ইনসাইড টক

‘রোগীর সেবা চলবে, শিক্ষা চলবে, গবেষণাও চলবে’


প্রকাশ: 01/02/2022


Thumbnail

শিক্ষা ও গবেষণায় অবদানের জন্য ইমেরিটাস অধ্যাপক হিসেবে নিয়োগ পেয়েছেন বিশিষ্ট মেডিসিন বিশেষজ্ঞ, প্রধানমন্ত্রীর ব্যক্তিগত চিকিৎসক ও ইউজিসি অধ্যাপক ডা. এ বি এম আব্দুল্লাহ। প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনার ব্যক্তিগত চিকিৎসক ছাড়াও ডা. এবিএম আব্দুল্লাহ বিশ্ববিদ্যালয় মঞ্জুরি কমিশনের (ইউজিসি) সদস্য। এবার তার নামের সঙ্গে নতুন যোগ হল ইমিরেটাস অধ্যাপক। অধ্যাপক ডা. এবিএম আবদুল্লাহ চিকিৎসাখাতে অসামান্য অবদানের জন্য ২০১৬ সালে একুশে পদকসহ বিভিন্ন পুরস্কারে ভূষিত হয়েছেন। করোনাকালে জনসচেতনতার স্বীকৃতি ‘কোভিড হিরো’ পুরস্কার পান। তিনি ‘শর্ট কেইস অব ক্লিনিক্যাল মেডিসিন’ বইয়ের জন্য ২০১৩ সালে ইউজিসি পুরস্কার পান। বাংলা একাডেমী থেকেও তাকে অনারি ফেলোশিপ দেওয়া হয়েছে। অধ্যাপক ডা. এ বি এম আব্দুল্লাহ তার ইমেরিটাস অধ্যাপক সম্মাননা পাওয়াসহ বিভিন্ন বিষয়ে বাংলা ইনসাইডারের সাথে কথা বলেছেন। আজ মঙ্গলবার (১ ফেব্রুয়ারি) তার সাক্ষাৎকার নিয়েছেন বাংলা ইনসাইডারের নিজস্ব প্রতিবেদক অলিউল ইসলাম

বাংলা ইনসাইডার: ইমেরিটাস অধ্যাপক হিসেবে নিয়োগ পেয়ে আপনার অনুভূতি কেমন?

ডা. এবিএম আবদুল্লাহ: বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিব মেডিকেল বিশ্ববিদ্যালয়ের (বিএসএমএমইউ) ইমেরিটাস অধ্যাপক হিসেবে নিয়োগ পেয়ে আমি বড় সম্মানে সম্মানিত হয়েছি। বিএসএমএমইউ সিন্ডিকেটের সর্বসম্মতিক্রমে আমাকে নিয়োগ দেওয়া হয়েছে। সিন্ডিকেট না চাইলে এটি হতো না। এজন্য শুরুতেই আমি জাতির পিতা বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবুর রহমানের প্রতি প্রতি গভীর শ্রদ্ধা ও প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনাকে ধন্যবাদ জানাই। এছাড়া বঙ্গমাতা শেখ ফজিলাতুন্নেছা মুজিব ও স্বাধীনতা যুদ্ধে ৩০ লাখ শহিদ এবং দুই লক্ষ মা-বোন, যারা সম্ভ্রম হারিয়েছিলেন, তাদের প্রতি গভীর শ্রদ্ধা জানাচ্ছি। পাশাপাশি সৃষ্টিকর্তা এবং আমার মাতা-পিতাকেও গভীর শ্রদ্ধার সঙ্গে স্মরণ করছি। তাদের ত্যাগের বিনিময়েই আজকে আমি এই অবস্থানে। এছাড়াও বিভিন্ন স্তরে আমাকে যেসব শিক্ষক পাঠদান করেছেন বিশেষ করে প্রাইমারি স্কুল, হাই স্কুল, কলেজ এবং বিশ্ববিদ্যালয়ের শিক্ষকগণদের প্রতি শ্রদ্ধা জানাই। তাদের অধিকাংশই আর বেঁচে নেই। তাদের আত্মার মাগফিরাত কামনা করছি। 

বাংলা ইনসাইডার: ইমেরিটাস অধ্যাপক হিসেবে নিয়োগ পাওয়ার পর ব্যস্ততা কি বেড়েছে?
 
ডা. এবিএম আবদুল্লাহ: অধ্যাপক হিসেবে নিয়োগ পাওয়ার পর অবশ্যই আমার দায়িত্ব বেড়ে গেছে। আমাকে যে সম্মানে সম্মানিত করা হলো, ভবিষ্যতে আমি যেন তার মর্যাদা যথাযথভাবে দিতে পারি তার জন্য সবাই দোয়া করবেন। আমি যেন আমার কাজকর্ম সুন্দর ও সুশৃঙ্খলভাবে পরিচালনা করতে পারি, তার জন্য সকলের আশীর্বাদ কামনা করছি। 

বাংলা ইনসাইডার: জনস্বাস্থ্য বিশেষজ্ঞদের অনেকেই বলে থাকেন গবেষণাসহ নানা ক্ষেত্রে পিছিয়ে আছে বিএসএমএমইউ। আপনার কি মনে হয়?

