ওয়ার্ল্ড ইনসাইড

ট্রাম্প বনাম রাষ্ট্রপতিত্ব

নিজস্ব প্রতিবেদক

প্রকাশ: 11/12/2017


Thumbnail

প্রেসিডেন্ট ডোনাল্ড ট্রাম্প তার পূর্বসুরিদের থেকে আলাদা, এটা বললে কমই বলা হয়। হোয়াইট হাউজে তার দিনগুলো অন্য প্রেসিডেন্টদের মতো নয়। হুটহাট বিস্ফোরক মন্তব্য আর টুইট তাঁকে বিশ্বজুড়ে পরিচিতি দিয়েছে একজন অনুমানঅযোগ্য চরিত্রের মানুষ হিসেবে।

প্রেসিডেন্ট হিসেবে দায়িত্বের এক বছরে ট্রাম্প প্রেসিডেন্ট পদের সর্বজন গৃহীত ধারনাটি পাল্টে ফেলছেন অনেকটাই। যুক্তরাষ্ট্রের সর্বোচ্চ ক্ষমতাধর পদটিকে তিনি ২০১৬ নির্বাচনে জয়ের মতই পুরস্কার হিসেবে গণ্য করেন। কিন্তু তিনি নিজেকে ক্ষমতাদর্পী শাসকের চেয়ে একজন বহিরাগত হিসেবে বিবেচনা করেন, যিনি লড়াই করে চলেছেন নিজেকে গুরুত্বের সঙ্গে বিবেচনার উপযুক্ত হিসেবে প্রতিষ্ঠিত করতে।

ট্রাম্পের পূর্বসুরিদের জন্য প্রেসিডেন্ট পদ ছিল বিভিন্ন গোষ্ঠী স্বার্থ আর রাজনৈতিক ঘটনাপ্রবাহে ভারসাম্য বজায় রাখার যুদ্ধ। আর প্রেসিডেন্ট ট্রাম্পের জন্য এ লড়াই হচ্ছে প্রতিদিন, প্রতি ঘণ্টায় আত্মনিয়ন্ত্রনের যুদ্ধ। তিনি এখনো বিশ্বাস করেন মার্কিন প্রেসিডেন্ট নির্বাচনে রুশ হস্তক্ষেপ তদন্ত তার নির্বাচনে জয়লাভ এবং প্রেসিডেন্সিকে অবিধিসম্মত প্রমাণ করার চেষ্টামাত্র। সিনেটর লিন্ডসে গ্রাহামবলেন, ট্রাম্প মনে করেন তার জয়ের ভিত্তি দূর্বল করার চেষ্টা করা হচ্ছে এবং নির্বাচনে রুশ হস্তক্ষেপের অভিযোগ ভিত্তিহীন।

ট্রাম্প বিশ্বাস করেন লিবারেল রাজনৈতিক দল এবং গণমাধ্যমগুলো তাঁকে ধ্বংস করতে চাইছে। আর এই বিরোধী প্রচারকে পাল্টা আক্রমণ করেই তিনি প্রেসিডেন্ট নির্বাচিত হয়েছেন। ট্রাম্পের সমর্থকদেরকাছে তার আচরণ গ্রহণযোগ্য হলেও, ডেমোক্র্যাট এবং রিপাবলিকান দলের অনেক সদস্যের কাছে ট্রাম্পের এই ‘অনিয়ন্ত্রিত পদ্ধতি’ হঠকারী বলে বিবেচিত।

ট্রাম্পের বর্ণবাদী এবং লিঙ্গ-ধর্ম বিদ্বেষী আচরণে ক্ষুদ্ধ তাদের সবাই। সম্প্রতি প্রেসিডেন্ট ট্রাম্প আদিবাসী মার্কিনীদের একটি অনুষ্ঠানে বর্ণবাদী মন্তব্য করে কঠোর সমালোচনার মুখে পড়েছেন। টুইটারে ব্রিটিশ প্রধানমন্ত্রী থেরেসা মের উদ্দেশ্যে কুটনৈতিক শিষ্টাচার বহির্ভূত মন্তব্য করে আন্তর্জাতিক সংকট তৈরি করেছেন। ট্রাম্প মনে করেন এমন (খামখেয়ালি এবং হঠকারী) আচরণ যেহেতু তাঁকে প্রেসিডেন্ট নির্বাচিত করেছে, সেহেতু এ পদ্ধতি গ্রহণযোগ্য।

কিন্তু তাঁর এই পদ্ধতি নির্বাচনী প্রচারে কার্যকর হলেও প্রেসিডেন্ট পদের উপযুক্ত নয়। সিনেটর গ্রাহামের মতে প্রেসিডেন্ট হিসেবে নিজেকে গ্রহণযোগ্য করতে ট্রাম্পকে তাই এই পাল্টা লড়িয়ে এবং প্রেসিডেন্ট পদের একটি ভারসম্য খুঁজে নিতে হবে। 

প্রেসিডেন্ট ট্রাম্প তাঁর সাম্প্রতিক পুর্বসূরিদের তুলনায় বহুগুণ বেশি অজনপ্রিয়, কিন্তু দেশটির জনগণের আলোচনায় ট্রাম্প যেভাবে আধিপত্য করছেন তা অন্যদের বেলায় দেখা যায়নি। ট্রাম্পের উপদেষ্টা জেরাড কুশনার মন্তব্য হচ্ছে, ৭১ বছর বয়সে ট্রাম্প তাঁর নিজের আচরণে এতটাই অভ্যস্ত হয়ে পড়েছেন যে, তার পক্ষে পরিবর্তন হওয়া অসম্ভব। এর পরিবর্তে তিনি প্রেসিডেন্ট পদের সর্বজন গৃহীত ছবিটিকে নিজের মনমতো মচকে নেবেন, নয়তো সম্পূর্ণ ভেঙে ফেলবেন।

ট্রাম্প জামাতার পূর্ভাবাস অর্ধসত্য প্রমাণিত হয়েছে। তর্কসাপেক্ষে বলা চলে এক বছরের শাসনকালে তিনি নিজের চরিত্র আর রাষ্ট্রপতিত্বের ম্যাচে ড্র করেছেন।


সূত্র: নিউ ইয়র্ক টাইমস
বাংলা ইনসাইডার/কেএইচ



প্রধান সম্পাদকঃ সৈয়দ বোরহান কবীর
ক্রিয়েটিভ মিডিয়া লিমিটেডের অঙ্গ প্রতিষ্ঠান

বার্তা এবং বাণিজ্যিক কার্যালয়ঃ ২/৩ , ব্লক - ডি , লালমাটিয়া , ঢাকা -১২০৭
নিবন্ধিত ঠিকানাঃ বাড়ি# ৪৩ (লেভেল-৫) , রোড#১৬ নতুন (পুরাতন ২৭) , ধানমন্ডি , ঢাকা- ১২০৯
ফোনঃ +৮৮-০২৯১২৩৬৭৭