লিভিং ইনসাইড

তারুণ্য এভাবেও উপভোগ করা যায়

নিজস্ব প্রতিবেদক

প্রকাশ: 12/12/2017


Thumbnail

আয়মান সাদিক নামটি দেশে এখন বেশ পরিচিত। বিশেষ করে তরুণদের কাছে। পড়ালেখা নিয়ে যে কোনো সমস্যার সমাধানের নাম এখন আয়মান সাদিক। সম্প্রতি তাকে শিক্ষামন্ত্রী বানানোর দাবিতে ফেসবুক ইভেন্ট খোলা- নানা বিষয়ে তিনি কথা বলেছেন বাংলা ইনসাইডারের সঙ্গে।

আপনাকে শিক্ষামন্ত্রী বানানোর দাবিতে ফেসবুকে এক ইভেন্ট খুব সাড়া ফেলেছে; এ সম্পর্কে জানেন কিছু?

ফার্স্ট অফ অল আমি একজন সাধারণ শিক্ষক পার্থক্যটা শুধু আমি অনলাইনে পড়াই। আমার পড়াতে অনেক ভালো লাগতো। আমি যখন পড়াই স্টুডেন্টরা অবাক হয়ে তাকিয়ে থাকে। তারা বলে এভাবে তো আগে পড়িনি। তাদের এই নতুন কিছু জানা- এই জিনিসটা আমি অনেক উপভোগ করি। তাই আমি অনলাইনে ক্লাস নিই, লাইভে ক্লাস নিই। সবই শুধু আমার ভালো লাগে তাই। আর এটাই চালিয়ে যেতে চাই। আর কোনো যোগ্যতা আমার নাই। আমি ইভেন্টটা দেখে ভয় পেয়েছি। আমার তো এ বিষয়ে ধারণাও ছিল না। আর এই জিনিসটা হয়ত অনেকে ভুলও বুঝতে পারে। ভাবতে পারে, আমরাই এটা করার চেষ্টা করছি যেটা একেবারেই ভুল। ইভেন্ট যেহেতু বড় হয়ে গেছে, তাই রিপোর্টে কাজ হয়নি। ইভেন্ট পেইজে আমরা অনেকবার নক করে বলেছি, ভাই প্লিজ ইভেন্টটা নামান। সবাই ভাবছে, আমরাই কাজটা করছি। মানুষ তো আমাদের গালি গালাজ করবে। কিন্তু এটা মনে হয় ফেক প্রোফাইল ছিলো। কেউ রেসপন্স করেনি।

যারা এই ধরনের কাজ করে তাদের আপনি কি বলতে চান?

আসলে বাঙালি অনেক আবেগি জাতি। আবেগের বশবর্তী হয়ে আমরা অনেক কাজ করে ফেলি। যারা কাজটা করেছে তাদের ইনটেনশনটা হয়ত ভালো ছিল, কিন্তু তারা আমার দিকটা চিন্তা করেনি। এই ধরনের কাজের জন্য উল্টো আমার সম্পর্কে মানুষের মনে খারাপ ধারণা হতে পারে। কারো আবেগ তো আর আমার পক্ষে কন্ট্রোল করা সম্ভব নয়। যখন আমরা আরো প্র্যাক্টিকাল হয়ে চিন্তা করতে শিখব সরকারি সিস্টেমটা আরো ভালো করে বুঝব, তখন হয়ত এই ধরনের কাজ আর কেউ করবে না। তাই সামনে আমরা এই বিষয়গুলো নিয়ে একটা লেকচার রেডি করব।

নিজের তারুণ্য ভিন্নভাবে উপভোগ করার তাড়নাটা এলো কিভাবে?

অনেকগুলো অভিজ্ঞতার ফলাফল এটা। বিশেষ করে যখন আমি মেন্টরসে ক্লাস নিতাম, তখন এরকম অনেক স্টুডেন্ট দেখেছি। অনেকে কোনোমতে কোচিংয়ের টাকাটা দিতে পারলেও এখানে থাকা-খাওয়ার টানাটানিতে মাঝপথে ছেড়ে দিত। আবার অনেকে রিকোয়েস্ট করত যে, ভাইয়া কোচিংয়ে ভর্তির টাকা দেয়ার সামর্থ্য নেই। প্লিজ একটু হেল্প করেন। নিজের তো এত টাকা নেই যে আমি কাউকে টাকা দিয়ে হেল্প করব। আবার কোচিংয়েও ৫০ শতাংশ ডিসকাউন্ট চাওয়া সম্ভব নয়। আবার স্টুডেন্টকেও বলতে পারি না, কোনো উপায় নাই; গ্রামে ফিরে যাও। এরকম এক দুজন না অনেক স্টুডেন্ট থাকত। আমি হয়ত তাদেরই দেখছি, যারা কোচিংয়ে আসত। কিন্তু এরকম হাজার হাজার স্টুডেন্ট আছে, যারা টাকার অভাবে বা ঢাকা শহরে থাকার জায়গার অভাবে পড়ার সুযোগ পায়না। স্টুডেন্টদের সমস্যাগুলো আমাকে খুব নাড়া দেয়। আর সমস্যা তো হাজারটা আছে। কিন্তু মানুষ যেটা খুব কাছ থেকে নিজে দেখে, সেটাই সে বেশি ফিল করে। ওই সমস্যাগুলো খুব কাছে থেকে দেখেছি। তাই এটা নিয়েই কাজ করার তাড়নাটা বেশি বোধ করেছি। এই সমস্যাগুলো বেশি গুরুত্বপূর্ণ মনে হয়েছে আমার ।তাই এটাই নেশা-পেশা হয়ে গেছে।

