সকাল থেকেই আকাশে আজ মেঘের ঘনঘটা। জীবিকার জন্য যারা ঘরের বাইরে বেরিয়েছেন, হলপ করেই বলতে পারি ঘড়ির দিকে একবার হলেও তাকিয়েছেন। পাছে না ভুল হয়ে যায় এখন সকাল নাকি সন্ধ্যে! যদিও এই লেখাটি লিখবার সময় এখনও বৃষ্টি নামেনি, তবে দিন তো আর শেষ হয়ে যায়নি। এখনও কয়েকঘণ্টা বাকি। বৃষ্টি নামতে আর কতক্ষণ!
আজ ২৭ মাঘ, ১৪২৮ বঙ্গাব্দ।
সকালের হিমশীতল মেঘবিদুর আবহাওয়া দেখলেই মনে পড়ে যায় খনার বচন- যদি বর্ষে মাঘের শেষ, ধন্যি রাজার পুণ্য দেশ। এই লাইনটি অনেকেরই জানা আছে। বচনের মর্মার্থও অনেক সহজ। মাঘ মাসের শেষের দিকে যদি বৃষ্টি হয়, তাহলে তা কৃষকের মুখ হাসি ফোটায়। এই বৃষ্টি দেশে ফসল ফলার জন্য উপকারী। শীতের প্রায় শেষভাগ চলে এসেছে। কয়েকদিন পরই আগমন ঘটবে ঋতুরাজ বসন্তের। এর মধ্যেই আবহাওয়ার পূর্বাভাস জানান দিয়েছে ঘন কুয়াশাসহ বৃষ্টির সম্ভাবনার কথা।
খনার বচনের সাথে কৃষকের ফসলের মিল তো পেলাম। জাতীয় জীবনেও কি এর কোনো প্রভাব পড়ছে না? বসন্তের আগমনের সাথে সাথে যদি বলি দেশের জন্যও তা চমৎকার এক বার্তাবরণের দূত হয়ে এসেছে, তাহলে কি অত্যুক্তি হবে?
বাংলাদেশ তো এগিয়ে চলেছে দুর্বার গতিতে। মাননীয় প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনার যোগ্য নেতৃত্বে বাংলাদেশ এখন অপার সম্ভাবনাময় একটি রাষ্ট্রে পরিণত হয়েছে। কেবলমাত্র দুই-তিন বছরের জন্য নয়, বাংলাদেশ ২০৪১ সালে কেমন রূপ ধারণ করবে, তার জন্য হাতে নেয়া হয়েছে প্রেক্ষিত পরিকল্পনা উন্নয়ন। শতবর্ষের প্রোগ্রামেও নেয়া হয়েছে ডেল্টা প্ল্যান ২১০০।
এই বদ্বীপ অঞ্চলে বাংলাদেশের মানুষ যেন জলবায়ু পরিবর্তনের অভিঘাত হতে রক্ষা পায়, সেজন্যও প্রধানমন্ত্রী দিয়েছেন বাস্তবমুখী পরিকল্পনা। তার পরিকল্পনায়, ২১০০ সাল পর্যন্ত বাংলাদেশের অগ্রযাত্রা হবে অপ্রতিরোধ্য। বাংলাদেশের মাথাপিছু আয় বেড়েছে, প্রবৃদ্ধি বেড়েছে, বেড়েছে নানা খাতে বাংলাদেশের এগিয়ে চলা। প্রতিবেশী দেশগুলো যেখানে করোনাকাল এবং পরবর্তী সময়ে নানা ক্ষেত্রে সামনে এগিয়ে যেতে যুঝছে, বাংলাদেশ তখন এগিয়ে চলেছে উন্নয়নের অগ্রযাত্রায়। বাংলাদেশ এখন অনেক দেশের জন্যই রোল মডেল দেশ হিসেবে আবির্ভূত হয়েছে। হেনরি কিসিঞ্জারের তলাবিহীন ঝুড়ি আজ ফুটো মেরামত করে ফুলে-ফলে শোভিত একটি দেশ। পাশের দেশগুলো আজ বাংলাদেশের দিকে চেয়ে থাকে ঈর্ষান্বিত চোখে। জাতিসংঘের সাধারণ পরিষদের আলোচনায় আমাদের দেশের প্রধানমন্ত্রী দৃঢ়ভাবে হাল ধরেন জলবায়ু ঝুঁকিসম্পন্ন দেশগুলোর নেত্রী হিসেবে।
মাথাপিছু আয়, জীবনধারণের মান সবকিছুতেই বাংলাদেশ এখন ঈর্ষনীয় অবস্থানে আছে। শুধু তাই নয়, করোনাকালীন সময়ে বাংলাদেশ যেভাবে ঘুরে দাঁড়িয়েছে, তাতে রীতিমতো চমকে গিয়েছে সারাবিশ্ব। বেশ কিছু মেগা প্রজেক্ট বাংলাদেশের হাতে রয়েছে, যেগুলোর কাজ চলমান এবং আশা করা যাচ্ছে খুব দ্রুতই সেগুলোর কাজ শুরু হয়ে যাবে। বিশ্ব যেখানে হিংসা-সংঘাত-হানাহানিতে মত্ত, বাংলাদেশ সেখানে গাইছে সম্প্রীতির বাণী। বাংলাদেশের এই এগিয়ে যাওয়া অব্যাহত থাকুক, এটিই আমাদের কামনা। আর বিপদশঙ্কুল আবহাওয়ায় শক্ত হাতে কেমন করে দেশকে উন্নতির সোপানে নিয়ে যেতে হয়, তা আমাদের প্রধানমন্ত্রী জানেন।