ইনসাইড টক

'ইসি গঠন বিলম্বকে যারা ইস্যু করে তাদের রাজনৈতিক অভিসন্ধি আছে'


প্রকাশ: 16/02/2022


Thumbnail

ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের আইন বিভাগের ডিন এবং শিক্ষক সমিতির সভাপতি অধ্যাপক ড. মো: রহমত উল্লাহ বলেছেন, নতুন নির্বাচন কমিশন গঠনে বিলম্ব হওয়াকে নিয়ে যারা ইস্যু করে তাদের একটি রাজনৈতিক অভিসন্ধি আছে। তারা এগুলােকে রাজনীতিকীকরণ করার জন্যই রাজনীতি করে। এগুলো যদি না করে তাহলে তাদের রাজনীতি টিকবে কি করে?

সার্চ কমিটির প্রস্তাবিত নাম, ইসি গঠন বিলম্ব হওয়া নিয়ে বিএনপিসহ বিভিন্ন রাজনৈতিক দলের মন্তব্যসহ নানা বিষয় নিয়ে বাংলা ইনসাইডার এর সঙ্গে একান্ত আলাপচারিতায় এসব কথা বলেন অধ্যাপক ড. মো: রহমত উল্লাহ। পাঠকদের জন্যঅধ্যাপক ড. মো: রহমত উল্লাহ এর সাক্ষাৎকার নিয়েছেন বাংলা ইনসাইডার এর নিজস্ব প্রতিবেদক মাহমুদুল হাসান তুহিন।

অধ্যাপক ড. মো: রহমত উল্লাহ বলেন, যে সমস্ত নামগুলো প্রস্তাব হয়েছে, তারা প্রস্তাব করতেই পারে। তবে যাদেরকেই প্রস্তাব করুন না কেনো বা যেই নামই আসুক না কেনো, বাংলাদেশের গণমানুষের প্রত্যাশা হচ্ছে, যে বাংলাদেশ একটি গণতান্ত্রিক রাষ্ট্র এবং আমাদের সংবিধানের যে চারটি মূলনীতি তার মধ্যে একটি উল্লেখযোগ্য নীতি হলো সমাজতন্ত্র। অর্থাৎ অর্থনৈতিক মুক্তির কথা বলা হয়েছে। সেই অর্থনৈতিক মুক্তির ক্ষেত্রটা হবে, একটি সুষ্ঠু নির্বাচন কমিশন গঠনের মাধ্যমে। মানুষের আশা-আকাঙ্খার প্রতিফলন ঘটবে নির্বাচনের মধ্য দিয়ে এবং তাদের সঠিক প্রতিনিধিরাই মানুষকে নেতৃত্ব দেবে এবং দেশ গড়ায় উদ্বুদ্ধ করবে। এখানে নির্বাচন কমিশনের জন্য যে নামগুলোই প্রস্তাব হোক না কোনো, আমি মনে করি এখানে সুনির্দিষ্ট কতগুলো ক্রাইটেরিয়া থাকতে হবে। সেই ক্রাইটেরিয়া হচ্ছে, যাকেই মনোনয়ন দেওয়া হোক অথবা নিয়োগ দেওয়া হোক তার মুক্তিযুদ্ধের চেতনা সমৃদ্ধ হতে হবে। 

তিনি বলেন, বাংলাদেশের গণতান্ত্রিক এবং সামাজিক যে রীতিনীতি, চিন্তা-চেতনা সেগুলোর ওপরে তার যথেষ্ট চিন্তাভাবনা ও অভিজ্ঞতা থাকতে হবে। তাকে অবশ্যই একজন সৎ দেশপ্রেমিক হতে হবে। এই কথাটা এইজন্যই বলছি যে, সততা অনেক গুরুত্বপূর্ণ। যদি এখানে কোনো ধরনের দুর্নীতির আশ্রয় যদি নেওয়া হয়, তাহলে কোনোভাবেই জনগণের আশা-আকাঙ্খার প্রতিপলন ঘটবে না। এখানে যারা নাম দিয়েছে, তারা তাদের দৃষ্টিভঙ্গি থেকে নাম দিয়েছে। আমি মনে করি, যারা সার্চ কমিটিতে আছেন, তাদের মাধ্যমে বাংলাদেশের গণমানুষের ইচ্ছার বহিঃপ্রকাশ হবে এবং তাদের চিন্তা-চেতনার মানুষ সেখানে যাবে। যারা তাদের কর্মকাণ্ড দিয়ে বাংলাদেশের গণতন্ত্রের ধারাকে অব্যাহত রাখবে, মুক্তিযুদ্ধের চেতনাকে বাংলাদেশের আর্থসামাজিক উন্নয়নে সমৃদ্ধ রাখবে, সমুন্নত রাখবে। এটি হলো আমার সবচেয়ে বড় প্রত্যাশা। 

