ইনসাইড পলিটিক্স

এক দফা দাবিতে বিএনপির আন্দোলন কবে?


প্রকাশ: 12/02/2022


Thumbnail

দেড় দশক ধরে ক্ষমতার বাইরে থাকা রাজনৈতিক দল বিএনপি ক্ষমতায় যেতে মরিয়া। এ লক্ষ্যে এক দফা দাবিতে আন্দোলনে নামার হুশিয়ারি দিচ্ছে দলটি। পাশাপাশি বিরোধী রাজনৈতিক দলগুলোর সাথে বৃহত্তর ঐক্য বা জোট গঠনের কথাও বলছেন দলটির নেতারা। কিন্তু বিএনপির এই বৃহত্তর জোট কিংবা এক দফা আন্দোলনের দৃশ্যমান কোনো অগ্রগতি নেই। দলটি কবে রাজপথের আন্দোলনে যাচ্ছে, কিংবা কোন কোন দল বিএনপির সাথে জোটবদ্ধ হতে রাজি হয়েছে, এ নিয়ে কিছুই বলতে পারছেন না দলটির নেতাকর্মীরা। 

একাদশ জাতীয় নির্বাচনে ভরাডুবির পর থেকে রাজনীতির মাঠ থেকে অনেকটাই বিতাড়িত বিএনপি। একদিকে বেগম খালেদা জিয়ার মুক্তির জন্য রাজপথে দৃশ্যমান কোনো আন্দোলন করতে পারেনি দলটি। অন্যদিকে দলটির সিনিয়র নেতারা দ্বাদশ জাতীয় নির্বাচনকালীন সময়ে নির্দলীয় নিরপেক্ষ তত্ত্বাবধায়ক সরকারের দাবি জানাচ্ছেন, কিন্তু এ লক্ষ্যে কোনো আন্দোলন তো দূরের কথা, আন্দোলনের প্রস্তুতিও চোখে পড়ছে না। এর পাশাপাশি রাষ্ট্রপতির সংলাপেও যায়নি বিএনপি, এমনকি অনুসন্ধান কমিটির কাছে নাম দিতেও অস্বীকৃতি জানিয়েছে তারা। এরকম পরিস্থিতিতে দ্বাদশ সংসদ নির্বাচনকে কেন্দ্র করে নির্দলীয় সরকারের অধীনে নির্বাচন, সরকারবিরোধী যুগপৎ আন্দোলন করতে চাচ্ছে বিএনপি। এ জন্য পুরনো জোটসঙ্গী ২০-দল, ঐক্যফ্রন্টের পাশাপাশি ক্ষমতাসীন দলের জোটশরিক ছাড়া অন্য দলগুলোকে কাছে টানতে চায় দলটি। একটাই লক্ষ্য, যেকোনো মূল্যে রাজপথের আন্দোলনে নামা। কিন্তু আন্দোলন করার মতো সক্ষমতা কি বিএনপির আছে?

একদিকে, ২০০৭ সালের ওয়ান ইলেভেনের পর থেকে গত ১৫ বছরে বিএনপি বড় ধরণের কোনো আন্দোলন করতে পারেনি। এর মধ্যে ২০১৪ ও ২০১৫ সালে অবরোধ কর্মসূচির ডাক দেয় দলটি। সেই আন্দোলনটি সহিংস রূপ নেয়। ঐ সময়ে বিএনপি-জামায়াতের দুই মাসের টানা অবরোধে নিহত হয়েছিলেন ১১৫ জন। এদের মধ্যে ৯০ জনই ছিল সাধারণ মানুষ। এ ছাড়া পেট্রলবোমায় দগ্ধ হয়ে মারা গেছেন ৬২ জন। ফলে মানুষ এ সহিংস অবরোধকে সরাসরি প্রত্যাখ্যান করে এবং অনানুষ্ঠানিকভাবে তাদের এ সহিংস অবরোধ কার্যক্রম থেকে সরে আসতে হয়। সে অবরোধ কবে আনুষ্ঠানিকভাবে তুলে নেয়া হবে তা দলটির কোনো নেতারই জানা নেই। এরপর থেকে আর মাঠে নামতে পারেনি দলটি। 

অন্যদিকে, দলটিতে সিনিয়র নেতাদের কোন্দল বাড়ছেই। লন্ডনে পলাতক তারেক জিয়াপন্থী ও তারেক বিরোধীদের কোন্দলের জেরে বিএনপিতে গণপদত্যাগ, বহি:ষ্কারাদেশসহ দল থেকে অব্যাহতি দেওয়া চলছে। বিশেষ করে তারেক বিরোধী গ্রুপের জনপ্রিয়, ত্যাগী নেতাদের একে একে দল থেকে বাহির করে দেয়া হচ্ছে। এর প্রেক্ষিতে জনপ্রিয় ওইসব নেতাদের সাথে কাজ করা নেতা কর্মীরাও গণপদত্যাগ করছে। এর ফলে রাজধানী ঢাকা থেকে তৃণমূল পর্যন্ত এক রকমের তাসের ঘরে পরিণত হয়ে গেছে দলটি এবং যেকোনো সময় কয়েক টুকরায় দলটি খণ্ডিত হয়ে যেতে পারে বলে আশঙ্কা করছেন রাজনৈতিক বিশ্লেষকরা। এরকম বাস্তবতায় এক দফা দাবিতে আন্দোলনের চিন্তা ভাবনা বাদ দিয়ে বিএনপির সিনিয়র নেতাদের অভ্যন্তরীণ কোন্দল নিরসন ও দলের সব নেতা-কর্মীদের এক ছাতার নিচে আনার পরামর্শ দিয়েছেন বিশ্লেষকরা।


প্রধান সম্পাদকঃ সৈয়দ বোরহান কবীর
ক্রিয়েটিভ মিডিয়া লিমিটেডের অঙ্গ প্রতিষ্ঠান

বার্তা এবং বাণিজ্যিক কার্যালয়ঃ ২/৩ , ব্লক - ডি , লালমাটিয়া , ঢাকা -১২০৭
নিবন্ধিত ঠিকানাঃ বাড়ি# ৪৩ (লেভেল-৫) , রোড#১৬ নতুন (পুরাতন ২৭) , ধানমন্ডি , ঢাকা- ১২০৯
ফোনঃ +৮৮-০২৯১২৩৬৭৭