ইনসাইড বাংলাদেশ

নতুন নির্বাচন কমিশনের সামনে যে ৫ চ্যালেঞ্জ


প্রকাশ: 17/02/2022


Thumbnail

নতুন নির্বাচন কমিশন (ইসি) গঠনের লক্ষ্যে ইতোমধ্যে কাজ করছে সার্চ কমিটি। কমিশন গঠনে তাড়াহুড়া না করে বেশকিছু সাহসী পদক্ষেপ নিয়েছে সার্চ কমিটি। সকল রাজনৈতিক দলসহ দেশের বিভিন্ন প্রতিষ্ঠান এবং সাধারণ জনগণের কাছেও ইসি গঠনে নাম চাওয়া হয়। এরপর দেশের ৬০ জন বিশিষ্টজনের সঙ্গে ৩ ধাপে বৈঠক করে সার্চ কমিটি। এরপর বৈঠক করে ৮ জন জ্যেষ্ঠ সাংবাদিকের সঙ্গে। আগামী শনিবার (১৯ ফেব্রুয়ারি) আবার বৈঠকে বসছে সার্চ কমিটি। ওইদিনই নতুন নির্বাচন কমিশনার হিসেবে কারা থাকতে পারেন তা নির্ধারিত হয়ে যেতে পারে বলে বিভিন্ন সূত্র নিশ্চিত করেছে। সার্চ কমিটি ওইদিন ১০ জনের নাম চূড়ান্ত করতে পারে এবং এই ১০ জনের নামের তালিকা রোববার মহামান্য রাষ্ট্রপতির কাছে দেয়া হতে পারে বলে একাধিক সূত্র জানিয়েছে। তবে যাদের নিয়ে নতুন ইসি গঠিত হোক না কেন, তাদের সামনে ৫টি বড় ধরণের চ্যালেঞ্জ রয়েছে বলেই মনে করছেন রাজনৈতিক বিশ্লেষকরা। সেই চ্যালেঞ্জগুলোর মধ্যে রয়েছে:

১. হুদা কমিশনের নেতিবাচক প্রভাব: নতুন নির্বাচন কমিশনের সামনে যে চ্যালেঞ্জটি সবচেয়ে বড় এবং মুখ্য হয়ে দাঁড়াবে সেটি হলো সদ্য বিদায়ী হুদা কমিশনের নেতিবাচক প্রভাব। হুদা কমিশনে প্রধান নির্বাচন কমিশনার কে এম নুরুল হুদা এবং নির্বাচন কমিশনার মাহবুব তালুকদারের পরস্পর বিপরীতমুখী বক্তব্য, পাশাপাশি হুদা-তালুকদারের বাকযুদ্ধ নির্বাচন কমিশনকে জনগণের কাছে একটি ভাঁড়ে পরিণত করেছে। এর ফলে নির্বাচন কমিশনের কার্যক্রম, গ্রহণযোগ্যতা নিয়ে প্রশ্ন উঠেছে। নির্বাচন কমিশনের এরকম নেতিবাচক প্রভাব কাটিয়ে নতুন ইসি সকলের কাছে কীভাবে ইতিবাচক হয়ে উঠবে, সেটাই দেখার বিষয়।

২. বিরোধী রাজনৈতিক দল এবং সুশীল সমাজের কাছে গ্রহণযোগ্যতা: নির্বাচন কমিশন গঠনের লক্ষ্যে আইন প্রণয়নসহ সার্চ কমিটি রাষ্ট্রপতির কাছে প্রস্তাবিত নাম প্রকাশের জন্য দীর্ঘদিন ধরেই দাবি করে আসছে সুশীল সমাজ। অবশেষে জাতীয় সংসদে নির্বাচন কমিশন গঠন আইন পাশ হয় এবং আইন অনুযায়ী প্রথমবারের মতো গঠিত হচ্ছে নির্বাচন কমিশন। সেই সাথে সুশীল সমাজের দাবি অনুযায়ী প্রকাশ করা হয়েছে সার্চ কমিটিতে প্রস্তাবিত নামের তালিকা। ফলে নতুন নির্বাচন কমিশন সকলের কাছে গ্রহণযোগ্যতা পাবে বলেই মনে করেন রাজনৈতিক বিশ্লেষকরা। ইসি গঠনে প্রধান বিরোধী রাজনৈতিক দল বিএনপিকে নাম প্রস্তাবে আহ্বান জানানো হলেও ইসি গঠন প্রক্রিয়ায় তারা অংশগ্রহণ করেনি। ফলে বিরোধী রাজনৈতিক দল এবং সুশীল সমাজের কাছে গ্রহণযোগ্য হয়ে ওঠাও নতুন ইসির জন্য একটি কঠিন চ্যালেঞ্জ।

