লিভিং ইনসাইড

যে খাবার গুলো রাখতে পারেন সকালের নাস্তায়


প্রকাশ: 12/02/2022


Thumbnail

বর্তমানে সবাই কর্মব্যস্ত জীবন নিয়ে ব্যস্ত। সকালের শুরু থেকে রাত পর্যন্ত যে যার কাজ নিয়ে ব্যস্ত থাকে। তাই সারাদিনের এই কাজের জন্য শরীরে পর্যাপ্ত শক্তি এবং পুষ্টি যোগাতে সকালের নাস্তায় প্রয়োজন কিছু পুষ্টিগুণ সম্পন্ন খাবার। সকালে ভরপেট নাস্তা করলে দুপুরের আগে খুব বেশি খিদে লাগে না, কারণে-অকরণে এটা-সেটা খাওয়ারও দরকার হয়না। স্বাস্থ্যসম্মত সকালের নাস্তা হতে পারে ক্যালসিয়াম এবং আঁশ জাতীয় খাবারের ভালো উৎস। চলুন তাহলে জেনে নেই সকালের নাস্তায় যে পুষ্টিগুণ সম্পন্ন খাবার গুলো রাখতে পারেন। 

ফল

সকালের নাস্তার জন্য সব চাইতে ভালো খাবার হচ্ছে ফলমূল। কলা, আপেল, কমলা, আঙুর অথবা মৌসুমি ফলমূল দিয়ে সকালের নাস্তা করা সব চাইতে ভালো। বিভিন্ন রোগপ্রতিরোধে ও ওজন কমাতে আঁশজাতীয় খাবার প্রয়োজন। ফলে প্রচুর পরিমাণে ভিটামিন সি, ভিটামিন এ, ক্যালসিয়াম, পটাশিয়াম ইত্যাদি থাকে। ভিটামিন সম্পূর্ণ পেতে তাজা ও কাঁচা ফল খোসাসহ খাওয়াই ভালো। চাইলে ফলমূল দিয়ে সালাদ তৈরি করেও খেতে পারেন। 

বেরি জাতীয় ফল

স্ট্রবেরি, ব্লুবেরি, জাম জাতীয় ফলগুলো বিশ্বের অধিক পুষ্টিকর খাদ্যের মধ্যে অন্যতম। বেরি জাতীয় ফলগুলোতে প্রচুর পরিমাণে অ্যান্টিঅক্সিডেন্টস থাকে, যা মানবদেহের কোষকে সুস্থ রাখে এবং সম্পূর্ণ স্বাস্থ্যের উন্নতি সাধন করে। অ্যানথোসায়োনেনস উপাদানের জন্য রক্তের ইনসুলিন ভারসাম্য ঠিক রাখে ও রক্তে সুগারের মাত্রা নিয়ন্ত্রণ করে এবং ডায়াবেটিসের ঝুঁকি হ্রাস করে। এই ফলগুলি খেলে হজমশক্তি ঠিক থাকে এবং কোষ্ঠকাঠিন্য আশংকা থাকে না। এছাড়া আছে ভিটামিন সি, যা মানবদেহের প্রতিটি কোষকে শক্তিশালী করে রোগ প্রতিরোধে আরও বেশি সক্ষম করে তুলে। 

গ্রিন টি

গ্রিন টি এর মধ্যে রয়েছে প্রচুর পরিমাণে অ্যান্টি-অক্সিডেন্ট, ভিটামিন এ, ভিটামিন বি , বি৫, ডি, ই, সি, ই, এইচ সেলেনিয়াম, ক্রোমিয়াম, জিঙ্ক, ম্যাঙ্গানিজ ও সামান্য ক্যাফেইন। গ্রিন টির উপকারিতা অনেক। এটি রোগ প্রতিরোধ ক্ষমতা বৃদ্ধি করে, উচ্চ রক্তচাপ ও ডায়াবেটিস নিয়ন্রণে সাহায্য করে, ওজন কমাতে সাহায্য করে, ক্যান্সার প্রতিরোধ করে ও মস্তিষ্ককে উদ্দীপ্ত করে। এছাড়া ত্বকের সৌন্দর্য রক্ষার্থে গ্রিন টির জুড়ি মেলা ভার। গ্রিন টি বার্ধক্য এবং কপালের বলিরেখা থেকে রক্ষা করে ত্বককে উজ্জ্বল ও সতেজ রাখে। তবে খাবার খাওয়ার ১ ঘন্টা আগে অথবা খাবার খাওয়ার ১ ঘন্টা পর গ্রিন টি পান করা উচিত। খাওয়ার সঙ্গে সঙ্গেই গ্রিন টি পান করা উচিত নয়। এবং সকালে খালি পেটে গ্রিন টি পান করা উচিত নয়।  

ওটমিল

সারাদিনের এনার্জি পেতে ওটমিল খেতে পারেন। কারণ, ওটসে আছে কার্বোহাইড্রেট, প্রোটিন, ফাইবার, ম্যাংগানিজ, কপার, ফসফরাস, আয়রন, জিঙ্ক, ফলেট, অ্যান্টি-অক্সিডেন্ট, ভিটামিন বি১ এবং ভিটামিন বি৬। ওটস খেতে পারেন দুধ, ফল ও বাদাম মিশিয়ে।  তবে কোনো ফ্লেভারড বা চিনিযুক্ত ওটমিল খাবেন না। ওটস খিচুড়িও নাস্তা হিসেবে চমৎকার।

