ইনসাইড বাংলাদেশ

নিরাপত্তা সংক্রান্ত ঝুঁকি একেবারে উড়িয়ে দিচ্ছি না: ডিএমপি কমিশনার


প্রকাশ: 13/02/2022


Thumbnail

ঢাকা মেট্রোপলিটন পুলিশ (ডিএমপি) কমিশনার মোহা. শফিকুল ইসলাম বলেছেন, অভিজিৎ রায় হত্যা মামলার রায়ের পর জঙ্গিদের ক্ষিপ্ত হওয়া স্বাভাবিক। রায়ের পর আমরাও জঙ্গি তৎপরতার বিষয়ে, বিশেষ করে এই বইমেলা নিরাপত্তাব্যবস্থা উপলক্ষ্যে আমরা চুলচেরা বিশ্লেষণ করেছি। তাদের নেতা চাকরিচ্যুত মেজর জিয়া এখনও বাইরে। তাই আমরা নিরাপত্তা সংক্রান্ত ঝুঁকি একেবারে উড়িয়ে দিচ্ছি না।

রোববার (১৩ ফেব্রুয়ারি) বেলা সাড়ে ১১টায় সোহরাওয়ার্দী উদ্যানে বইমেলা উপলক্ষ্যে নিরাপত্তা ব্যবস্থা সম্পর্কে ব্রিফিংকালে সাংবাদিকদের এক প্রশ্নের জবাবে এসব কথা বলেন তিনি।

ডিএমপি কমিশনার বলেন, বইমেলায় অভিজিৎ রায়ের ওপর হামলার নায়ক আনসারুল্লাহ বাংলা টিম প্রধান মেজর (চাকরিচ্যুত) জিয়া এখনও ধরাছোঁয়ার বাইরে। তাকে গ্রেফতারে দেশে-বিদেশে পুরস্কার ঘোষিত হয়েছে। আমরাও চেষ্টা করছি। 

বিগত বছরগুলোতে লক্ষ্য করা গেছে বইমেলাকে কেন্দ্র করে কিছু ধর্মীয় উসকানিমূলক ও বিতর্কিত বই স্টলে আসে। এবার বাংলা একাডেমি ছাড়া এ ধরনের বই মনিটরিং করার ক্ষেত্রে কোনো পদক্ষেপ থাকছে কি-না জানতে চাইলে ডিএমপি কমিশনার বলেন, এ ব্যাপারে প্রস্তুতি মিটিংয়ে বিস্তারিত কথা হয়েছে। বইমেলা ঘিরে শত শত, হাজার হাজার বই আসে, যা বাংলা একাডেমির পক্ষে মনিটরিং করা প্রায় অসম্ভব। এতো বই পড়ে সিদ্ধান্ত দেওয়া কঠিন। এবার  এই বিষয়টি মনিটরিং করার জন্য সিটিএসবি সদস্যরা কাজ করবেন। রাত ১০টার পরে যদি এ ধরনের কোনো বই স্টলে ঢোকে তাহলে এর দায়দায়িত্ব ওই স্টল এবং প্রকাশক কর্তৃপক্ষকে নিতে হবে। 

এতো কিছুর পরও যদি বিশেষ পরিস্থিতির সৃষ্টি হয় সেক্ষেত্রে কোনো ব্যবস্থা থাকছে কি না জানতে চাইলে কমিশনার বলেন, বিশেষ পরিস্থিতি মোকাবিলায় সোয়াট থাকবে, অগ্নিনিরাপত্তায় থাকবে ফায়ার সার্ভিসের টিম। এছাড়া গোয়েন্দা পুলিশের সদস্যরা তো থাকছেই। তবে জঙ্গিরা যদি আগুনসহ কোনো বিস্ফোরণ ঘটায়, এমন পরিস্থিতি মোকাবেলায় আমাদের প্রস্তুতি নেয়াও থাকবে৷ আমরা আশা করছি এ ধরণের কিছু ঘটবে না। কারণ তাদের তৎপরতা প্রায় জিরো পর্যায়ে। আমরা সবাই হাতে হাত রেখে প্রাণের এই বই মেলা সফল করতে কাজ করবো, আশা করছি কিছু ঘটবে না। 