৩. ভোটার তালিকা হালনাগাদ করা: আগামী জাতীয় সংসদ নির্বাচনকে ঘিরে সারাদেশে ভোটার তালিকা হালনাগাদ করতে হবে নতুন নির্বাচন কমিশনকে। নতুন ইসি গঠনের পর দুই বছরের কম সময় পাবে ভোটার তালিকা হালনাগাদ করার জন্য। তাই এটি নতুন ইসির সামনে এটি একটি চ্যালেঞ্জ হিসেবেই আবির্ভূত হবে।

৪. ইভিএম নাকি ব্যালট: আগামী জাতীয় সংসদ নির্বাচন ইভিএম এর মাধ্যমে হবে নাকি ব্যালট পেপারের মাধ্যমে হবে তা নিয়ে ইতোমধ্যে আলোচনা শুরু হয়েছে। কারণ, ইভিএম এর মাধ্যমে নির্বাচন নিয়ে বেশকিছু বিতর্ক রয়েছে এবং ইভিএম এর নির্বাচনে কারচুপির অভিযোগও করেছে বিএনপিসহ বিরোধ রাজনৈতিক দল। ফলে ইভিএম নাকি ব্যালট, তা নিয়েও একটি কঠিন চ্যালেঞ্জ অপেক্ষা করছে নতুন ইসির জন্য। 

৫. জনগণের মাঝে ভোট উৎসবে ফিরিয়ে আনা: দেশের প্রধান বিরোধী রাজনৈতিক দল বিএনপি নির্বাচনে অংশগ্রহণ না করায় বিভিন্ন নির্বাচনে প্রার্থীরা বিনা প্রতিদ্বন্দ্বিতায় নির্বাচিত হয়। এর ফলে নির্বাচনে জনগণ তাদের ভোটাধিকার প্রয়োগ করতে পারছে না এবং জনগণের ভোট উৎসব থেকে বঞ্চিত হচ্ছে। তাই নির্বাচনে সকল রাজনৈতিক দলের অংশগ্রহণ নিশ্চিত করে জনগণের মাঝে ভোট উৎসবে ফিরিয়ে আনাই নতুন ইসির জন্য একটি চ্যালেঞ্জ বলেই মনে করেন রাজনৈতিক বিশ্লেষকরা।

সার্চ কমিটিতে প্রস্তাবিত যে ৩২২ জনের নাম রয়েছে তাঁর মধ্যে সর্বজন গ্রহণযোগ্য বেশ কয়েকজনের নাম রয়েছে। সার্চ কমিটি সেই তালিকা থেকে যে ১০ জনের নাম চূড়ান্ত করবে তা নিঃসন্দেহে হুদা কমিশনের থেকে ভালো হবে বলেই মনে করছেন রাজনৈতিক বিশ্লেষকরা। সেই নতুন ইসি এসব চ্যালেঞ্জ মোকাবেলায় কতটা সক্ষম হবে সেটাই দেখার বিষয়।


প্রধান সম্পাদকঃ সৈয়দ বোরহান কবীর
ক্রিয়েটিভ মিডিয়া লিমিটেডের অঙ্গ প্রতিষ্ঠান

বার্তা এবং বাণিজ্যিক কার্যালয়ঃ ২/৩ , ব্লক - ডি , লালমাটিয়া , ঢাকা -১২০৭
নিবন্ধিত ঠিকানাঃ বাড়ি# ৪৩ (লেভেল-৫) , রোড#১৬ নতুন (পুরাতন ২৭) , ধানমন্ডি , ঢাকা- ১২০৯
ফোনঃ +৮৮-০২৯১২৩৬৭৭