ইনসাইড পলিটিক্স

বেগম জিয়ার চিকিৎসার ব্যয় কে দিলো: ফালু না তারেক?


প্রকাশ: 05/02/2022


Thumbnail

তিন দফা বেগম খালেদা জিয়া হাসপাতালে ছিলেন। এই তিন দফায় তার চিকিৎসা ব্যয় হয়েছে প্রায় ৫ কোটি টাকার কাছাকাছি। বেগম খালেদা জিয়ার চিকিৎসার ব্যয় কারা দিয়েছে, এ নিয়ে বিএনপিতে তোলপাড় চলছে। যদিও এভারকেয়ার হাসপাতালের পক্ষ থেকে বলা হচ্ছে যে, তার আত্মীয়-স্বজনরাই এই বিল পরিশোধ করেছেন। কিন্তু বিভিন্ন সূত্র থেকে প্রাপ্ত খবরে জানা গেছে যে, বেগম খালেদা জিয়ার চিকিৎসার ব্যয় তার একমাত্র জীবিত পুত্র তারেক জিয়া এক টাকাও খরচ করেননি। পুরো টাকা দিয়েছেন মোসাদ্দেক আলী ফালু। বর্তমানে মোসাদ্দেক আলী ফালু সৌদি আরবে অবস্থান করছেন, সেখান থেকে তিনি টাকা পাঠানোর ব্যবস্থা করেছেন। বিএনপির একাধিক দায়িত্বশীল সূত্র এ তথ্য নিশ্চিত করেছে।

বেগম খালেদা জিয়া প্রথম দফায় হাসপাতালে ভর্তি হয়েছিলেন এপ্রিলে, সেখানে ৫৩ দিন ছিলেন। এ সময় তার চিকিৎসা ব্যয় হয়েছিল ৮৫ লাখ টাকা। দ্বিতীয় দফায় বেগম খালেদা জিয়া ২৬ দিন হাসপাতালে ছিলেন, এসময় তার চিকিৎসার ব্যয় হয়েছে ১ কোটি ৫৮ লাখ টাকা। তৃতীয় দফায় গত ১৩ নভেম্বর বেগম খালেদা জিয়া হাসপাতালে ভর্তি হন, এই সময়ে তিনি মোট ৮১ দিন ছিলেন। তার চিকিৎসা ব্যয় হয়েছে ২ কোটি ১৬ লাখ টাকা। এত বিপুল পরিমাণ চিকিৎসা ব্যয় কে দিলো, এ নিয়ে প্রশ্ন উঠেছে। যেহেতু বেগম জিয়া ফৌজধারী কার্যবিধির ৪০১ ধারা অনুযায়ী সরকারি নির্বাহী আদেশে জামিনে মুক্ত রয়েছেন। কাজেই, জামিনে থাকা একজন ব্যক্তির চিকিৎসা ব্যয় বহন করবে ওই ব্যক্তি নিজে। এখানে সরকারি চিকিৎসা ব্যয়ের কোনো সুযোগ নেই। যখন একজন দণ্ডিত ব্যক্তি সরকারের হেফাজতে থাকবেন তখনই কেবল সরকার তাঁর চিকিৎসা ব্যয় বহন করবেন।

যেহেতু বেগম খালেদা জিয়া ২০২০ সালের ২৪ মার্চ থেকে বিশেষ বিবেচনায় জামিনে আছেন, সেজন্য তার চিকিৎসার যাবতীয় ব্যয় তাকেই বহন করতে হবে। তিনি এভারকেয়ার হাসপাতালে ভর্তি হওয়ার পর থেকেই তার চিকিৎসা ব্যয় কে দিবে, এ নিয়ে টানাপোড়েন তৈরি হয়। তার ভাই শামীম এস্কান্দার প্রথমদিকে কিছু চিকিৎসার টুকটাক খরচ দিলেও একপর্যায়ে চিকিৎসা ব্যয় কে দিবে এ নিয়ে প্রশ্ন ওঠে। এ সময়ে লন্ডনে পলাতক বিএনপির ভারপ্রাপ্ত চেয়ারম্যান বিএনপি নেতা আবদুল আউয়াল মিন্টুকে চিকিৎসা ব্যয় পরিশোধের জন্য নির্দেশ দিয়েছিলেন। কিন্তু আবদুল আউয়াল মিন্টু চিকিৎসা ব্যয় প্রদানের ক্ষেত্রে গড়িমসি করেছেন বলে বিএনপির একাধিক সূত্র নিশ্চিত করেছেন। এরকম পরিস্থিতিতে সৌদি আরবে থাকা মোসাদ্দেক আলী ফালু বেগম জিয়ার চিকিৎসার ব্যয় বহনে এগিয়ে আসেন। মোসাদ্দেক আলী ফালুর বাংলাদেশে একাধিক ব্যবসা প্রতিষ্ঠান রয়েছে এবং এ সমস্ত প্রতিষ্ঠান থেকেই এই ব্যয় বহন করা হয়েছে।

একাধিক সূত্র নিশ্চিত করেছে যে, মোসাদ্দেক আলী ফালুর ব্যবসাপ্রতিষ্ঠান থেকে শামীম এস্কান্দারকে টাকা দেয়া হয়েছে এবং শামীম এস্কান্দার এই টাকা এভারকেয়ার হাসপাতালকে দিয়েছেন। এভারকেয়ার হাসপাতালের একজন ঊর্ধ্বতন কর্মকর্তা নাম প্রকাশ না করার শর্তে বলেছেন যে, প্রথমদিকে বেগম খালেদা জিয়ার চিকিৎসা নিয়ে কিছু টানাপোড়েন হচ্ছিল। চিকিৎসা ব্যয় বাকি পড়ছিলো। কিন্তু এভারকেয়ার হাসপাতালের নীতি অনুযায়ী বিল বকেয়া হলেই তার চিকিৎসা বন্ধ হয়ে যায়, কিন্তু পরবর্তীতে তা ঠিকঠাক হয়ে যায় এবং সর্বশেষ বেগম খালেদা জিয়াকে ডিসচার্জের আগে এককালীন ২৩ লক্ষ টাকা পরিশোধ করে তাকে ফিরোজা নিয়ে যাওয়া হয়েছে। এছাড়াও এখন এভারকেয়ার হাসপাতালের একজন চিকিৎসক তার বিষয়ে সার্বক্ষণিক যোগাযোগ করছেন। তারেক জিয়া বিভিন্ন সময়ে নির্বাচন মনোনয়ন বাণিজ্য এবং কমিটি বাণিজ্য করে বিপুল অঙ্কের টাকা নিয়েছেন এবং লন্ডনে তিনি বিলাসবহুল জীবনযাপন করেন। এরকম একজন পুত্র থাকার পরও বেগম খালেদা চিকিৎসার জন্য তিনি কেন এক টাকাও ব্যয় করলেন না এ নিয়ে বিএনপির মধ্যেই তারেক জিয়া ধিক্কৃত হতে শুরু করেছেন।


প্রধান সম্পাদকঃ সৈয়দ বোরহান কবীর
ক্রিয়েটিভ মিডিয়া লিমিটেডের অঙ্গ প্রতিষ্ঠান

বার্তা এবং বাণিজ্যিক কার্যালয়ঃ ২/৩ , ব্লক - ডি , লালমাটিয়া , ঢাকা -১২০৭
নিবন্ধিত ঠিকানাঃ বাড়ি# ৪৩ (লেভেল-৫) , রোড#১৬ নতুন (পুরাতন ২৭) , ধানমন্ডি , ঢাকা- ১২০৯
ফোনঃ +৮৮-০২৯১২৩৬৭৭