কালার ইনসাইড

নির্বাচন করারই কী দরকার ছিলো?


প্রকাশ: 06/02/2022


Thumbnail

নানা আলোচনা-সমালোচনা, অভিযোগের মধ্য দিয়ে শেষ হয়েছে শিল্পী সমিতির ২০২২-২৪ মেয়াদের দ্বিবার্ষিক নির্বাচন। এবারের নির্বাচনে সভাপতি পদে জিতেছেন বরেণ্য অভিনেতা ইলিয়াস কাঞ্চন ও সাধারণ সম্পাদক পদে জিতেছেন চিত্রনায়ক জায়েদ খান। নির্বাচন শেষ হলেও যেন এর রেশ করেই গেছে।

তৃতীয়বারের মত সাধারণ সম্পাদক পদে জয়লাভ করা নায়ক জায়েদ খানকে নিয়ে যেন আলোচনা-সমালোচনা থামছেই না। প্রতিদিনই নতুন নতুন তথ্য আসছে সামনে। সবকিছু মিলিয়ে যেন জাতীয় নির্বাচনকেও হার মানাচ্ছে এবারের চলচ্চিত্র শিল্পী সমিতির নির্বাচন। বাংলাদেশ চলচ্চিত্র শিল্পী সমিতির নির্বাচন নিয়ে থামছেই না আলোচনা-সমালোচনা ৷

শনিবার (৫ ফেব্রুয়ারি) বিকাল চারটায় আপিল বোর্ড মিটিং ডেকেছিলেন। সমাজকল্যাণ মন্ত্রণালয়ের নির্দেশে এই মিটিংয়ের দায়িত্ব পালন করছেন আপিল বোর্ডের চেয়ারম্যান সোহানুর রহমান সোহান।

মিটিংয়ে উপস্থিত থাকতে বলা হয়েছিলো অভিযোগকারী নিপুণ, অভিযুক্ত জায়েদ খান, চুন্নু, সমিতির নতুন সভাপতি ইলিয়াস কাঞ্চন ও দুই নির্বাচন কমিশনারকে। নিপুণ ইলিয়াস কাঞ্চনসহ অনেকেই উপস্থিত থাকলেও ছিলেন না জায়েদ খান ও দুই নির্বাচন কমিশনার। আর এরপর অভিযোগকারী নিপুণের সাথে বৈঠক করে আপিল বিভাগের প্রধান চলচ্চিত্র পরিচালক সোহানুর রহমান সোহান। নির্বাচনী আচরণবিধি না মানায় জায়েদ খানের সাধারণ সম্পাদক পদ বাতিল করেন। পাশাপাশি তার পরিবর্তে বিনা প্রতিদ্বন্দ্বিতায় নিপুণকে জয়ী ঘোষণা করেন। নিপুণকে জয়ী ঘোষণা করার পর যেমন উচ্ছ্বাস দেখা গিয়েছে চলচ্চিত্র শিল্পীদের মাঝে, ঠিক তেমনি নানা প্রশ্নও উঠেছে আপিল বোর্ডের এই সিদ্ধান্তকে নিয়ে।

অনেকেই বলছেন, জাতীয় পর্যায়ে কোন নির্বাচনেও কখনো এমনটি দেখা যায়নি। পাশাপাশি আপিল বোর্ড এই  সিদ্ধান্ত দেয়ার ক্ষমতা রাখে না। শুধু তাই নয় এক পক্ষের কথা শুনে আপিল বোর্ডের চেয়ারম্যান সোহানুর রহমান সোহানের নিপুণকে জয়ী ঘোষণা করাও কোনো নিয়মের মাঝে পড়ে না বলে তারা মনে করেন। যদি সিদ্ধান্ত নিতেই হয়, তাহলে দুই পক্ষের কথা শুনেই একটি সিদ্ধান্তে যেতে হবে।

