ইনসাইড টক

‘জনপ্রিয় নেতাদের বহিষ্কার আগামী নির্বাচনে পরাজয়ের আলামত’


প্রকাশ: 20/02/2022


Thumbnail

নানা সংকটে বিপর্যস্ত বিএনপি। কেন্দ্রীয় নেতৃত্বের একের পর এক ভুলে তৃণমূলের নেতাকর্মীরা অনেকটাই দিশাহারা। দ্বন্দ্ব-কোন্দলে ক্ষত-বিক্ষত সংগঠনটি। এসবের মাঝেই বিএনপি থেকে বহিষ্কার করা হচ্ছে জনপ্রিয় সব নেতাকে। সবশেষ আজ দলীয় শৃঙ্খলা পরিপন্থী কর্মকাণ্ডে জড়িত থাকার অভিযোগে বিএনপির সাবেক সংসদ সদস্য মেজর (অব.) আখতারুজ্জামান রঞ্জনকে দল থেকে বহিষ্কার করা হয়। এ নিয়ে বাংলা ইনসাইডারের সাথে কথা বলেছেন সদ্য বিএনপি থেকে বহিস্কৃত আখতারুজ্জামান রঞ্জন। পাঠকদের জন্য মেজর (অব.) আখতারুজ্জামান রঞ্জন এর সাক্ষাৎকার নিয়েছেন বাংলা ইনসাইডার এর নিজস্ব প্রতিবেদক অলিউল ইসলাম


বাংলা ইনসাইডার: পদ থেকে বহিষ্কার করে দল আপনার প্রতি অবিচার করেছে কিনা?

আখতারুজ্জামান রঞ্জন: দল অবিচার করবে কেন? দল যা করে, তাই সঠিক। দল তো কখনো অবিচার করে না। আমি আমার ফেসবুকে স্ট্যাটাস দিয়ে সব বলেছি। এর বাইরে আর কি বলবো। দল যেখানে সবাইকে ডাকতেছে কাছে নিবে, সেখানে একজনকে দল থেকে বের করে দেওয়ার মানে কি, আমি জানি না। 

বাংলা ইনসাইডার: ভিন্নমত পোষণ কিংবা দলে গুণগত পরিবর্তন কিংবা অনিয়মের প্রতিবাদ জানিয়ে কথা বলার কারণেই কি এই বহিষ্কারাদেশ?

আখতারুজ্জামান রঞ্জন: দেখেন আমি তো জানি না কেন এটি করা হয়েছে। শুধু জানি আমাকে দল থেকে বহিষ্কার করা হয়েছে। বহিষ্কার করার সময় আমাকে তো বলে নাই, জিজ্ঞেসও করে নাই। বহিষ্কার করার সময় স্থায়ী কমিটির অনুমোদন নেওয়া হয়েছিল কিনা, তাও বলতে পারবো না। এ প্রশ্নগুলো আমাকে করে লাভ কি? এগুলো বরং দলকে জিজ্ঞেস করুন। দল কেন এই সিদ্ধান্ত নিয়েছে তা জানার সুযোগ তো আমার নেই। দল থেকে বাদ দিয়েছে, এটি শুধু জানি। 

বাংলা ইনসাইডার: আপনার কি মনে হয় দলের শীর্ষনেতৃত্বকে ভুল বুঝিয়ে দলের কেন্দ্রীয় একাধিকনেতা আপনাকে দল থেকে বহিষ্কারের প্রক্রিয়া সম্পন্ন করেছে?

আখতারুজ্জামান রঞ্জন: এগুলো বলে লাভ কি? একজন নেতার যদি যোগ্যতা থাকে, তাকে কেউ ভুল বুঝাতে পারে? আমার তো মনে হয় পারে না। নেতার যদি যোগ্যতা থাকে, তাকে বুঝিয়ে কেউ কিছু করাতে পারে না। ফলে তারা যেটি করেছে, ওটাকেই আমার সঠিক বলতে হবে। আর যদি ভুল করে থাকে, সেটিও তারা কাজের মাধ্যমেই প্রমাণ করেছে। এখন আমি মনে করি সঠিক সিদ্ধান্ত। কারণ দল সিদ্ধান্ত নিয়েছে। দল ভুল করতে পারে না।   

বাংলা ইনসাইডার: আপনার কি মনে হয় এই সিদ্ধান্তের কারণে ভবিষ্যতে নিষ্ঠাবান, ত্যাগী নেতৃত্ব প্রশ্নবিদ্ধ হলো, নেতাকর্মীদের আস্থার সংকটও সৃষ্টি হলো?