‘টেন মিনিট’ কে নেশা পেশা বানাতে গিয়ে কি আড্ডাবাজি প্রেম একটুও মিস করেননি?

হ্যাঁ। অনেক আড্ডা মিস করেছি, অনেক স্টে ওভার মিস করেছি, বার্থ ডে পার্টি, সারপ্রাইজ পার্টি মিস করেছি। অনেক সময় ফ্রেন্ডরা বিরক্ত হয়েছে, যে সারাক্ষণ খালি ব্যস্ত আর ব্যস্ত। ওই সময়টা তো আর ফিরে পাবোনা। কারণ সব বয়সের একটা আলাদা আবেদন থাকে। আর এখন তো সবাই ব্যস্ত। তাই ইউনিভার্সিটি লাইফের কিছু পার্ট হয়ত মিস করেছি। যেমন একটা বিগেস্ট পার্ট আমি বলব ব্যাচ ট্রিপ।

অনেক ইন্টারভিউ দেন আয়মান সাদিক। তাকে প্রশ্ন করা হয়েছিলো ইন্টারভিউয়ে কোন ধরনের প্রশ্ন শুনতে ভালো লাগে…

বেশিরভাগ ইন্টারভিউয়ের কমন প্রশ্ন থাকে…

শুরুটা কেমন ছিল ?

শুরুতে কিকি বাধা বা সমস্যা পেয়েছেন ?

চাকরি না করে কেন টেন মিনিট স্কুল ?

সমাজ কি বলত ?

এত দূর আসার পেছনে কে কে সাপোর্ট করেছে?

কিন্তু আমার পছন্দের প্রশ্ন হল…

-আপনাদের এখানে তো কোনো ফুল টাইম এমপ্লোয়ি নাই আপনি বাদে, তাহলে পার্টটাইম এমপ্লোয়ি নিয়ে কাজ করেন কিভাবে?

-আপনার এখানে এখনো অনেক কলেজ পড়ুয়া স্টুডেন্ট কাজ করে তারা কিভাবে কাজ করে?

-আমরা শুনেছি আপনারা নাইটে কাজ করেন। রাতে ভিডিও করেন সকাল বেলা বের হয়ে আসেন। এই যে নাইট শিফটে কিভাবে কাজ করেন ?

-আপনি তো ম্যাথ আর ইংলিশ পড়াতেন এখন আবার প্রেজেন্টেশনের ক্লাস নেন কেন?

-একই টিচার কেমিস্ট্রি বায়োলজি ক্লাস নেয় এটা কিভাবে সম্ভব?

-এই ধরনের প্রশ্ন যেটার মধ্যে দিয়ে মানুষ জানতে পারবে টেন মিনিট স্কুল আসলে কিভাবে কাজ করে।

সময়ের অভাবে ও ব্যস্ততার তাড়ায় তিনি এই প্রশ্ন গুলোর উত্তর না দিতে পারলেও অন্য কোনোদিন উত্তর দেয়ার আশ্বাস দিয়েছেন।


বাংলা ইনসাইডার/এমআর/টিবি



প্রধান সম্পাদকঃ সৈয়দ বোরহান কবীর
ক্রিয়েটিভ মিডিয়া লিমিটেডের অঙ্গ প্রতিষ্ঠান

বার্তা এবং বাণিজ্যিক কার্যালয়ঃ ২/৩ , ব্লক - ডি , লালমাটিয়া , ঢাকা -১২০৭
নিবন্ধিত ঠিকানাঃ বাড়ি# ৪৩ (লেভেল-৫) , রোড#১৬ নতুন (পুরাতন ২৭) , ধানমন্ডি , ঢাকা- ১২০৯
ফোনঃ +৮৮-০২৯১২৩৬৭৭