এদিকে, আপিল বোর্ডকেই অবৈধ বলে উল্লেখ করে চলচ্চিত্র শিল্পী সমিতির নির্বাচনের প্রধান নির্বাচন কমিশনার পীরজাদা শহীদুল হারুন বলেন, নির্বাচনের তফসিল অনুযায়ী আপিল বোর্ড এখন মৃত। এই বোর্ড কোনো রায় দেওয়ার ক্ষমতা রাখেন না।

যোগ করে তিনি বলেন, সকল নির্বাচনের সময় একটা তফসিল ঘোষণা করা হয়, যেটি কখনো পরিবর্তন করা যায় না৷ এই তফসিলে বলা আছে যে, ২৯ তারিখ আপিল করা যাবে ১০টা থেকে ১টার মধ্যে। এরপর একইদিন বিকাল ৫টার মধ্যে ফলাফল ঘোষণা করতে হবে। আপিল বোর্ডে আগের ফলাফলই বহাল রাখা হয়। এই ঘোষণার পরপরই আপিল বোর্ড বলে ২০২২-২০২৪ মেয়াদে আর কোনো বোর্ড শিল্পী সমিতিতে থাকবে না। তারপর ৩০ জানুয়ারি নির্বাচন কমিশন চূড়ান্ত ফলাফল ঘোষণা করে৷ এরপর নির্বাচন কমিশনেরও দায়িত্ব শেষ হয়ে যায়। এরপর কোনো রায় দেওয়ার সুযোগ নেই। ৫ তারিখ তো প্রশ্নই উঠে না।

এদিকে আপিল বোর্ডের চেয়ারম্যান সোহানুর রহমান সোহান জানান, সরকারের নির্দেশেই তথা সমাজকল্যাণ মন্ত্রণালয়ের নির্দেশেই তিনি এ সিদ্ধান্ত নিয়েছেন। তাঁর এ কথার সূত্র ধরেই বলা যায়, সমাজকল্যাণ মন্ত্রণালয় কি আইন বিষয়ে ধারণা রাখে না? মেয়াদ শেষ হওয়ার পর আপিল বিভাগ কিভাবে একজনের প্রার্থীতা বাদ দিয়ে অন্যজনকে বিজয়ী ঘোষণা করেন?

অনেকেই বলছেন, সমাজকল্যাণ মন্ত্রণালয় ও আপিল বোর্ডের চেয়ারম্যান সোহানুর রহমান সোহান নানা ভাবে প্রভাবিত হয়েই এই সিদ্ধান্ত নিয়েছেন। এখন প্রশ্ন উঠছে কে বা কারা তাঁদের প্রভাবিত করেছেন? অনেকেই মনে করছেন, এই রায়ের পিছনে চলচ্চিত্র শিল্পী সমিতির বাহিরে একটি রাজনৈতিক প্রভাবও রয়েছে।

চলচ্চিত্র সংশ্লিষ্ট অনেকেই বলছেন, নির্বাচন হয়ে যাওয়ার পর নিপুণ আপিল করে ফের ভোট গণনা করেন। দ্বিতীয়বার ভোট গণনার পর তিনি আবারও পরাজিত হন এবং তা মেনে নিয়ে কাগজে স্বাক্ষরও করেন। তাহলে, এখন আবার কিভাবে তিনি আপিল বোর্ডের মাধ্যমে জয়ী হন? আর এত নাটকই বা কেন করা হচ্ছে? নির্বাচন করারই কি দরকার ছিলো? একেবারে নিপুণকে শুরুতেই বিজয়ী ঘোষণা করলেই হতো!


প্রধান সম্পাদকঃ সৈয়দ বোরহান কবীর
ক্রিয়েটিভ মিডিয়া লিমিটেডের অঙ্গ প্রতিষ্ঠান

বার্তা এবং বাণিজ্যিক কার্যালয়ঃ ২/৩ , ব্লক - ডি , লালমাটিয়া , ঢাকা -১২০৭
নিবন্ধিত ঠিকানাঃ বাড়ি# ৪৩ (লেভেল-৫) , রোড#১৬ নতুন (পুরাতন ২৭) , ধানমন্ডি , ঢাকা- ১২০৯
ফোনঃ +৮৮-০২৯১২৩৬৭৭