ইনসাইড টক

শুরু থেকেই আমরা একে অন্যকে নাম ধরে ডাকি: বুবলী


প্রকাশ: 04/02/2022


Thumbnail

সংবাদ পাঠিকা থেকে ঢাকাই সিনেমায় যুক্ত হয়ে কোটি দর্শকের মন জয় করে নিয়েছেন বুবলী। দেশীয় চলচ্চিত্রের শীর্ষ চাহিদাসম্পন্ন নায়ক শাকিব খানের বিপরীতে ২০১৬ সালে ঈদুল আযহায় একসঙ্গে দু`টি ছবি দিয়ে অভিষেক তার।এরপর একই নায়কের সাথে জুটি বেঁধে টানা বেশ কয়েকটি ছবিতে কাজ করেন।

বর্তমানে শাকিবের সঙ্গে নতুন কোন ছবিতে তাকে না দেখা গেলেও অন্য নায়কদের সাথে নিয়মিত কাজ করে যাচ্ছেন। সম্প্রতি ওটিটিতে মুক্তি পেয়েছে তাঁর ক্যারিয়ারের প্রথম ওয়েব ফিল্ম ‘টান’। ওয়েব ফিল্মটি প্রথমবারের মতো জুটি বেঁধেছেন নায়ক সিয়াম আহমদের সাথে। মুক্তির পর থেকেই ‘টান’ বেশ আলোচনায়। 

এদিকে গানের শুটিংয়ের মধ্য দিয়ে শেষ করলেন ‘রিভেঞ্জ’ সিনেমার শুটিং। ‘রিভেঞ্জ’ শেষে ‘বিট্রে’ যুক্ত হলেন হালের জনপ্রিয় এই নায়িকা। ‘টান’, নতুন সিনেমা  ও সমসাময়িক নান বিষয় নিয়ে বাংলা ইনসাইডারের   সাথে কথা হয় বুবলীর।   


বাংলা ইনসাইডার: ‘টান’ নিয়ে জানতে চাই...  

বুবলী: ‘টান’ আমার জন্য একটি বিশেষ প্রজেক্ট ছিলো। কেননা নতুন বছর প্রথম আমার ওটিটিতে কাজ করা, নির্মাতা রায়হান রাফির নির্দেশনায় প্রথম কাজ, এমনকি সিয়ামের সাথে প্রথম অভিনয় করা। সব কিছু মিলিয়েই বেশ ভালো ছিলো আমার‘টান’র জার্নিটা। ওয়েব ফিল্মটিতে অনেক কিছু বিবেচনা করেই যুক্ত হয়েছি। ছবির গল্প, পরিচালক ও সহশিল্পী দেখেই কাজটি করেছি। যখন কাজটির জন্য প্রস্তাব পেলাম, সবকিছু জানার পর দেখলাম ভালো কাজের সুযোগ। রাফি ভাই এ সময়ের একজন পরীক্ষিত পরিচালক। সময়ের সঙ্গে তাল মিলিয়ে ভালো ভালো কাজ দিচ্ছেন দর্শকদের। পাশাপাশি সিয়াম আহমেদও বেশ ভালো কাজ করছেন। টানও তিনি ভালো করেছেন। ভালো কাজের সাড়া পাওয়া যায়— টান তার প্রমাণ।



বাংলা ইনসাইডার: ‘টান’ নিয়ে কেমন সাড়া পাচ্ছেন? 

বুবলী: এক কথায় অসাধারণ রেসপন্স পাচ্ছি। বিনোদন অঙ্গনের অনেক পরিচিতজনই তাঁদের ভালো লাগার কথা ফোনে জানাচ্ছেন। ফেসবুকেও অনেকে এই চলচ্চিত্রে আমার অভিনয় নিয়ে কথা বলছেন। যেখানেই যাচ্ছি, ‘টান’ নিয়ে কথা। ফেসবুকে নানা রকমের মন্তব্যে আমি রীতিমতো অনুপ্রাণিত। ভালো লাগার অনুভূতি কাজ করছে। শুধু তাই নয় যখন দেখছি অনেক সিনিয়র শিল্পীরা ফেসবুকে তাদের ভালো লাগার কথা জানাচ্ছেন তখন ভালো কাজ করার আগ্রহটা আরও বেড়ে যাচ্ছে। শুনে অবাক হবেন যে শুধু দেশে নয় দেশের বাইরে থেকেও অনেকেই আমাদের কাজ নিয়ে প্রশংসা করছেন। মোট কথা আমাদের প্রত্যাশার চেয়ে বেশী সাড়া পাচ্ছি। 

বাংলা ইনসাইডার: সিয়াম আহমেদের সাথে রসায়নটা কেমন ছিলো? 

