ইনসাইড বাংলাদেশ

সিইসি-সুজন বিতর্কের শেষ কোথায়?


প্রকাশ: 01/02/2022


Thumbnail

নির্বাচন কমিশন একটি সাংবিধানিক প্রতিষ্ঠান। অন্যদিকে দেশের গণতন্ত্র, নির্বাচন, নাগরিক অধিকারসহ বিভিন্ন বিষয়ে কাজ করে সুশাসনের জন্য নাগরিক (সুজন)। দুটি প্রতিষ্ঠানই সাধারণ মানুষ ও তাদের আকাঙ্খা নিয়ে কাজ করে। সাধারণ মানুষ ও তাদের আকাঙ্খা নিয়ে কাজ করার কারণে দুটি প্রতিষ্ঠানেরই একে অপরকে সহযোগিতা করার কথা। কিন্তু সহযোগিতা না করে উল্টো একে অপরের বিরুদ্ধে বিতর্কে লিপ্ত হয়েছেন প্রতিষ্ঠান দুটির নির্বাহীরা। সাম্প্রতিক সময়ে প্রধান নির্বাচন কমিশনার নুরুল হুদা সুজন সম্পাদক ড. বদিউল আলম মজুমদারের বিরুদ্ধে দুর্নীতির অভিযোগ তুলেছেন। বিপরীতে যৌক্তিক সমালোচনার যুৎসই জবাব না থাকায় সিইসি চরিত্র হননের অপচেষ্টায় লিপ্ত হয়েছেন বলে দাবি করেছেন বদিউল আলম মজুমদার। সম্মানীত এ দুই ব্যক্তির কাঁদা ছোড়াছুড়িতে উদ্বিগ্ন ও স্থম্ভিত দেশের মানুষ।

গত বৃহস্পতিবার (২৭ জানুয়ারি) নির্বাচন ভবনের মিডিয়া সেন্টারে আয়োজিত এক বৈঠকে নিজের মেয়াদকাল নিয়ে সাংবাদিকদের সঙ্গে খোলামেলা কথা বলেছেন প্রধান নির্বাচন কমিশনার। সেই খোলামেলা আলাপ-আলোচনায় তিনি সুজন সম্পাদক বদিউল আলম মজুমদারের বিরুদ্ধে অস্বচ্ছ প্রক্রিয়ায় নির্বাচনী কাজ পাবার অভিযোগ তুলেছেন। অস্বচ্ছ প্রক্রিয়ায় হওয়া ওই কাজে লাখ লাখ টাকার অনিয়মের অভিযোগ রয়েছে বলেও জানান তিনি। তিনি বলেন, সুশাসনের জন্য নাগরিকের (সুজন) সম্পাদক বদিউল আলম মজুমদারের বিরুদ্ধে এক কোটি টাকার আর্থিক অনিয়মের অভিযোগ কমিশনে রয়েছে। আমি সিইসি হিসেবে দায়িত্ব নেওয়ার পরেও তিনি আমার সঙ্গে একাধিকবার দেখা করে সুযোগ-সুবিধা চেয়েছিলেন। কিন্তু তাকে কোনো সুযোগ-সুবিধা না দেওয়ায় তিনি কমিশনের বিরুদ্ধে বিভিন্ন সময়ে ব্যক্তিগতভাবে আক্রমণ করছে।

অপরদিকে, ড. বদিউল আলম মজুমদারও তার বিরুদ্ধে আনা অভিযোগ খণ্ডন না করে নুরুল হুদাকে চ্যালেঞ্জ করেছেন এবং তাকে ‘খলনায়ক’ বলে অভিহিত করেছেন। তিনি বলেন, আমাদের দুর্ভাগ্য, এরকম একজন খলনায়ককে নির্বাচন কমিশনের প্রধান হিসাবে নিয়োগ দেওয়া হয়েছে। এই ভদ্রলোক (সিইসি নূরুল হুদা) এখন আমাদের দোষারোপ করার চেষ্টা করছেন। কোনো তথ্য প্রমাণ থাকলে তুলে ধরুক। এই চ্যালেঞ্জ আমি দিচ্ছি।

বদিউল আলম মজুমদারের ইস্যুর আগে সিইসি নুরুল হুদা নির্বাচন কমিশনার মাহবুব তালুকদারসহ অনেক বিষয়ে যে সমস্ত বক্তব্য দিয়েছেন, সাংবিধানিক পদে থাকা একজন ব্যক্তির জন্য এ ধরনের বক্তব্য দেওয়াকে বেমানান ও শিষ্টাচারবহির্ভূত বলে মনে করেন রাজনৈতিক বিশ্লেষকরা। রাজনৈতিক বিশ্লেষকরা মনে করেন, সাধারণত সাংবিধানিক পদে থাকা একজন ব্যক্তিকে ব্যক্তিত্ববান এবং কথাবার্তায় সংযত হতে হয়। দায়িত্বপূর্ণ এ ধরনের পদে থাকা ব্যক্তিদের সব বিষয়ে সব মন্তব্য করা ঠিক নয়। কিন্তু প্রধান নির্বাচন কমিশনার নুরুল হুদা কেবল বিতর্কিত মন্তব্যই করেননি, তার পরিচালিত নির্বাচনগুলো নিয়েও একাধিকবার রাজনৈতিক সচেতন মহল থেকে প্রশ্ন উঠেছে এবং এর ফলে নির্বাচন কমিশনের মান-মর্যাদা এবং সম্মানহানি হয়েছে।

বদিউল আলম মজুমদার একজন সজ্জন ব্যক্তি হিসেবে সমাজে পরিচিত। তিনি অন্যান্য ব্যক্তিদের দুর্নীতি নিয়ে কথা বলতেন। এখন উনার বিরুদ্ধেই দুর্নীতির অভিযোগ উঠেছে এবং অভিযোগগুলো ভয়াবহ। ফলে তাকে প্রমাণ করতেই হবে তিনি কোনো ধরণের দুর্নীতি করেননি। পাশাপাশি রাষ্ট্রের তরফ থেকেও পুরো ঘটনার একটি সুষ্ঠু তদন্ত হওয়া দরকার বলে মনে করছেন বিশ্লেষকরা।


প্রধান সম্পাদকঃ সৈয়দ বোরহান কবীর
ক্রিয়েটিভ মিডিয়া লিমিটেডের অঙ্গ প্রতিষ্ঠান

বার্তা এবং বাণিজ্যিক কার্যালয়ঃ ২/৩ , ব্লক - ডি , লালমাটিয়া , ঢাকা -১২০৭
নিবন্ধিত ঠিকানাঃ বাড়ি# ৪৩ (লেভেল-৫) , রোড#১৬ নতুন (পুরাতন ২৭) , ধানমন্ডি , ঢাকা- ১২০৯
ফোনঃ +৮৮-০২৯১২৩৬৭৭