ইনসাইড টক

‘জামায়াতের সঙ্গে এখন গলা মিলিয়েছে বিএনপি’


প্রকাশ: 19/02/2022


Thumbnail

একাত্তরের ঘাতক দালাল নির্মূল কমিটির সভাপতি শাহরিয়ার কবির বলেছেন, কোন দল কার নাম দিয়েছে, এটি যেন প্রকাশিত না হয়, সে কথা আমরা সার্চ কমিটির বৈঠকেই বলেছি। কারণ সার্চ কমিটির কাছে কেউ তো কাউকে জিজ্ঞেস করে নাম দেয় নাই। যেখানে জিজ্ঞেস করে দেওয়া হচ্ছে না, সেখানে আমাদের মতো রাজনৈতিকভাবে বিভাজিত, মুক্তিযুদ্ধের পক্ষ-বিপক্ষ শক্তির দেশে নাম কিভাবে প্রকাশ করে। এখানে নাম তো দেওয়া হয়েছে মোটামুটি নিরপেক্ষ ব্যক্তিদের। অন্তত সেই স্পিরিটে নামগুলো দেওয়া হয়েছে। একজন দল নিরপেক্ষ ব্যক্তি তো আপত্তি জানাতে পারে কেন আওয়ামী লীগ তার নাম দিলো বা বিএনপি দিলো অথবা ক/খ/গ পার্টি তার নাম দিলো। এখন আমাদের এখানে কেউ নাম দিলেই তো তাকে দলীয় ট্যাগ করে দেওয়া হয়। সেজন্য আমরা তখনই বলেছি নাম প্রকাশ করলে যার নাম দেওয়া হয়েছে, তাকেই প্রকারন্তরে অপমান করা হবে। 

সার্চ কমিটির নাম প্রকাশ, নির্বাচন কমিশন গঠন, আগামী জাতীয় নির্বাচনসহ বিভিন্ন বিষয়ে বাংলা ইনসাইডার এর সঙ্গে একান্ত আলাপচারিতায় শাহরিয়ার কবির এসব কথা বলেছেন। পাঠকদের জন্য শাহরিয়ার কবির এর সাক্ষাৎকার নিয়েছেন বাংলা ইনসাইডার এর নিজস্ব প্রতিবেদক অলিউল ইসলাম।

শাহরিয়ার কবির বলেন, ধরুন, আমার নাম জামায়াতে ইসলাম প্রস্তাব করলো। তখন সবাই তো বলবে, দেখো তলে তলে শাহরিয়ার কবির জামায়াতের সাথে সম্পর্ক রাখে। আমাদের রাজনীতিতে এরকম একটি পরিস্থিতি তৈরি হয়ে গেছে মুক্তিযুদ্ধের পক্ষ-বিপক্ষ নিয়ে। সুতরাং আমি মনে করি না, নাম কে দিয়েছে তা প্রকাশ করা হউক। নামগুলো গুরুত্বপূর্ণ, কে দিয়েছে সেটা গুরুত্বপূর্ণ না।

নিরপেক্ষ ইসি প্রসঙ্গে শাহরিয়ার কবির বলেন, আমরা আশা করছি নিরপেক্ষ ইসি পাবো। কারণ এবার প্রচুর নাম গেছে এবং এই নামগুলোর ভেতরে বেশিরভাগ নামই নির্বাচন কমিশনার হওয়ার যোগ্য বলে আমি মনে করি। নামগুলোর যোগ্যতা বিবেচনা করার প্রক্রিয়ায় আমরা সার্চ কমিটিকে বলেছি, ব্যক্তিটিকে মুক্তিযুদ্ধের চেতনার সাথে দায়বদ্ধ থাকতে হবে। তাকে সৎ হতে হবে। দক্ষ হতে হবে এবং সাহসী হতে হবে। এ জিনিসগুলো দরকার। শুধু সততা থাকলে হবে না, দক্ষতা যদি না থাকে। দক্ষতা থাকলে হবে না, যদি না সাহস থাকে। আমরা সাহসের উদাহরণ দিয়েও বলেছি। যেমন নির্বাচন কমিশন যদি চায় তাহলে প্রধানমন্ত্রী যদি নির্বাচনী আচরণবিধি লঙ্ঘন করে, তাকে জবাবদিহিতার কাঠগড়ায় দাঁড় করানোর ক্ষমতা থাকতে হবে নির্বাচন কমিশনের। সংবিধান তো তাকে সেই ক্ষমতা দিয়েছে। কিন্তু এখন পর্যন্ত কোনো নির্বাচন কমিশনার এ ধরণের দৃষ্টান্ত দেখাতে পারেনি। 