বুবলী: সিয়ামের সাথে আমার আগে তেমন পরিচিতি ছিলো না। হয়তো কেন এওয়ার্ড অনুষ্ঠানে গেলে তাঁর সাথে দেখা হতো কিন্তু কখনো কথা হয়নি। সিয়ামের সঙ্গে আমার প্রথম কাজ। কাজ শুরুর আগে একটু চিন্তায় ছিলাম— প্রথম দিন তার সঙ্গে কাজ করতে গিয়ে একটু অস্বস্তি লাগছিল। যে কারোর সঙ্গেই প্রথম কাজ করতে ভয়, অস্বস্তি লাগে। কাজ করতে গিয়ে দেখলাম সহশিল্পীকে উত্সাহ দেয়ার চেষ্টা করেন, ভালো কাজে উত্সাহিত করেন তিনি। যা বর্তমান সময়ে একজন সহশিল্পী হিসেবে খুবই গুরুত্বপূর্ণ। শুধু তাই নয় শুটিংয়ের শুরু দিন থেকেই আমরা একে অন্যকে চরিত্রের নাম ধরে ডেকেছি। শুধু সিয়াম নয় পুরো টিম আমাদের অবনী ও রাশেদ বলে সম্বোধন করেছে। আমি এখনো সেই অবনী হয়েই আছি। আর হ্যাঁ সিয়াম সত্যিই বেশ মজার মানুষ। সব মিলিয়ে প্রথম কাজ করে খুবই আনন্দ পেয়েছি।


বাংলা ইনসাইডার: ওটিটির বিভিন্ন কনটেন্টেই দেখা যায় গালি দিয়ে কথা বলা। বিষয়টি একজন শিল্পী হিসেবে আপনি কিভাবে দেখছেন? 

বুবলী: আসলে বিশ্ব অনেক এগিয়ে গিয়েছে। সময়ের সাথে তাল মিলিয়ে চরিত্রের পাশাপাশি ডায়লগ গুলিও সাজানো হয়। যদিও অনেক সময় সেই বাজে গালি গুলোকে মিউট করে দেয়া হয়। আবার অনেক সময় হয়তো সব কিছু মিলিয়ে পরিপূর্ণতা দেয়ার জন্য রো দেয়া হয়। তবে হ্যাঁ এটি আমাদের সংস্কৃতির সাথে যায় না। তাই আমি বলবো যতটুকু শালীনতার মাঝে রেখে করা যায় ততোই ভালো। 

বাংলা ইনসাইডার: বর্তমানে বাংলাদেশে ওটিটির ভবিষ্যৎ কেমন হবে বলে আপনি মনে করেন?

বুবলী: সারা পৃথিবীতে আজ ওটিটি মাধ্যম বেশ জনপ্রিয় হয়ে উঠেছে। বড়, বড় বাজেটের অনেক চলচ্চিত্র অনলাইনে মুক্তি পাচ্ছে। তবে বাংলাদেশে করোনার সময় ওটিটি মাধ্যম বেশ জনপ্রিয় হয়েছে। করোনায় মানুষ বাইরে যেতে পারেনি, সেক্ষেত্রে ঘরে বসেই তাঁরা অনা লাইন মাধ্যমেই ওয়েব সিরিজ, ওয়েব ফিল্ম উপভোগ করেছে। পাশাপাশি আমাদের দেশে এখন হলের সংখ্যা অনেক কমে গেছে। শুধু তাই নয় মানুষ এখন হল বিমুখ। তাই আমি বলবো বাংলাদেশে ওটিটি মাধ্যম অল্প কিছুদিনের মাঝেই আরও বেশী জনপ্রিয় হয়ে উঠবে। তাঁর মানে এই না যে হলে দর্শক যাবে না! বড় পর্দায় সিনেমা দেখে যে তৃপ্তি তা ওটিটি মাধ্যমে নাই। সুতরাং হলেও পাশাপাশি দর্শক অনলাইন মাধ্যমেও থাকবে। 