আখতারুজ্জামান রঞ্জন: এটি তো গত ২০ বছর ধরেই হচ্ছে। এটিই আমরা গত ২০ বছর ধরে দেখছি। বিএনপি বারবার নিচের দিকেই যাচ্ছে। আমাদের এই অধ:পতন দলীয় সিদ্ধান্তের মাধ্যমেই হচ্ছে। এই অধ:পতনগুলো তো অন্য কারও জন্য হচ্ছে না। আমরা সঠিক সময়ে সঠিক সিদ্ধান্ত নিতে পারিনা বা নেই বলেই আমাদের এই অবস্থা হয়েছে। আমরা সঠিক সিদ্ধান্ত নিয়েছি, যার জন্য আমাদের এই পরিণতি হওয়ার দরকার ছিল। তাই এই পরিণতি হয়েছে। 

বাংলা ইনসাইডার: অন্য কোনো দলে ভিড়ার সম্ভাবনা আছে?

আখতারুজ্জামান রঞ্জন: আমি তো দলের সাথেই আছি। আমি তো বিএনপি করি। বিএনপি তো কারও বাপের সম্পত্তি না। এমনকি জিয়াউর রহমানের সম্পত্তিও নয়। আমি এন্টি আওয়ামী লীগ শিবিরের লোক। আমি তো আওয়ামী লীগের বিরুদ্ধে যেখানেই থাকি, অবস্থান নিবোই।

বাংলা ইনসাইডার: আপনার কি মনে হয় নির্বাচনের সময় দল আপনাকে আবার ডাকবে?

আখতারুজ্জামান রঞ্জন: জনপ্রিয় নেতাদের বহিষ্কার আগামী নির্বাচনে পরাজয়ের আলামত। বহিষ্কার করার পর এখন আমি মুক্ত। আমি স্বাধীনভাবে মুক্ত চিন্তা করতে পারবো, সিদ্ধান্ত নিতে পারবো নির্বাচনে যাবো কি যাবো না। ফলে আমার দল আমার ভালো করে দিলো। আমি স্বাধীন চিন্তার মানুষ। এই সিদ্ধান্তের ফলে আমি স্বাধীনভাবে কাজ করতে পারবো। 

বাংলা ইনসাইডার: দলীয় চেয়ারপার্সন খালেদা জিয়ার অবর্তমানে বিএনপির মাঠের রাজনীতিতে বিশাল শূন্যতা বিরাজ করছে। রাজনৈতিক দলগুলো নিয়ে বৃহত্তর ঐক্যজোট গঠন করে খালেদা জিয়াকে নিয়েই বিএনপি আগামী নির্বাচনে অংশ নিবে?

আখতারুজ্জামান রঞ্জন: এটি খালেদা জিয়ার অবর্তমানে হবে কেন? খালেদা জিয়া থাকতেই বিএনপির মাঠের রাজনীতিতে বিশাল শূন্যতা বিরাজ করছিল। এখন আমার জন্য সুবিধা হলো যে আমি যদি এখন একটা নতুন দল করি তাহলে কালকেই আমি বিএনপির ওই জোটে যেতে পারবো। আমি এখন বি. চৌধুরীর মতো, কর্নেল অলির মতো, মেজর ইব্রাহিমের মতো যদি দল গঠন করি, তাহলে আমিও জোটেই থাকবো। এক লাফে সামনে চলে আসলাম। এটি ভালো হলো না। এখন আমি এটি করি কি না করি, এটি অন্য আলাপ। কিন্তু করতে তো মানা নেই। আমার কি লোকের অভাব আছে? এখন বহিষ্কার করে দল আমাকে সেই সুযোগ করে দিলো না? এখন স্থায়ী কমিটির সদস্যদের বাইরে আমি যেতে পারছি না। কিন্তু আমি যখন একটি দল করবো, তখন আমার কথা হবে চেয়ারপার্সন টু চেয়ারপার্সন। আমি টপ করে স্থায়ী কমিটির উপরে চলে গেলাম এবং অবস্থানটিও আগের চেয়ে ভালো হয়ে গেল। সেই সুযোগটিই দল আমার জন্য করে দিয়েছে। এই বহিষ্কারাদেশের জন্য আমি দলের প্রতি কৃতজ্ঞ।


প্রধান সম্পাদকঃ সৈয়দ বোরহান কবীর
ক্রিয়েটিভ মিডিয়া লিমিটেডের অঙ্গ প্রতিষ্ঠান

বার্তা এবং বাণিজ্যিক কার্যালয়ঃ ২/৩ , ব্লক - ডি , লালমাটিয়া , ঢাকা -১২০৭
নিবন্ধিত ঠিকানাঃ বাড়ি# ৪৩ (লেভেল-৫) , রোড#১৬ নতুন (পুরাতন ২৭) , ধানমন্ডি , ঢাকা- ১২০৯
ফোনঃ +৮৮-০২৯১২৩৬৭৭