সুষ্ঠু নির্বাচন নিয়ে তিনি বলেন, শুধু সরকার না, অনেকগুলো স্টেক হোল্ডারের ইচ্ছের উপর নির্ভর করে নির্বাচনটি সুষ্ঠু হবে কি হবে না। সরকারের সহযোগিতার ব্যাপার আছে, সদিচ্ছার ব্যাপার আছে। বিরোধীদলের সদিচ্ছার ব্যাপার আছে। এখন আমি নির্বাচন করবো না, এটি ঠিক আছে। নির্বাচন বয়কট করার স্বাধীনতা একটি দলের আছে। কিন্তু বয়কট করার নামে যদি আগুন-সন্ত্রাস করি, ভোটবুথ জ্বালিয়ে দেই, ভোটারদের বাড়িতে আগুন ধরিয়ে দেই, ভোটারদের অত্যাচার করি, ভয়-ভীতি দেখাই (২০০১ সালে আমরা যেটা দেখেছিলাম), এটা কি কাম্য কখনো? এটা তো কাম্য হতে পারে না। সেখানে বিরোধীদল যারা এই নির্বাচন বয়কট করবে, তারাও একটি স্টেক হোল্ডার। তারপর যারা ভোট দিবে, তারাও স্টেক হোল্ডার। এখানে নির্বাচন কমিশন কিছুই করতে পারবে না, যদি আগের দিন রাতে ভোট বেঁচা-কেনা হয়ে যায়। ভোট বেঁচা-কেনা তো বাংলাদেশের রাজনীতিতে একটি অপসংস্কৃতিতে পরিণত হয়েছে। এখানে মানুষ টাকা দিয়ে ভোট বিক্রি করে দেয়, দেহ বিক্রির মতো। 

আগামী নির্বাচন প্রসঙ্গে শাহরিয়ার কবির বলেন, বিএনপি যদি তাদের আচরণ না পাল্টায়, তাহলে তো সমস্যা থেকেই যায়। জামায়াতের তো এজেন্ডা আছে। জামায়াতকে নির্বাচনের অযোগ্য ঘোষণা করা হয়েছে। তত্ত্বাবধায়ক সরকারের দাবি আদায় না হলে জামায়াত কোনোভাবেই এখন বাংলাদেশে নির্বাচন হতে দিবে না। এখন জামায়াতের সঙ্গে বিএনপি গলা মিলিয়েছে। এই দুই স্বাধীনতাবিরোধী যদি এক হয়ে যায়, তাহলে সুষ্ঠুভাবে নির্বাচন সম্পাদন স্বয়ং খোদা এসেও করতে পারবেন না।


প্রধান সম্পাদকঃ সৈয়দ বোরহান কবীর
ক্রিয়েটিভ মিডিয়া লিমিটেডের অঙ্গ প্রতিষ্ঠান

বার্তা এবং বাণিজ্যিক কার্যালয়ঃ ২/৩ , ব্লক - ডি , লালমাটিয়া , ঢাকা -১২০৭
নিবন্ধিত ঠিকানাঃ বাড়ি# ৪৩ (লেভেল-৫) , রোড#১৬ নতুন (পুরাতন ২৭) , ধানমন্ডি , ঢাকা- ১২০৯
ফোনঃ +৮৮-০২৯১২৩৬৭৭