কালার ইনসাইড

সমাজ নষ্টের মিশনে প্রথম আলোর চরকি


প্রকাশ: 28/01/2022


Thumbnail

প্রথম আলো একটি ওটিটি প্লাটফর্ম চালু করেছে বেশ কিছুদিন আগে, চরকি। ইতোমধ্যে এই প্লাটফর্মটা জনপ্রিয় হয়েছে। বাংলাদেশে এখন ওটিটি প্লাটফর্ম চালু করার ক্ষেত্রে কোনো আইন-কানুন নেই। যার টাকা আছে, যিনি ইচ্ছা করবেন তিনি এরকম প্লাটফর্ম তৈরি করতে পারেন। একটি চলচ্চিত্রকে মুক্তি দিতে হলে সেই চলচ্চিত্রটিকে সেন্সর বোর্ড এর কাছ থেকে সেন্সর ছাড়পত্র নিতে হয়। কিন্তু ওটিটি প্লাটফর্মে ছবি মুক্তির ক্ষেত্রে কারো কোনো অনুমতি নাই। এই চরকি প্লাটফর্মে যে সমস্ত কন্টেন্টগুলো প্রচারিত হচ্ছে তা ভয়ঙ্কর হচ্ছে এবং তা সমাজ নষ্টের একটি মিশন হিসেবে মনে করছে অনেক বোদ্ধারা। গতকাল রাত আটটায় ওটিটিতে মুক্তি পেয়েছে টান। এটি একটি চলচ্চিত্র অথচ ফিল্ম সেন্সর বোর্ডের অনুমতি নেই। তথ্য মন্ত্রণালয় এখন বিদেশি চ্যানেলে বিজ্ঞাপনের জন্য বিদেশি চ্যানেল গুলো বন্ধ করে দেন, অননুমোদিত অনলাইন প্লাটফর্মকে বন্ধ করে দেন কিংবা যে সমস্ত আইপিটিভি সংবাদ প্রচার করছে তাদের বিরুদ্ধে ব্যবস্থা গ্রহণের ঘোষণা দেন। কিন্তু চরকির ব্যাপারে তথ্য সম্প্রচার মন্ত্রণালয়ের নীরবতা নতুন করে প্রশ্নের জন্ম দিয়েছে। তাহলে কি প্রথম আলো গোষ্ঠীর জন্য ভিন্ন আইন? তারা যা খুশি তাই করতে পারে?

টান নামের পুরো ছবিটি জুড়ে মাদক এবং মাদককে প্রমোট করা হয়েছে, খুন-সন্ত্রাসকে উপজীব্য করা হয়েছে। এই চলচ্চিত্রটি পরিবারের সবার একসঙ্গে বসে দেখার মতো অবস্থা নেই। সেখানে সিয়ামকে দেখানো হয়েছে একজন মাদকাসক্ত, যিনি স্ত্রীর টাকা চুরি করেন। অন্যদের টাকা চুরি করেন, ছিনতাই করে মাদকের টাকা দেন। তাকেই এই ছবিতে নায়ক বানানো হয়েছে। প্রথম আলো গোষ্ঠী কি চাচ্ছে? সমাজ নষ্টের এম্বিশনে কি নেমেছে প্রথম আলো গোষ্ঠী। এটি যদি প্রথম হতো তাও একটি কথা ছিলো। এর কদিন আগেই শাটিকাপ নামের একটি ওয়েব সিরিজ প্রকাশ করেছে প্রথম আলো গোষ্ঠী। সেই ওয়েব সিরিজে প্রথম আলো গোষ্ঠী যে ভাষা ব্যবহার করেছে তা কখনো টেলিভিশন বা চলচ্চিত্রের ভাষা হতে পারে কি না, তা নিয়ে বোদ্ধাগণের মধ্যে প্রশ্ন উঠেছে। অশ্লীল-অশ্রাব্য এবং উচ্চারণ অযোগ্য গালাগালির মধ্যদিয়ে এই ওয়েব সিরিজটি এগিয়ে গেছে। পুরো ওয়েব সিরিজের মধ্যে একটি শুদ্ধ এবং ভালো বাক্য নেই। সেখানে অবাধে মাদক ব্যবসা, বেচাকেনা এবং খুন-খারাবিকে এক ধরনের বৈধতা দেওয়া হয়েছে। এগুলো দেখিয়েই কি প্রথম আলো পরবর্তীতে আবার আন্তর্জাতিক সংস্থাগুলোর কাছে বলবে যে, বাংলাদেশে মাদকের রমরমা ব্যবসা চলে, মাদক নিয়ন্ত্রণের কোন ব্যাপার নেই।

