ে গ্যালপিন হাঁটতে হাঁটতে বললেন, ‘নেক্টট প্রাইম মিনিস্টার অব ইয়োর কান্ট্রি।’ আমি তাঁকে জিঙ্গেস করলাম, এতদিন বাংলাদেশে থাকলে, শেখ হাসিনার কোন গুণটি তোমাকে সবচেয়ে মুগ্ধ করল? উত্তরে গ্যালপিন বলেছিল, ‘তাঁর স্পষ্টবাদিতা। সত্যটা সাহস করে বলতে পারেন তিনি। এজন্য হয়তো তাঁকে অনেক মূল্যও দিতে হবে।’

বিকেলে গণভবনে প্রধানমন্ত্রীর সংবাদ সম্মেলন দেখতে দেখতে রিচার্ড গ্যালপিনকে মনে পড়ল। স্বত:স্ফূর্ত, প্রাণবন্ত, খোলামেলা, চাঁছাছোলা, অকুতোভয়। এটাই সম্ভবত শেখ হাসিনার বৈশিষ্ট্য। ঘাটাঘাটি করে দেখলাম, আজকাল রাষ্ট্রপ্রধান বা সরকার প্রধানরা সংবাদ সম্মেলনে প্রশ্ন নেন না। সর্বশেষ গত ১ ডিসেম্বর জার্মানির চ্যান্সেলর এক সংবাদ সম্মেলন করলেন, বক্তব্য পাঠ করেই তিনি বিদায় নিলেন। ইদানিং তো মার্কিন প্রেসিডেন্ট প্রেস কনফারেন্স মানেই ধামাকা, যেন মিডিয়ার সঙ্গে ট্রাম্পের মল্লযুদ্ধ। যেখানে বাংলাদেশের প্রধানমন্ত্রী যেন খোলা বই। যা বিশ্বাস করেন, যা চিন্তা করেন- তা প্রকাশ করতে কার্পণ্য করেন নি। অবশ্য আমি এটাকে সংবাদ সম্মেলন না বলে সম্পাদক সম্মেলন বলতে চাই। মাছরাঙা টেলিভিশনের মৌ এবং দেশ টেলিভিশনের একজন তরুণ অনুজ সংবাদকর্মী ছাড়া সংবাদ সম্মেলনে উপস্থিত কোনো সাংবাদকর্মী প্রশ্ন করতে পারেননি। ভালোই হয়েছে, সম্পাদকের প্রধানমন্ত্রী মনের কথা অকপটে বলেছেন। সৌদি তদন্তে জিয়া পরিবারের নাম শিরোনামে রিপোর্ট প্রথম প্রকাশ করেছিল বাংলা ইনসাইডার। আমরা যখন ওই প্রতিবেদন প্রকাশ করি তখন দুজন সম্পাদক আমাকে ফোন করে ‘সাংবাদিকতা’ শিখিয়েছিলেন। দেখলাম সংবাদ সম্মেলনে তাঁরা তেলের ড্রাম নিয়ে এসেছেন। প্রধানমন্ত্রী সৌদি আরবে বেগম জিয়া ও তাঁর পরিবারের অর্থ পাচারের খবর প্রকাশ না করায় তথাকথিত মূলধারার গণমাধ্যমকে র্ভৎসনা করেছেন, তিরস্কার করেছেন। তাঁরা কিছু পেয়েছেন কিনা এ প্রশ্নও করেছেন। ধন্যবাদ মাননীয় প্রধানমন্ত্রী আপনার স্পষ্ট উচ্চারণের জন্য। প্রধানমন্ত্রী এও বলেছেন, ’এরকম সংবাদ যদি আমার কিংবা আমার পরিবারের বিরুদ্ধে আসতো তখন কী করতেন?‘

প্রধানমন্ত্রী সবই জানেন এবং বোঝেন। গণভবনে উপস্থিত সম্পাদকবৃন্দের মধ্যে কারা তারেকের অপেক্ষায় আছেন সে খবর তাঁর অজানা থাকার কথা না। কেউ যদি খুব ভালোভাবে প্রধানমন্ত্রীর সংবাদ সম্মেলন পর্যবেক্ষণ করেন তাহলে দেখবেন চাটুকার, পলায়নপর মিডিয়ার মুখোশ উন্মোচন করেছেন। বাংলাদেশে গণমাধ্যমকে সবাই ভয় পায়। গণমাধ্যমের বিরুদ্ধে কেউ কথা বলে না। সমঝোতা করে চলে। এখানেই শেখ হাসিনার অনন্যতা। তিনি সাদাকে সাদা, কালোকে কালো বলতে পারেন। ধন্যবাদ প্রধানমন্ত্রী, ধন্যবাদ সাহসিকা।

Read in English- http://bit.ly/2AjJNAB

বাংলা ইনসাইডার/জেডএ



প্রধান সম্পাদকঃ সৈয়দ বোরহান কবীর
ক্রিয়েটিভ মিডিয়া লিমিটেডের অঙ্গ প্রতিষ্ঠান

বার্তা এবং বাণিজ্যিক কার্যালয়ঃ ২/৩ , ব্লক - ডি , লালমাটিয়া , ঢাকা -১২০৭
নিবন্ধিত ঠিকানাঃ বাড়ি# ৪৩ (লেভেল-৫) , রোড#১৬ নতুন (পুরাতন ২৭) , ধানমন্ডি , ঢাকা- ১২০৯
ফোনঃ +৮৮-০২৯১২৩৬৭৭