ডিম 

প্রোটিনের সব চাইতে ভালো উৎস হচ্ছে ডিম। তাই সকালের নাস্তা বা ব্রেকফাস্টে ডিম খেতে পারেন। ডিমে প্রচুর পরিমাণে ভিটামিন ও মিনারেলস থাকে। আর এতে ক্যালরিও থাকে বেশ কম। সকালের নাস্তায় অবশ্যই প্রত্যেকের ডিম খাওয়া উচিত। একজন পূর্ণবয়স্ক মানুষ হিসেবে সকালে ২ টি ডিম খেলেই যথেষ্ট। তবে যারা একটু বেশি স্বাস্থ্যবান তাদের ডিমের কুসুম এড়িয়ে যাওয়া উচিত।

ইস্ট ছাড়া রুটি 

অনেকেই নাস্তায় আটার রুটি খেতে পছন্দ করেন। এটি স্বাস্থ্যের জন্য ভালো। ইস্ট ছাড়া গমের তৈরি রুটিতে আছে বি১, বি২, বি৩ সহ ক্যালসিয়াম, আয়রন, ম্যাগনেসিয়াম, ফাইবার জাতীয় উপাদান। নিয়মিত গমের তৈরি রুটি খেলে রক্তচাপ, কোলেস্টেরল  নিয়ন্ত্রণে থাকে। এছাড়া এটি ওজন নিয়ন্ত্রণ, দৃষ্টিশক্তি ভালো ও ডায়াবেটিসের ঝুঁকি হ্রাস করে। কারণ এটি রক্তের শর্করা ঠিক রাখতে সাহায্য করে থাকে। এছাড়া ক্লান্তি দূর করতে, ত্বককে উজ্জ্বল এবং আকর্ষণীয় করতেও ভূমিকা রাখে।

ফ্ল্যাকসিড বা তিসি

প্রকৃতির মহৌষধ বলা হয় ফ্ল্যাকসিড বা তিসিকে। প্রাচীনকাল থেকেই শরীরকে সুস্থ এবং রোগমুক্ত রাখতে তিসি বীজের ব্যবহার হয়ে আসছে। তিসি বীজের উপকারিতা প্রচুর। মাত্র এক চামচ তিসি বীজ খেলেই শরীরে প্রবেশ করে প্রায় ১.৩ গ্রাম প্রোটিন, ২ গ্রাম কার্বোহাইড্রেট, ১৯ গ্রাম ফাইবার, ১.৫৯৭ এমজি ওমেগা থ্রি ফ্যাটি অ্যাসিড, দৈনিক চাহিদার ৮ শতাংশ ভিটামিন বি১, ২ শতাংশ ভিটামিন বি৬, ২ শতাংশ ফলেট, ২ শতাংশ আয়রন, ৭ শতাংশ ম্যাগনেসিয়াম, ২ শতাংশ ক্যালসিয়াম, ৪ শতাংশ ফসফরাস এবং ২ শতাংশ পটাশিয়াম। এটি ওমেগা ৩ ফ্যাটি অ্যাসিড ও ফাইবারের চাহিদা চাহিদা পূরণ করে। রক্তচাপ ও কোলেস্টেরল নিয়ন্ত্রণে রাখে, রোগ প্রতিরোধ ক্ষমতার উন্নতি ঘটায়, স্মৃতিশক্তি বৃদ্ধি করে। 

কাঠবাদাম

ভিটামিন ও খনিজে ভরা কাঠবাদাম। এটি পানিতে ভেজালে পুষ্টিগুণ অনেক বেড়ে যায়। হজমশক্তি বাড়ায় ও ওজন কমাতে কার্যকরী ভূমিকা পালন করে। দীর্ঘক্ষণ না খেয়ে থাকার পর সকালে ৫-১০টি কাঠবাদাম খেলে পুষ্টি জোগানোর পাশাপাশি সারাদিন রুচিও বাড়ায়। বিশেষজ্ঞদের মতে, কাঠবাদামের বাদামি আবরণে ট্যানিন নামের উপাদান থাকে, যা পুষ্টি শোষণ করে। ভেজানো হলে খোসা খুলে যায় এবং সহজে পুষ্টি বের হয়। উচ্চ রক্তচাপ নিয়ন্ত্রণসহ ক্ষতিকারক কোলেস্টেরল (লো ডেন্সিটি লিপোপ্রোটিন) নিয়ন্ত্রণ করে আমন্ড। এবং এর অ্যান্টিঅক্সিডেন্টস শরীরের ফোলাভাব কমায় ও অকালপক্কতা নিয়ন্ত্রণ করে।


প্রধান সম্পাদকঃ সৈয়দ বোরহান কবীর
ক্রিয়েটিভ মিডিয়া লিমিটেডের অঙ্গ প্রতিষ্ঠান

বার্তা এবং বাণিজ্যিক কার্যালয়ঃ ২/৩ , ব্লক - ডি , লালমাটিয়া , ঢাকা -১২০৭
নিবন্ধিত ঠিকানাঃ বাড়ি# ৪৩ (লেভেল-৫) , রোড#১৬ নতুন (পুরাতন ২৭) , ধানমন্ডি , ঢাকা- ১২০৯
ফোনঃ +৮৮-০২৯১২৩৬৭৭