ইনসাইড পলিটিক্স

ইসি গঠনে রাজনৈতিক দলগুলোর আস্থার সংকট কি বাড়ছে?


প্রকাশ: 09/02/2022


Thumbnail

আগামী জাতীয় নির্বাচনের কারণে গঠিত হতে যাওয়া নতুন নির্বাচন কমিশন নিয়ে রাজনৈতিক দলগুলোর মধ্যে ব্যাপক আগ্রহ রয়েছে। নির্বাচনকে সবার কাছে সুষ্ঠু, নিরপেক্ষ ও গ্রহণযোগ্য করতে নির্বাচন কমিশনের গ্রহণযোগ্যতা অত্যাবশ্যক। এই গ্রহণযোগ্যতা শুধু রাজনৈতিক দলগুলোর কাছেই নয়, বরং সকলের কাছেই গ্রহণযোগ্য হয়ে ওঠতে হবে। কিন্তু বাংলাদেশের বিগত দুইটি নির্বাচন কমিশন নিয়ে অনেকেরই প্রশ্ন আছে, অভিযোগ আছে। এর সূত্র ধরেই ২০১৮ সালের জাতীয় নির্বাচনকে প্রশ্নবিদ্ধ করার চেষ্টা করে বিএনপিসহ বিরোধী রাজনৈতিক দলগুলো। এরকম বাস্তবতায় রাজনৈতিক বিশ্লেষকরা আগামী জাতীয় নির্বাচন সুষ্ঠু, নিরপেক্ষ ও গ্রহণযোগ্য করতে নিরপেক্ষ নির্বাচন কমিশন গঠনের কোনো বিকল্প নেই বলেই মনে করছেন। কিন্তু নির্বাচন কমিশন গঠন এবং নির্বাচন নিয়ে বিশেষ করে বিরোধী রাজনৈতিক দলগুলোর মধ্যে গভীর থেকে গভীরতর আস্থার সংকট দেখা যাচ্ছে। এ আস্থার সংকট আগামী জাতীয় নির্বাচন প্রভাব ফেলবে কিনা, সে নিয়ে অনেকের মনেই নানা প্রশ্ন দেখা দিয়েছে।

স্বাধীনতার ৫০ বছর পর এই প্রথম আইনের আলোকে গঠিত হতে যাচ্ছে নির্বাচন কমিশন। সাংবিধানিক বাধ্যবাধকতা থাকলেও এতদিন কোনো সরকারই আইনটি প্রণয়ন করেনি। নির্বাচন কমিশনকে সামনে রেখে রাষ্ট্রপতি বিভিন্ন রাজনৈতিক দলের সাথে সংলাপ করেন। সেই সংলাপে অধিকাংশ দলই নির্বাচন কমিশন গঠনে আইনের কথা বলেছিলেন। সেই প্রেক্ষিতে এবার আইনটি প্রণয়ন হয়। এরপর গত ২৭ জানুয়ারি সংসদে আইনটি পাস হওয়ার ১০ দিনের মাথায় আইন অনুযায়ী বিচারপতি ওবায়দুল হাসানকে প্রধান করে ৬ সদস্যের সার্চ কমিটি গঠন করা হয়। সার্চ কমিটি আগামী ১০ ফেব্রুয়ারির মধ্যে নিবন্ধিত রাজনৈতিক দলগুলোর কাছ থেকে তাদের প্রস্তাবনা চেয়েছে। চাইলে যে কেউ নিজেদের প্রস্তাব দিতে পারবে সার্চ কমিটির কাছে। কমিটি সুশীল সমাজের প্রতিনিধি, গণমাধ্যম প্রতিনিধি এবং বিশেষজ্ঞদের সাথে বৈঠক করবেন।

কিন্তু আইনটি হওয়ার উদ্যোগের শুরু থেকেই বিএনপিসহ বিরোধী দলগুলো এ আইনের বিরোধিতা করে আসছে। দলটি আইনের বিরোধিতা করলেও আইনটি কিভাবে করা উচিত ছিল, তা নিয়েও কোনো সুনির্দিষ্ট প্রস্তাবনা দেয়নি, যদিও দলটির কয়েকজন সাংসদ আইন সংশোধনের প্রস্তাব দিয়েছিলো। দলটির নেতারা এখন নির্বাচন কমিশনের চেয়ে নির্বাচনকালীন সরকার নিয়ে বেশি চিন্তিত। এর পাশাপাশি দলটির নেতারা বলছেন যে, তারা সার্চ কমিটির কাছে নাম প্রস্তাব করবে না। বিএনপির এই অনড় অবস্থানের কারণে অনেক রাজনৈতিক বিশ্লেষকই মনে করছেন, এবার নির্বাচন কমিশন গঠনে কোনো সমঝোতা হচ্ছে না এবং তার ফলে রাজনৈতিক জটিলতাও মিটছে না। অচলাবস্থা নিয়েই আমরা পরবর্তী নির্বাচনের দিকে এগিয়ে যাচ্ছি বলে মনে করছেন বিশ্লেষকরা এবং এ ক্ষেত্রে তারা বড় দুই দলের আস্থার সংকটকেই প্রধান কারণ হিসেবে চিহ্নিত করছেন।

রাজনৈতিক বিশ্লেষকরা বলছেন, সরকার সহযোগিতার মানসিকতা নিয়ে চললে আইনে নির্বাচন কমিশনের যথেষ্ট ক্ষমতা রয়েছে। সংবিধানে এবং আইনে নির্বাচন কমিশনকে যে ক্ষমতা দেয়া আছে, তাতে তারা কিন্তু একদমই সুষ্ঠু ও ভাল নির্বাচন করতে পারে। এখন আমাদের দরকার মেরুদণ্ড ওয়ালা লোকদের খুঁজে বের করে নির্বাচন কমিশনে নিয়োগ দেওয়া। বিরোধী দলগুলো যদি দেখে যে মেরুদণ্ড ওয়ালা লোকেরা নির্বাচন কমিশনে নিয়োগ পেয়েছে, তাহলে আপনা-আপনিই তাদের হুলুস্থুল মিইয়ে যাবে। কিন্তু যদি পক্ষপাতদুষ্ট লোকদের নিয়োগ দেওয়া হয়, তাহলে আস্থার সংকট আরও বাড়বে বলে মনে করেন বিশ্লেষকরা।


প্রধান সম্পাদকঃ সৈয়দ বোরহান কবীর
ক্রিয়েটিভ মিডিয়া লিমিটেডের অঙ্গ প্রতিষ্ঠান

বার্তা এবং বাণিজ্যিক কার্যালয়ঃ ২/৩ , ব্লক - ডি , লালমাটিয়া , ঢাকা -১২০৭
নিবন্ধিত ঠিকানাঃ বাড়ি# ৪৩ (লেভেল-৫) , রোড#১৬ নতুন (পুরাতন ২৭) , ধানমন্ডি , ঢাকা- ১২০৯
ফোনঃ +৮৮-০২৯১২৩৬৭৭