ইনসাইড বাংলাদেশ

অবহেলা, উদাসীনতার বলি কি আবার হবে দেশ?


প্রকাশ: 16/02/2022


Thumbnail

বাংলাদেশে বর্তমানে করােনার প্রকোপ কিছুটা কম। তবে কিছুদিন আগেও করোনায় সংক্রমণ অনেকাংশে বেড়ে গিয়েছিল। সরকারের বিভিন্ন বিধিনিষেধ এবং করােনার নতুন ভেরিয়েন্টের শক্তি কিছুটা কম হওয়ায় মানুষ আক্রান্ত হলেও মৃত্যু হার অনেকাংশে কম। যদিও বিশ্বজুড়ে মহামারি করোনা ভাইরাসে আক্রান্ত হয়ে দৈনিক মৃত্যুর সংখ্যা বেড়েই চলেছে। সেইসঙ্গে উল্লেখযোগ্য পরিমাণে বেড়েছে নতুন শনাক্ত রোগীর সংখ্যা। গত ২৪ ঘণ্টায়ও সারা বিশ্বে করোনায় আক্রান্ত হয়ে মারা গেছেন প্রায় ১০ হাজার মানুষ। একই সময়ে ভাইরাসটিতে নতুন করে আক্রান্তের সংখ্যা পৌঁছেছে প্রায় ১৯ লাখে। কিন্তু বাংলাদেশে এই ভাইরাস নিয়ে এখনও অবহেলার কমতি নেই। মাস্ক পরা, সামাজিক দূরত্ব বজায়ে রাখা বা হাত ধোয়া এগুলো করতে অনিহার শেষ নেই। ফলে বিশেষজ্ঞরা বলছেন এই অবহেলা, উদাসীনতার ফল যেনো বাংলাদেশের মানুষকে আরও জীবন না দিতে হয়। কারণ এই ভাইরাস দিনে দিনে পরিবর্তন হচ্ছে এবং নতুন নতুন ভেরিয়েন্টের সৃষ্টি হচ্ছে। যার সর্বশেষ উদাহরণ ওমিক্রন।

বাংলাদেশের বিজ্ঞানী, গবেষক ও বিশ্লেষকরা বলছেন যে, তাদের ধারণা দেশটি করোনাভাইরাসের তৃতীয় ঢেউয়ের চূড়া অতিক্রম করেছে, তবে সতর্ক না হলে আবারও নতুন ঢেউয়ের আশঙ্কা আছে। সংক্রমণ সংখ্যা, হার ও মৃত্যুর গতিপ্রকৃতি বিশ্লেষণ করে তারা বলছেন যে মূলত জানুয়ারির শেষ সপ্তাহেই চূড়া অতিক্রম করেছে বাংলাদেশে। তারা বলছেন যে, জানুয়ারির শেষ দিকে যারা সংক্রমিত হয়েছেন তাদের অনেকের অবস্থা গুরুতর হওয়ার কারণেই এখন ২/৩ সপ্তাহ পর এসে মৃত্যুর সংখ্যা বেশি বা উর্ধ্বমুখী হয়েছে। ট্রেন্ডটা এখন নিম্নমুখী তবে সতর্ক থাকতে হবে। কারণ সংক্রমণের হার এখনো অনেক কমতে হবে। শতকরা দশ শতাংশের নীচে এবং এরপর ৫ শতাংশের নীচে আসতে হবে ধারাবাহিকভাবে। সেটি হচ্ছে কিন্তু খুব ধীরগতিতে। কারণ মানুষের মধ্যে স্বাস্থ্যবিধি মানার প্রতি অনিহা প্রবল। এই কারণেই ভয়ের কারণ যথেষ্ট রয়েছে।

সংশ্লিষ্টরা বলছেন, মানুষ অবহেলা করছে। বেশিরভাগ মানুষই ঠিক মতো মাস্ক ব্যবহার করছেন না। হাঁটে-বাজারে ভিড় লেগেই আছে। সবই চলছে সমান তালে। ফলে করোনা আবার বাড়তে পারে যেকোনো মুহুর্তে। যদিও এরই মধ্যে দেশের বেশিরভাগ মানুষ টিকার আওতায় এসেছে। যারা এখনও টিকার আওতায় আসে নি, তাদের জন্যও সরকার ব্যবস্থা গ্রহণ করেছে। এখন টিকা কেন্দ্রে গেলেই টিকা নেওয়া যাবে। ফলে টিকা গ্রহণ আরও সহজ হয়েছে। কিন্তু টিকা তখনই সঠিকভাবে কাজ করবে যখন টিকার সঙ্গে সঙ্গে স্বাস্থ্যবিধিটাও মানুষ সঠিকভাবে মেনে চলবে। তাই সবাইকে স্বাস্থ্যবিধি অবশ্যই মেনে চলতে হবে। নইলে দেশে আবার বড় ধরনের বিপর্যয় নেমে আসতে পারে। যেটা সামাল দেওয়া কঠিন হবে। কারণ বিশ্বব্যাপী করোনা ভাইরাসের নতুন ধরন ওমিক্রনকে মৃদু বলে অবহেলা করলে ভুল হবে। 

বিশেষজ্ঞরা বলছেন, সংক্রমণের ঊর্ধ্বগতির জন্য স্ট্রেইন দায়ী কি না?- কিছুদিন ধরে আমরা এ বিষয়ে আলোচনা দেখছি। এটি আসলে বিভ্রান্তি ছড়াচ্ছে। প্রথমত করোনাভাইরাস প্রতিনিয়ত তার রূপ পাল্টাচ্ছে অর্থাৎ তার মিউটেশন হচ্ছে। এটি একটি চলমান প্রক্রিয়া। সেই চলমান প্রক্রিয়ায় নানা রকম স্ট্রেইনের কথা গবেষকরা জিনোম সিকোয়েন্সিংয়ের মাধ্যমে পেয়েছে। কিন্তু মূল কথা হচ্ছে, স্ট্রেইন যাই হোক না কেনো উপসর্গ বা লক্ষণ বা রোগের তীব্রতা কিন্তু একই রকম। কাজেই স্ট্রেইন নিয়ে আমাদের বিভ্রান্ত হওয়ার কোনো সুযোগ নেই। আমাদের মাস্ক অবশ্যই পরতে হবে। সামাজিক দূরত্ব মেনে চলতে হবে এবং সাবান দিয়ে হাত ধুতে হবে। আমরা স্বাস্থ্যসুরক্ষার জন্য যে শিষ্টাচারগুলো আমরা শিখেছি সেগুলো অবহেলা না করে মেনে চলি। তাহলেই নতুন সংক্রমণ থেকে মুক্তি পাওয়া যাবে। আমরা অবশ্যই চাই না যে, বাংলাদেশের আবার মৃত্যুর মিছিল শুরু হোক। তাই সবার উচিৎ হবে করোনার স্বাস্থ্যসুরক্ষার শিষ্টাচারগুলো মেনে চলা।


প্রধান সম্পাদকঃ সৈয়দ বোরহান কবীর
ক্রিয়েটিভ মিডিয়া লিমিটেডের অঙ্গ প্রতিষ্ঠান

বার্তা এবং বাণিজ্যিক কার্যালয়ঃ ২/৩ , ব্লক - ডি , লালমাটিয়া , ঢাকা -১২০৭
নিবন্ধিত ঠিকানাঃ বাড়ি# ৪৩ (লেভেল-৫) , রোড#১৬ নতুন (পুরাতন ২৭) , ধানমন্ডি , ঢাকা- ১২০৯
ফোনঃ +৮৮-০২৯১২৩৬৭৭