ইনসাইড পলিটিক্স

সশস্ত্র বাহিনীর বিরুদ্ধে বিএনপির অপতৎপরতা


প্রকাশ: 08/02/2022


Thumbnail

একটি রাষ্ট্রে বিভিন্ন রাজনৈতিক দল থাকে। রাজনৈতিক দলগুলোর মধ্যে নীতি আদর্শ কৌশল নিয়ে নানা রকম বিতর্ক থাকে, পক্ষে বিপক্ষে মতও থাকে। একটি রাজনৈতিক দল ক্ষমতায় যাওয়ার জন্যে বিরোধী পক্ষের সমালোচনা করে এবং তাদের নীতি-আদর্শ কতটুকু জনকল্যাণমুখী সেটি বলার চেষ্টা করে। ঠিক একইভাবে বিভিন্ন রাজনৈতিক দল নির্বাচনের মাধ্যমে অন্যকে পরাস্ত করে ক্ষমতায় আসতে চায়। কিন্তু ভিন্ন ভিন্ন চিন্তা, মতবাদ থাকলেও কতগুলো মৌলিক বিষয়ে রাজনৈতিক দলগুলোকে একমত থাকতেই হয়। রাষ্ট্রের প্রয়োজনে, সার্বভৌমত্বের প্রয়োজনে এবং সংবিধানের প্রয়োজনে। রাষ্ট্রের কিছু কিছু গুরুত্বপূর্ণ বিষয় আছে, যেগুলো অভিন্ন সত্তা এবং যেগুলো আমাদের অখণ্ডতা সার্বভৌমত্বের প্রতীক।

একটি দেশের সশস্ত্র বাহিনী হল রাষ্ট্রের সেই রকম গুরুত্বপূর্ণ একটি অংশ। বিশেষ করে বাংলাদেশের সশস্ত্র বাহিনী ১৯৭১ সালের মুক্তিযুদ্ধের মধ্যে দিয়ে গঠিত। আমাদের সশস্ত্র বাহিনী আমাদের ঐক্যের প্রতীক, আমাদের সার্বভৌমত্বের প্রতীক এবং আমাদের দেশকে বহিঃশত্রুর আক্রমণ থেকে রক্ষার প্রধান ভূমিকা পালন করে। সেই সশস্ত্র বাহিনীকে বিতর্কিত করা, সশস্ত্র বাহিনীর বিরুদ্ধে অবস্থান নেয়া কোন রাজনৈতিক দলের কাজই হতে পারে না। যদি কোনা রাজনৈতিক দল এ ধরনের কাজ করে সেই রাজনৈতিক দল সরাসরিভাবে রাষ্ট্রদ্রোহী। কিন্তু সাম্প্রতিক সময় বাংলাদেশের অন্যমত প্রধান বিরোধী দল বিএনপি সরাসরি সশস্ত্র বাহিনীর বিরুদ্ধে অবস্থান নিয়েছেন বলে অভিযোগ পাওয়া গেছে। সাম্প্রতিক সময় মির্জা ফখরুল ইসলাম আলমগীর বিভিন্ন কংগ্রেসম্যানের কাছে যে চিঠি লিখেছেন, সে চিঠিতে পরোক্ষভাবে বাংলাদেশের আইনশৃঙ্খলা রক্ষাকারী বাহিনী এবং সশস্ত্র বাহিনী সম্পর্কে নেতিবাচক মন্তব্য করা হয়েছে। মানবাধিকার লঙ্ঘনের অভিযোগ করা হয়েছে, যে অভিযোগের জন্য র‍্যাব এবং র‍্যাবের সংশ্লিষ্ট কর্মকর্তাদের অভিযুক্ত করা হয়েছে।

