ইনসাইড টক

‘ভালো জিনিস সংক্ষিপ্ত হয়না’


প্রকাশ: 17/02/2022


Thumbnail

বিশ্ববিদ্যালয় মঞ্জুরি কমিশনের (ইউজিসি) সাবেক চেয়ারম্যান অধ্যাপক আবদুল মান্নান বলেছেন, বাংলাদেশে কিছুদিন আগে একটা পরিসংখ্যান দিয়েছে ইউনিসেফ, যেখানে দেখা যায় শিক্ষাপ্রতিষ্ঠান বন্ধের শীর্ষে বাংলাদেশ। আমাদের টিকা আছে, টিকা দিচ্ছি কিন্তু শিক্ষাপ্রতিষ্ঠান সংশ্লিষ্টদের যাদের অগ্রাধিকার দেয়া খুবই দরকার ছিলো সেটা আমরা দিতে পারিনি এবং দেওয়ার চেষ্টা করিনি। এখন যাদের শিক্ষাপ্রতিষ্ঠান খুলছে তারা তো প্রাপ্তবয়স্ক এবং তাদের টিকা দেওয়া হয়েছে। সরকার তো সিদ্ধান্ত নিয়েছে ছোট বাচ্চাদের টিকা পরে দিবে।

প্রাথমিক বন্ধ রেখে শিক্ষাপ্রতিষ্ঠান খুলে দেওয়া, বিশ্ববিদ্যালয়ে সংক্ষিপ্ত সিলেবাসে ভর্তি পরীক্ষাসহ নানা বিষয় নিয়ে বাংলা ইনসাইডার এর সঙ্গে একান্ত আলাপচারিতায় এসব কথা বলেছেন অধ্যাপক আবদুল মান্নান। পাঠকদের জন্য অধ্যাপক আবদুল মান্নান এর সাক্ষাৎকার নিয়েছেন বাংলা ইনসাইডার এর নিজস্ব প্রতিবেদক মাহমুদুল হাসান তুহিন।

অধ্যাপক আবদুল মান্নান বলেন, অনেক দেশে কিন্তু বাচ্চাদের টিকা না দিয়েই স্কুল খুলেছে-বন্ধ হয়েছে। এখানে অন্য সমস্যা হচ্ছে বাবা-মা চাকরী করে। ফলে বাচ্চাকে কোথায় রেখে যাবে? সপ্তাহখানেক আগে জার্মানি থেকে একজন বাংলাদেশী ডাক্তার একটি গণমাধ্যমে বলেছেন, সেখানে সব বাচ্চাদের স্কুল খোলা। কেন বাচ্চাদের স্কুল খোলা প্রশ্ন করতে তিনি বলেন, যেহেতু ওদের বাবা-মা চাকরী করেন, ওদের বাচ্চা রেখে যাবেন কোথায়। আবার আমেরিকায় দেখা যায় বাচ্চাদের স্কুল খুলে দেয়ার পর সংক্রমণ বেড়েছে, আবার বন্ধ করে দিয়েছে। তাই, ২২ ফেব্রুয়ারি স্কুল খুলে দিক, তারপর সেটার প্রভাব কি হয় সেটা দেখা যাক।

তিনি আরও বলেন, বাচ্চাদের স্কুলের ক্ষেত্রে আমি মনে করে যে, স্বাস্থ্য সুরক্ষা বিধি মানতে হবে যদিও আমরা মানতে চাই না। বাচ্চারা মানলেও অভিভাবকরা মানতে চায় না, স্কুলের সামনে যেয়ে জড়ো হন। স্বাস্থ্য সুরক্ষা বিধি মানার ক্ষেত্রে এগুলো যদি কঠোর হস্তে আইনশৃঙ্খলা রক্ষাকারী বাহিনী রোধ করে তাহলে স্কুলগুলো খুলে দেয়া যেতে পারে। ভারতের পশ্চিমবঙ্গে বাচ্চাদের স্কুলগুলো আজ খুলে দিচ্ছে। ওদের এক বেঞ্চে যেখানে ৪ জন বসতো সেখানে দুই প্রান্তে দুইজন বসছে। তো সেভাবে যদি আমরাও কয়েক সপ্তাহ করতে পারি আমার মনে হয় সমস্যার সমাধান হতে পারে।

দীর্ঘ সময় শিক্ষাপ্রতিষ্ঠান বন্ধের ফলে শিক্ষার্থীদের যে মানসিক ক্ষতি সাধন হয়েছে সেই প্রসঙ্গে অধ্যাপক আবদুল মান্নান বলেন, মহামারি একটি ইউনিক (অদ্বিতীয়) সমস্যা। আমাদের এই প্রজন্ম এটি কখনো দেখেনি। আমাদের সময় ষাটের দশকের দিকে হংকং ফ্লু নামক ভাইরাসের জন্য সব স্কুল ১ মাস বন্ধ ছিলো। কিন্তু এখন তো প্রায় দুই বছর বন্ধ। একটা হয়েছে শিক্ষার ক্ষতি, অন্যটি হয়েছে বাচ্চাদের ওপর মানসিক চাপ। এই যে ক্ষতিটা, এটা খুব সহজে যাবে বলে আমার মনে হয়না। আর এই ধরণের একটি ইউনিক সমস্যার সৃজনশীল সমাধানের চিন্তা করার দরকার ছিলো। এটা আমি অনেকবার বলেছি কিন্তু মনে হয়না এটা নিয়ে বেশি কেউ চিন্তা করেছে। দুইটি শিফট করে শিক্ষকদের প্রণোদনা দিয়ে এই সমস্যাগুলো সমাধান করা যেত। গার্মেন্টসসহ সব জায়গায় যদি প্রণোদনা দিতে পারে তাহলে শিক্ষকদের কেন প্রণোদনা দেয়া যাবে না? যে বিষয়টি জাতির জন্য সবচেয়ে বেশি গুরুত্বপূর্ণ সেখানেই তো প্রণোদনা দেয়ার চিন্তা করতে হবে। একটা ক্লাস ভেঙ্গে দুইটি শিফট করা যায়। একই শিক্ষক যেহেতু পড়াবেন, তাকে দ্বিগুণ বেতন না দিলেও ৩০-৪০ শতাংশ দিয়ে তাকে দিয়ে ওই ক্লাসগুলো নিতে পারতো। পৃথিবীতে এমন কোন সমস্যা নেই যেটার সমাধান নাই।

বিশ্ববিদ্যালয়ে সংক্ষিপ্ত সিলেবাসে ভর্তি পরীক্ষা নেওয়া যথেষ্ট কি প্রশ্ন করলে অধ্যাপক আবদুল মান্নান বলেন, ভালো জিনিস সংক্ষিপ্ত হয়না। অনেক সময় বাধ্য হয়ে আমাদের করতে হয়। কিন্তু ভালো জিনিস কখনোই সংক্ষিপ্ত হয়না।


প্রধান সম্পাদকঃ সৈয়দ বোরহান কবীর
ক্রিয়েটিভ মিডিয়া লিমিটেডের অঙ্গ প্রতিষ্ঠান

বার্তা এবং বাণিজ্যিক কার্যালয়ঃ ২/৩ , ব্লক - ডি , লালমাটিয়া , ঢাকা -১২০৭
নিবন্ধিত ঠিকানাঃ বাড়ি# ৪৩ (লেভেল-৫) , রোড#১৬ নতুন (পুরাতন ২৭) , ধানমন্ডি , ঢাকা- ১২০৯
ফোনঃ +৮৮-০২৯১২৩৬৭৭