ইনসাইড পলিটিক্স

বেগম জিয়াকে নিয়ে তারেকের রহস্যময় কৌশল


প্রকাশ: 30/01/2022


Thumbnail

বিএনপির স্থায়ী কমিটির বৈঠক অনুষ্ঠিত হয়েছে গতকাল শনিবার। এ বৈঠকে যোগ দেন লন্ডন থেকে বিএনপির পলাতক ভারপ্রাপ্ত চেয়ারম্যান তারেক জিয়া। বৈঠকে আন্দোলনের কৌশল নিয়ে আলোচনা হয়েছে এবং এক দফা আন্দোলনের সূচনা করার জন্য তারেক জিয়া সবুজ সংকেত দিয়েছেন বলে বৈঠকে সংযুক্ত একাধিক নেতা নিশ্চিত করেছেন। তবে এই বৈঠকে সবচেয়ে চাঞ্চল্যকর ব্যাপার ছিলো বেগম খালেদা জিয়ার অসুস্থতা এবং তার চিকিৎসা প্রক্রিয়া। এই অসুস্থতা নিয়ে বিএনপির অন্তত দুজন নেতা বলেছেন যে, এখন এভারকেয়ার হাসপাতালে বেগম জিয়াকে রাখা নিরাপদ নয়। এভারকেয়ার হাসপাতালের চিকিৎসকদের সঙ্গে আলাপের সূত্র ধরে বিএনপির একজন নেতা বলেন যে, বেগম খালেদা জিয়া এখন অনেকটাই সুস্থ এবং তাকে বাড়িতে নিয়ে যেয়ে চিকিৎসার জন্য এভারকেয়ার হাসপাতাল কর্তৃপক্ষ তাদেরকে অনুরোধ করেছেন। তারা বলছেন যে, এভারকেয়ারে এখন করোনার সংক্রমণ মারাত্মকভাবে বেড়ে গেছে। এই অবস্থায় বেগম খালেদা জিয়ার মত জটিল এবং নানা রোগে আক্রান্ত একজন ব্যক্তি হাসপাতালে থাকা নিরাপদ নয়। তারা মনে করছেন যে, বেগম জিয়া যদি আবার করোনায় আক্রান্ত হন তাহলে তার অবস্থা খারাপ হয়ে যাবে।

এরপর বিএনপির অন্য একজন নেতা বলেন যে, আমরা যেহেতু একদফা আন্দোলন শুরু করতে যাচ্ছি এবং নির্বাচন কমিশন এবং সরকারের পতনের লক্ষ্যে আন্দোলন করছি কাজেই বেগম জিয়াকে এখন বাড়িতে নিয়ে যাওয়াই শ্রেয়। তিনি এটাও বলেন যে, সরকার যেহেতু বেগম জিয়ার উন্নত চিকিৎসার জন্য বিদেশে যাওয়ার বিষয়টি আমলে নিচ্ছে না সে কারণে এখন আর তাকে হাসপাতালে রেখে ঝুঁকি বাড়ানোর দরকার নেই। এই দুই নেতার বক্তব্যের পর তারেক জিয়া রহস্যময় হাসি দেন এবং জানিয়ে দেন যে, বেগম জিয়াকে আপাতত হাসপাতালেই থাকতে হবে। কেন থাকতে হবে, এর ব্যাখ্যা দেননি কিন্তু তার এই কৌশল রহস্য সৃষ্টি করেছে বিএনপির মধ্যে। এখন বেগম খালেদা জিয়ার হাসপাতালে থাকার মতো গুরুতর অসুস্থতা নেই, তবুও তারেক জিয়া কেন তাকে হাসপাতালে রাখার জন্য চাপ দিচ্ছেন এর পেছনে বিএনপির নেতারা একাধিক কারণ ব্যাখ্যা করেছেন।

প্রথমত, তারা বলছেন যে বেগম খালেদা জিয়া যদি এখন বাড়িতে যান তাহলে তাদের আন্দোলনের আসল অস্ত্রটি ভোঁতা হয়ে যাবে। কারণ, বেগম খালেদা জিয়া গুরুতর অসুস্থ, বেগম জিয়ার প্রতি সরকার অমানবিক এই সমস্ত বিষয় গুলো দেখিয়ে তারা একটি আন্দোলনের আবহ তৈরি করতে পেরেছিল। এখন যদি তাকে বাড়িতে নিয়ে যাওয়া হয় তাহলে সকলের কাছে একটা পরিষ্কার বার্তা যাবে যে, বিএনপি নেতারা মিথ্যাচার করেছিলো।

দ্বিতীয়ত, তারেক জিয়া বেগম খালেদা জিয়ার স্বাস্থ্যকে আরো ঝুঁকিতেই ফেলতে চান বলে মনে করেন কোন কোন বিএনপির নেতারা। তারা বলছেন যে, এখন হাসপাতালে গুরুত্বর রোগীদের রাখা হচ্ছে না। কারণ, করোনার প্রকোপ আবার বেড়ে গেছে। এই পরিস্থিতিতে বাসায় চিকিৎসাই নিরাপদ। কিন্তু তারেক জিয়া বেগম খালেদা জিয়াকে ঝুঁকিতে ফেলতে চান। এখন যদি বেগম জিয়ার আবার করোনা হয় বা অন্য কোনো জটিলতা দেখা দেয় সেটি হবে তারেকের জন্য একটা প্লাস পয়েন্ট এবং এটিকেই তিনি ব্যবহার করবেন রাজনৈতিক হাতিয়ার হিসেবে। বেগম খালেদা জিয়ার খারাপ পরিণতি বিএনপিকে আন্দোলন বেগবান করতে সহায়তা করবে, এমন একটি ভাবনা তারেক জিয়া এবং বিএনপির কারও কারও মধ্যে যে আছে সেটা খুব স্পষ্ট।

আর এজন্যই তারেক বেগম খালেদা জিয়াকে নিয়ে এক রহস্যময় কৌশল গ্রহণ করেছেন। এই রহস্যময় কৌশলটি নির্মম এবং অমানবিক ও বটে। কারণ, বেগম খালেদা জিয়াকে লাশ বানিয়ে তার ওপর রাজনীতি করতে চান তারেক জিয়া। এর আগেও বেগম খালেদা জিয়া সম্পর্কে যে সমস্ত কথাবার্তা বলা হয়েছে তাকে অর্ধেক প্রায় মেরেই ফেলা হয়েছিল। কিন্তু বেগম খালেদা জিয়া যখন সুস্থ হয়ে ওঠেন তখন বিএনপির অনেকেই বিব্রত হন। তাই এখন করোনা প্রকোপের মধ্যেও বেগম খালেদা জিয়াকে ঝুঁকিপূর্ণ অবস্থায় হাসপাতালে রাখা হচ্ছে যেন একটা কিছু ঘটে আর বিএনপি হালে পানি পায়।


প্রধান সম্পাদকঃ সৈয়দ বোরহান কবীর
ক্রিয়েটিভ মিডিয়া লিমিটেডের অঙ্গ প্রতিষ্ঠান

বার্তা এবং বাণিজ্যিক কার্যালয়ঃ ২/৩ , ব্লক - ডি , লালমাটিয়া , ঢাকা -১২০৭
নিবন্ধিত ঠিকানাঃ বাড়ি# ৪৩ (লেভেল-৫) , রোড#১৬ নতুন (পুরাতন ২৭) , ধানমন্ডি , ঢাকা- ১২০৯
ফোনঃ +৮৮-০২৯১২৩৬৭৭