উল্লেখ্য যে, র‍্যাবে বাংলাদেশ সশস্ত্র বাহিনীর বেশকিছু কর্মকর্তা প্রেষণে কাজ করেন। তবে সাম্প্রতিক সময় আরও ভয়াবহ তথ্য পাওয়া গেছে মার্কিন যুক্তরাষ্ট্রে। সেখানে বিভিন্ন কংগ্রেসম্যানের কাছে বিএনপির পক্ষ থেকে চিঠি দেয়া হয়েছে, যেখানে জাতিসংঘের শান্তি রক্ষা মিশনে র‍্যাব এবং মানবাধিকার লঙ্ঘনকারী সশস্ত্র বাহিনীর কর্মকর্তাদের নিষিদ্ধ করার দাবী জানানো হয়েছে। এটি ভয়ংকর রাষ্ট্রদ্রোহিতা বলে মনে করা হচ্ছে। বিএনপির পক্ষ থেকে তারেক জিয়ার স্বাক্ষরে এই চিঠিগুলো দেয়া হয়েছে বিভিন্ন কংগ্রেসম্যানকে। যখন অ্যামনেস্টি ইন্টারন্যাশনাল, হিউম্যান রাইটস ওয়াচ সহ ১২ টি সংগঠন র‍্যাবকে নিষিদ্ধ করার জন্য জাতিসংঘে চিঠি দিয়েছে। তার পরপরই বিএনপির পক্ষ থেকে মার্কিন কংগ্রেসের বিভিন্ন ব্যক্তির কাছে এ ধরনের চিঠি দেয়ার ঘটনাকে ভয়াবহ বলে উল্লেখ করেছে কূটনৈতিক মহল। একটি দেশের সার্বভৌমত্বের প্রতীক সশস্ত্র বাহিনীর বিরুদ্ধে কিভাবে একটি রাজনৈতিক দল অবস্থান গ্রহণ করে সেটি নিয়ে প্রশ্ন উঠেছে।

বিএনপির একাধিক সূত্র বলছে যে, বিএনপি এখন বাংলাদেশের সশস্ত্র বাহিনীর বিরুদ্ধে রীতিমত যুদ্ধ ঘোষণা করেছে। তারা আন্তর্জাতিক বিভিন্ন পরিমণ্ডলে লবিস্ট নিয়োগ করেছে এবং লবিং করছে এইভাবে যেন জাতিসংঘের শান্তি রক্ষা মিশনে বাংলাদেশের সশস্ত্র বাহিনীর বিরুদ্ধে কোনরকম নিষেধাজ্ঞা আরোপ করা হয়। বিএনপি মনে করছে, এরকম ঘটনা ঘটলে সেটির ফলাফল তারা নেবে এবং এতে তাদের ক্ষমতায় আশার পথ সুগম হবে। কিন্তু একটি রাজনৈতিক দল ক্ষমতায় যাওয়ার জন্য দেশের সবচেয়ে গুরুত্বপূর্ণ একটি বাহিনীর বিরুদ্ধে কিভাবে নিরন্তর মিথ্যা অভিযোগ করতে পারে, সেটি একটি গুরুত্বপূর্ণ প্রশ্ন। আর এই ধরনের ঘটনার কারণে বিএনপির কেন বিচার হবে না, সে নিয়েও প্রশ্ন উঠেছে। কারণ এটি একটি রাজনৈতিক দল সরকারের সমালোচনা করতে পারে, রাজনৈতিক দলে সমালোচনা করতে পারে কিন্তু দেশের ঐক্যের প্রতীক সশস্ত্র বাহিনীর বিরুদ্ধে অবস্থান নিতে পারে না। এ ধরনের অবস্থান নেয়ার কারণে বিএনপিকে অবশ্যই আইনেও আওতায় আনা উচিৎ বলে কেউ কেউ মনে করছেন।


প্রধান সম্পাদকঃ সৈয়দ বোরহান কবীর
ক্রিয়েটিভ মিডিয়া লিমিটেডের অঙ্গ প্রতিষ্ঠান

বার্তা এবং বাণিজ্যিক কার্যালয়ঃ ২/৩ , ব্লক - ডি , লালমাটিয়া , ঢাকা -১২০৭
নিবন্ধিত ঠিকানাঃ বাড়ি# ৪৩ (লেভেল-৫) , রোড#১৬ নতুন (পুরাতন ২৭) , ধানমন্ডি , ঢাকা- ১২০৯
ফোনঃ +৮৮-০২৯১২৩৬৭৭