মেলায় যারা আসবেন তাদের উদ্দেশ্যে কমিশনার বলেন, করোনা পরিস্থিতির কারণে মাস্ক ছাড়া কেউ ঢুকবো না, তাপমাত্রা মাপার যন্ত্র রাখা হবে। স্বাস্থ্য অধিদপ্তর থেকে করোনা পরিস্থিতির কারণে জারি করা নির্দেশনা অনুসরণ করা হবে। শতভাগ মাস্ক পরিধান নিশ্চিতে মোবাইল টিম থাকবে। যারা বিক্রেতা বা স্টলে বসবেন তারা করোনা টিকা দিয়েছেন মর্মে সনদ সাথে রাখতে হবে। নইলে জরিমানার ব্যবস্থা করবো। 

কমিশনার বলেন, পহেলা বৈশাখের মতোই বই মেলা একটি উৎসব। বইমেলার নিরাপত্তা নিশ্চিত করা ডিএমপির বড় দায়িত্বের অংশ। এবার বই মেলা প্রাঙ্গণ, শহীদ মিনার থেকে শাহবাগ ও নীলক্ষেত কেন্দ্রীক নিরাপত্তা ব্যবস্থা থাকছে। এসব এলাকায় প্রাথমিক একটি তল্লাশি দল থাকবে৷ সন্দেহজনক কিছু দেখলে তারা তল্লাশি করবে। এদিক দিয়ে বইমেলায় কোনো গাড়ি ঢুকবে না। আর মূল প্রাঙ্গণে ঢোকার মুহূর্তে বইমেলা প্রাঙ্গণের দুটি ও সোহরাওয়ার্দী উদ্যানে ঢোকার চারটিসহ মোট ৬টি গেট থাকবে। সেখানে আর্চওয়ে স্থাপন করা হবে। প্রত্যেককে আর্চওয়ে পেরিয়ে ঢুকতে হবে৷ মেটাল ডিটেক্টর থাকবে। সন্দেহ হলে পৃথক বক্সে নিয়ে তল্লাশি করা হবে। 

মেলা প্রাঙ্গণসহ আশপাশের এলাকার প্রতিটি ইঞ্চি জায়গা সিসিটিভির আওতায় আনা হয়েছে। মেলা প্রাঙ্গণে সাদা পোশাকে পুলিশ সদস্যের পাশাপাশি পর্যাপ্ত সংখ্যক পোশাকধারী সদস্য মোতায়েন থাকবে।

মেলার আশপাশে মোটরসাইকেল ও গাড়ি টহল থাকবে। এছাড়া, সিটিটিসি, বোম্ব ডিসপোজাল ইউনিট, ক্রাইম সিন ভ্যান ও ডগ স্কোয়াড প্রস্তুত থাকবে। যে কোনো জরুরি পরিস্থিতি মোকাবিলার সার্বিক প্রস্তুতি নেওয়া হয়েছে।

ডিএমপি কমিশনার বলেন, মেলায় মেডিক্যাল টিম ও ফায়ার সার্ভিস মোতায়েন থাকবে। ডিএমপি কন্ট্রোল রুমের ভোতরে ব্রেস্ট ফিডিং কক্ষ থাকবে। আমাদের ঊর্ধ্বতন কর্মকর্তারা নিয়মিত মেলা প্রাঙ্গণে আসবেন ও নিরাপত্তার বিষয়ে পর্যবেক্ষণ করবেন।

ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের প্রক্টর গোলাম রাব্বানী বলেন, নিম্নমানের এবং উদ্দেশ্য প্রণোদিত বই প্রকাশ হলে তার বিরুদ্ধে ব্যবস্থা নিতে হবে। কিছু বই আছে রাতের অন্ধকারে মেলায় ঢোকে। আমি প্রস্তাব করেছি একটা গেট দিয়ে বইগুলো ঢুকবে, সেখানে আমাদের সার্ভিলেন্স টিম থাকবে। তাহলে এটা ঠেকানো সম্ভব।


প্রধান সম্পাদকঃ সৈয়দ বোরহান কবীর
ক্রিয়েটিভ মিডিয়া লিমিটেডের অঙ্গ প্রতিষ্ঠান

বার্তা এবং বাণিজ্যিক কার্যালয়ঃ ২/৩ , ব্লক - ডি , লালমাটিয়া , ঢাকা -১২০৭
নিবন্ধিত ঠিকানাঃ বাড়ি# ৪৩ (লেভেল-৫) , রোড#১৬ নতুন (পুরাতন ২৭) , ধানমন্ডি , ঢাকা- ১২০৯
ফোনঃ +৮৮-০২৯১২৩৬৭৭