১৪ ফেব্রুয়ারি আগের নির্বাচন কমিশনের মেয়াদ শেষ হয়ে গেলেও নতুন নির্বাচন কমিশন গঠনে বিলম্ব হওয়া নিয়ে বিএনপিসহ বিভিন্ন রাজনৈতিক দল এটি নিয়ে নানা ধরনের মন্তব্য করছে এমন প্রশ্নের জবাবে তিনি বলেন, এটি হলো রাজনৈতিক ছলচাতুরতা। এর বাইরে কিছু বলার নেই। কারণ এখন যদি বলে যে, নির্বাচন চলমান আছে কিন্তু নির্বাচন কমিশন শূন্য তাহলে একটা ভিন্ন কথা। নির্বাচন কমিশন কাজ করবে এবং নির্বাচন কমিশন গঠন হবে এর মাঝখানে যদি কোনো অন্তবর্তীকালীন সময় থাকে তো থাকবে। এর অর্থ এই নয় যে, নির্বাচন কমিশন চলমান থাকছে এবং ইমিডিয়েট আরেকজনকে নিয়োগ দিয়ে পূর্ব থেকেই বলা হচ্ছে যে আপনারা এত তারিখ থেকে দায়িত্ব নেবেন বা শপথ নেবেন। আমি তো মনে করি না এতে বিশেষ কোনো সমস্যা হচ্ছে। এখন এগুলোকে যারা ইস্যু করে তাদের একটি রাজনৈতিক অভিসন্ধি আছে। তারা এগুলােকে রাজনীতিকীকরণ করার জন্যই রাজনীতি করে। এগুলো যদি না করে তাহলে তাদের রাজনীতি টিকবে কি করে? তারা জনগণের সামনে কি নিয়ে কথা বলবে। এখন যদি তারা এটাকে ইস্যু তৈরি করে তাহলে আমি তো মনে করি না, যে এটা এমন কোনো ইস্যু, যা বাংলাদেশের অর্থনৈতিক, সামাজিক বা রাজনৈতিক ক্ষেত্রে কোনোভাবে প্রভাব বিস্তার করবে। আমি তো মনে করি যারা ইস্যু তৈরি করে, তারা যেনো সরকারকে সবসময় সহযোগিতা করে, যেনো যেই সরকারই থাকুক না কেনো বাংলাদেশের জনগণের সরকার থাকবে এবং সেই সরকার যেনো বাংলাদেশের জনগণের চিন্তা-ভাবনার বহিঃপ্রকাশ ঘটে তাদের কর্মকাণ্ডে। যে রাজনৈতিক দলই হোকনা কোনো, তাদের সবসময় সহযোগিতামূলক মানুষিকতা নিয়ে রাজনীতি করতে হবে। আমরা চাই বাংলাদেশের রাজনীতি হবে বাংলাদেশ কেন্দ্রীক। বাংলাদেশের রাজনীতি হবে মুক্তিযুদ্ধ কেন্দ্রীক। বাংলাদেশের রাজনীতি হবে সমৃদ্ধশালী, আগামী বাংলাদেশের রাজনীতি। যে রাজনীতি সকল মানুষকে ধারন করবে। আমি তো সেটাই আশা করি। 


প্রধান সম্পাদকঃ সৈয়দ বোরহান কবীর
ক্রিয়েটিভ মিডিয়া লিমিটেডের অঙ্গ প্রতিষ্ঠান

বার্তা এবং বাণিজ্যিক কার্যালয়ঃ ২/৩ , ব্লক - ডি , লালমাটিয়া , ঢাকা -১২০৭
নিবন্ধিত ঠিকানাঃ বাড়ি# ৪৩ (লেভেল-৫) , রোড#১৬ নতুন (পুরাতন ২৭) , ধানমন্ডি , ঢাকা- ১২০৯
ফোনঃ +৮৮-০২৯১২৩৬৭৭