একদিকে প্রথম আলো গ্রুপ মাদকের বিরুদ্ধে তাদের সামাজিক দায়বদ্ধতার কর্মসূচি করছে, অন্যদিকে তাদের ওটিটি প্লাটফর্মে মাদককে প্রমোট করছে। শুধু এই দুটিই নয়। এর আগে ‘খাঁচার ভিতর অচিন পাখি’ নামের একটি চলচ্চিত্রে প্রকাশ করা হয়েছিল যেটিও সেন্সর বোর্ডের কোনো অনুমোদন নেই। সেই চলচ্চিত্রটিতে ২১ আগস্ট গ্রেনেড হামলা সম্পূর্ণ বিকৃতভাবে উপস্থাপন করেছে। সরকারের পক্ষ থেকে এ ব্যাপারে কোনো পদক্ষেপ গ্রহণ করতে দেখা যায়নি। একটি বিচারাধীন বিষয় নিয়ে গোলাম ফারুক অভি ও তিন্নির প্রেম এবং তিন্নি হত্যাকাণ্ড নিয়ে মরীচিকা নামে আরেকটি বিতর্কিত কনটেন্ট তারা ছেড়েছিল।

প্রশ্ন হলো যে, এই সমস্ত ওটিটি প্ল্যাটফর্মগুলোতে যে সমস্ত ছবিগুলো যাচ্ছে সেগুলো কি কারো অনুমোদিত নয়, এদের রেটিং কে দিচ্ছে? প্রাপ্তবয়স্কদের জন্য যদি কোন চলচ্চিত্র বা ওয়েব সিরিজ মুক্তি দেয়া হয় তাহলে কি তথ্য-সম্প্রচার কর্তৃপক্ষের দেখার কোনো এখতিয়ার নাই বা তারা কি দায়িত্ব বোধ করেন না। আমাদের তথ্য মন্ত্রণালয় বিদেশী চ্যানেলের ব্যাপারে, আইপিটিভির ব্যাপারে যতটা সোচ্চার, প্রথম আলো গোষ্ঠীর চরকির ব্যাপারে এতটা নীরব কেন। প্রথম আলো গোষ্ঠী যেভাবে সমাজকে বিকৃত করছে এবং নষ্টামি ছড়াচ্ছে তাতে ভবিষ্যতে বাংলাদেশের সংস্কৃতি কোথায় গিয়ে দাঁড়াবে তা নিয়ে অনেক মহলে উদ্বিগ্ন।


প্রধান সম্পাদকঃ সৈয়দ বোরহান কবীর
ক্রিয়েটিভ মিডিয়া লিমিটেডের অঙ্গ প্রতিষ্ঠান

বার্তা এবং বাণিজ্যিক কার্যালয়ঃ ২/৩ , ব্লক - ডি , লালমাটিয়া , ঢাকা -১২০৭
নিবন্ধিত ঠিকানাঃ বাড়ি# ৪৩ (লেভেল-৫) , রোড#১৬ নতুন (পুরাতন ২৭) , ধানমন্ডি , ঢাকা- ১২০৯
ফোনঃ +৮৮-০২৯১২৩৬৭৭