ওটিটি ব্যবসা বেশ চ্যালেঞ্জিং কারণ প্রেক্ষাগৃহে মানুষ সিনেমা হলে গেলে টানা দেখে শেষ করে আসে। কিন্তু অনলাইনে ছবি দেখায় সময় অনেক কাজই তারা করেন। যা মনোযোগের বিগ্ন ঘটায়। পাশাপাশি অনেকেই ওটিটি থেকে সিনেমাটি ডাউনলোড করে বিভিন্ন মাধ্যমে ছড়িয়ে দেয়। যাকে আমরা পাইরেসি বলি। যার ফলে ক্ষতিগ্রস্ত হচ্ছে অনেকেই। আর তাই বেশ চ্যালেঞ্জ নিয়েই ওটিটিকে কাজ করতে হয়।

বাংলা ইনসাইডার: নতুন বছর বেশ ব্যস্ততার মাঝে কাটছে আপনার শুটিং নিয়ে।  কেমন উপভোগ করছেন?

বুবলী: অবশ্যই বেশ ভালো কেননা বছরের শুরুতেই ‘টান’ নিয়ে দর্শকদের কাছ থেকে যেমন সাড়া পাচ্ছি তা সত্যই অবাক করার মতো। নতুন দুইটি কাজ করছি। যেখানে সবার সাথেই দেখা সাক্ষাৎ হচ্ছে। করোনার কারণে তো সবাই এক প্রকার দূরেই ছিলাম! কাজও বন্ধ ছিলো। এখন সবাই আবার কাজে ফিরেছি। বেশ ভালোই লাগছে। 


বাংলা ইনসাইডার: রোশানের সাথে তৃতীয়বারের মত জুটি বেধেছেন? কো আর্টিস্ট হিসেবে কেমন?

বুবলী: আমার পর পর কয়েকটি সিনেমার হিরো হিসেবে কাজ করছে রোশান। রোশান সব সময় ভালো করার চেষ্টা করছে। আমার দুইটি ছবি একটি ‘রিভেঞ্জ’ ও অন্যটি ‘বিট্রে’ দুইটিই অ্যাকশন ধর্মী সিনেমা। ‘রিভেঞ্জ’এ রোশান অসাধারণ করেছে। আশাকরি ‘বিট্রে’তেও ভালো করবে। 


বাংলা ইনসাইডার: দর্শকদের উদ্দেশ্যে কিছু বলুন...

বুবলী: দর্শদের ভালোবাসায় আজ আমি এই অবস্থানে। তাঁরা আমাকে কতটুকু ভালোবাসে তা ‘টান’র সাড়া দেখেই বোঝা যাচ্ছে। তবে দর্শদের কাছে আমার অনুরোধ থাকবে আমাদের শিল্পকে বাঁচাতে হলে আপনাদের এগিয়ে আসতে হবে। ওটিটিতে কোন কিছু মুক্তি পেলে তা পাইরেটেড কপি না দেখে অরিজিনাল লিংকে দেখেন। এত আমাদের পাশাপাশি প্রযোজকরাও বাঁচবেন, ভালো কনটেন্টও তৈরি করা সম্ভব হবে।


প্রধান সম্পাদকঃ সৈয়দ বোরহান কবীর
ক্রিয়েটিভ মিডিয়া লিমিটেডের অঙ্গ প্রতিষ্ঠান

বার্তা এবং বাণিজ্যিক কার্যালয়ঃ ২/৩ , ব্লক - ডি , লালমাটিয়া , ঢাকা -১২০৭
নিবন্ধিত ঠিকানাঃ বাড়ি# ৪৩ (লেভেল-৫) , রোড#১৬ নতুন (পুরাতন ২৭) , ধানমন্ডি , ঢাকা- ১২০৯
ফোনঃ +৮৮-০২৯১২৩৬৭৭