ডা. এবিএম আবদুল্লাহ: দেখুন গবেষণা তো একটি চলমান প্রক্রিয়া। হচ্ছে না, এটি ঠিক না। কিছু গবেষণা তো হচ্ছে, হয়তো এর প্রচারে একটু ঘাটতি আছে। যেমন ব্যক্তিগতভাবে আমি সাতটি মেডিকেলের উপর বই লিখেছি। এগুলো আন্তর্জাতিকভাবে সমাদৃতও হয়েছে এবং দিল্লি থেকে বের হয়েছে। পাশাপাশি আমার দুইটি বাংলা বইও আছে। এরকম কাজ আরও অনেকেই করছেন। ভবিষ্যতে গবেষণা যেন আরও বাড়ানো যায়, সেই লক্ষ্যে বর্তমান প্রশাসন কাজ করছে। আমার মনে হয় আগামী দিনে নি:সন্দেহে আমাদের কাজ আরও বাড়বে এবং সমৃদ্ধ হবে।

বাংলা ইনসাইডার: অতিসম্প্রতি বিএসএমএমইউ জরুরি বিভাগ চালু করেছে। কিন্তু পর্যাপ্ত প্রস্তুতি নেই বলে অনেকেই অভিযোগ করেছেন। বিষয়টিকে আপনি কিভাবে দেখছেন?

ডা. এবিএম আবদুল্লাহ: অন্তত এটি তো শুরু হয়েছে। এখন অনেক দূরে নিয়ে যেতে হবে। এটি ভবিষ্যতে অনেক দূরে যাবে বলেই আমার বিশ্বাস। এটি খোলার প্রস্তাবক আমি নিজে। ফলে আমি বিশ্বাস করি এটি অনেক বড় হবে এবং সকলের নিকট সমাদৃত হবে। হয়তো এখন এতটা জায়গার সংকুলান হচ্ছে না। কিন্তু ভবিষ্যতে তো অবশ্যই হবে।

বাংলা ইনসাইডার: বিএসএমএমইউ এর প্রধান কার্যক্রম কি?

অধ্যাপক ডা. এ বি এম আব্দুল্লাহ: আমাদের যেহেতু বিশ্ববিদ্যালয় হলো, এটা যেহেতু অন্যান্য বিশ্ববিদ্যালয়ের মত নয়। আমাদের মনে রাখতে হবে এটা কিন্তু মেডিক্যাল বিশ্ববিদ্যালয়। সুতরাং রোগীর চিকিৎসা, রোগীর সেবাই আমি মনে করি ১ নম্বরে। অবশ্যই শিক্ষা, গবেষণা এগুলো চালিয়ে যেতে হবে, অনেক শিক্ষার্থী পোস্ট গ্র্যাজুয়েট আছে, তাদের ভালো ডাক্তার তৈরি হতে হবে, এরাই তো আবার সারাদেশে শিক্ষক হবে। সুতরাং রোগীরও সেবা চলবে, শিক্ষা চলবে, গবেষণাও চলবে। সবগুলোই একসাথে করতে হবে। কিন্তু রোগীর সেবা, রোগীর চিকিৎসায় যেন ঘাটতি না হয়, এটাও কিন্তু আমাদের ১ নম্বর অধিকার।

বাংলা ইনসাইডার: অন্য মেডিক্যাল বিশ্ববিদ্যালয়গুলোর বিএসএমএমইউ এর মত হবে না?

অধ্যাপক ডা. এ বি এম আব্দুল্লাহ: ওটা তো মাত্র শুরু হলো, ওটা তো অবকাঠামো এখনো পরিপূর্ণ হয়নি। কারণ, বিএসএমএমইউ এর তো আগে থেকেই অবকাঠামো ছিলো। এটা তো আগে ছিলো ইনস্টিটিউট অব পোস্ট গ্রাজুয়েট মেডিসিন অ্যান্ড রিসার্চ (আইপিজিএমআর)। স্বাধীনতার আগেই হয়েছে। তো এটার অবকাঠামো তো আগেই তৈরি। তাই এটা সহজ হয়েছে। আর অন্যগুলো তো মাত্র শুরু করলো। এটা একটু সময় হয়তো লাগছে। কারণ, বিএসএমএমইউ তো বিশ্ববিদ্যালয়ে রূপান্তর করা হয়েছে। এটা প্রতিষ্ঠিত হাসপাতাল ছিলো, তাই এটা করা সহজ হয়েছে। অন্যান্যগুলো করতে সময় লাগবে। তবে সেগুলো অবশ্যই হবে, বিএসএমএমইউ এর আদলেই হবে।

 বাংলা ইনসাইডার: বিএসএমএমইউ এবং ঢাকা মেডিক্যাল কলেজের মধ্যে পার্থক্য কি?

অধ্যাপক ডা. এ বি এম আব্দুল্লাহ: ঢাকা মেডিক্যাল কলেজ তো একটা সরকারি হাসপাতাল। আর বিএসএমএমইউ একটি স্বায়ত্তশাসিত প্রতিষ্ঠান। প্রশাসন সবকিছু আলাদা, সরকারের ওপর নির্ভরশীল নয় তো। আর এখানে মূলত পড়ানো হয় পোস্ট গ্র্যাজুয়েটদের। এমবিবিএস করার পরে স্পেশালিষ্ট এবং সুপার স্পেশালিষ্ট বিষয়গুলো এখানে হয়। এখানে এটাই প্রধান বিষয়। আর ঢাকা মেডিক্যাল কলেজে এমবিবিএস করানো হয়।



প্রধান সম্পাদকঃ সৈয়দ বোরহান কবীর
ক্রিয়েটিভ মিডিয়া লিমিটেডের অঙ্গ প্রতিষ্ঠান

বার্তা এবং বাণিজ্যিক কার্যালয়ঃ ২/৩ , ব্লক - ডি , লালমাটিয়া , ঢাকা -১২০৭
নিবন্ধিত ঠিকানাঃ বাড়ি# ৪৩ (লেভেল-৫) , রোড#১৬ নতুন (পুরাতন ২৭) , ধানমন্ডি , ঢাকা- ১২০৯
ফোনঃ +৮৮-০২৯১২৩৬৭৭