কালার ইনসাইড

কী পোষাক পরব সেটা সম্পূর্ণ নিজের ব্যাপার

নিজস্ব প্রতিবেদক

প্রকাশ: 12/12/2017


Thumbnail

এই সময়ের দর্শকপ্রিয় উপস্থাপিকা শান্তা জাহান । শখের বশে মডেলিং ও অভিনয় করে থাকেন। সমসাময়িক ভাবনা ও ব্যস্ততা নিয়ে তিনি মুখোমুখি হয়েছেন বাংলা ইনসাইডারের

বাংলা ইনসাইডার: বর্তমান সময়ে উপস্থাপনার সম্ভাবনা কেমন দেখছেন?

শান্তা জাহান: খুবই ভালো একটা অবস্থানে আমরা আছি। ২৯টি চ্যানেল প্রচারে আছে। আরো ১১টি চ্যানেল আসছে। একটি চ্যানেল মানে কিন্তু অনেকগুলো অনুষ্ঠান। একটা অনুষ্ঠান ফুটিয়ে তোলার জন্য একজন উপস্থাপিকার খুব দরকার। এ ক্ষেত্রে চ্যানেলগুলোর উচিত যে যেই বিষয়ের উপর দক্ষ, সে অনুষ্ঠানগুলোতে তাকে দায়িত্ব দেয়া।  তাহলে অনুষ্ঠানের সৌন্দর্য আরও বৃদ্ধি পেত। দর্শকও অনেক বেশি ইনভলব হতে পারতো অনুষ্ঠানের সঙ্গে।

নানা অনুষ্ঠান আর উপস্থাপিকার যোগ্যতা নিয়ে প্রশ্ন উঠে, এমনটা কেন হচ্ছে?

আমাদের আগে ব্যাসিকটা জানতে হবে। সেটা হতে পারে ক্রিকেট হতে পারে গান। যে অনুষ্ঠানই হোক। যে বিষয় নিয়ে কথা বলছি যার সম্পর্কে কথা বলছি তা নিয়ে যদি আমাদের জ্ঞান না থাকে, তাহলে একটা চেয়ারে বসে জায়গাটারই শোভা নষ্ট করা হয়। আমার কাজ হচ্ছে প্রগ্রাম পরিচালনা করা। আমার সেই পরিমাণ জ্ঞান থাকতে হবে একটা অনুষ্ঠানকে সুন্দর ভাবে বয়ে নিয়ে যাওয়ার। আমার প্রশ্ন করতে হবে, তাৎক্ষনিক প্রশ্ন করার জ্ঞানটা থাকতে হবে।

সেক্ষেত্রে অনুষ্ঠানের প্রযোজক কতটা হেল্পফুল হয়?

আসলে একটি অনুষ্ঠানের সবচেয়ে বড় দায়িত্বটা থাকে প্রযোজকের। সেটে যাওয়ার আগে কিংবা কারো সঙ্গে কথা বলার আগে তাদের উচিত সঠিকভাবে আমাদের গাইড করা। কিন্তু অনেক সময়ই অনেক প্রযোজক সেটা করেন না। তখন আমাদের ঝামেলায় পড়তে হয়। এমনকি অতিথিকে কি প্রশ্ন করবো সেটাও তো তাদের ঠিক করে দেয়ার কথা। কিন্তু তা দেয় না। খারাপ কিছু হলে তো আমাদের দূর্নামটা হয়।

আধুনিকায়নের নামে অনুষ্ঠান প্রযোজকরা অনেক পোষাক চাপিয়ে দেয় বা উপস্থাপাকিরা পরিধান করেন। যা নিয়ে নানা সময়েই সমলোচনার মুখে পড়তে হয়……

পোষাকটা গুরুত্বপূর্ণ একটি বিষয়। যেটা আমার ঐতিহ্যকে বহন করে। সেক্ষেত্রে আমাদের বাঙালিদের নির্দিষ্ঠ কিছু পোষাক আছে। যেটা দেখে আমরা জন্মলগ্ন থেকেই বড় হচ্ছি। বর্তমান সময়ে একটা ট্রেন্ড চলে আসছে। সবাই একটু ওয়েস্টার্ন পোষাক চায়, নিজেকে আল্ট্রা মডার্ন উপস্থাপন করতে চায়। সেটা অনেক সময় কর্তৃপক্ষও ঠিক করে দেয়। পোষাক কখনো একজন মানুষকে স্মার্ট করতে পারে না। স্মার্টনেস আমাদের নিজস্ব ধারণ ক্ষমতার উপর নির্ভর করে। আমি আসলে আমাকে কতটা রিপ্রেজেন্ট করতে পারি সেটা হলো ব্যাপার। সেটা শাড়িতেও হতে পারে, সেটা অন্য কোন ওয়েস্টার্ন পোষাকেও হতে পারে। আমি যে পোষাকই পড়ি না কেন। সবার আগে আমার দেশের সভ্যতা আমার দেশের সংস্কৃতি এবং আমাদের দেশের সাধারন মানুষ যে পোষাকটি দেখে অভ্যস্থ, তেমনটাই পড়া উচিত। এক্ষেত্রে বললো শাড়ি কিংবা সেলোয়ার কামিজ আমাদের দেশের ক্ষেত্রে অনেকবেশি সৌন্দর্য্য বহন করে।

নতুনত্ব আনতে কেউ যদি ভিন্ন কিছু ট্রাই করে…

আমি কি পোষাক পড়বো না পড়বো সেটা সম্পূর্ণ নিজের ব্যাপার। আমরা যারা শিল্প সংস্কৃতির সঙ্গে জড়িত আছি। আর আমরা যারা শিল্প সংস্কৃতিতে কাজ করি। নিজেদের শিল্পী বলে দাবি করি। এ দাবি থেকেই কিন্তু দায়বদ্ধতা চলে আসে। পরবর্তী প্রজন্মের কাছে যেন আমরা এমন কিছু রাখতে পারি । সেদিকে খেয়াল রেখে কাজ করতে হবে। যদি আমাদের মধ্যে কোয়ালিটিটা থাকে। ক্যাপাবিলিটি থাকে। উপস্থাপনার জন্য আমাকে ডাকতে বাধ্য হবেন। তার জন্য আসলে পোষাক বা সাজুগুজু কোন ব্যাপার নয়। আজকাল আসলে মানুষ সাজুগুজুর চেয়ে দক্ষতাকেই বেশি প্রাধান্য দেয় বলে আমি মনে করি। 

নতুনরা আসতে চাইলে…

আমার শুরুটা হয়েছিল হঠাৎ করে। আমি কিন্তু কিছু জেনে বুঝে আসিনি। তবে শুরু করতে গিয়ে প্রথম দিন থেকেই চেষ্টা করেছি শেখার। যখন আমি প্রথম দিন অডিশনের জন্য গিয়েছি। তখন শিখেছি আমাকে কি বলতে হবে। এটা খুবই গুরুত্বপূর্ণ একটি বিষয়। আমি যে তথ্যটা দিয়েছি সেটা ঠিক কিনা। আমরা যতই বলি না কেন বোকা বাক্সের আড্ডাখানা। ড্রইং রুম মিডিয়া। ড্রইং রুমে বসে দেখছে বলে কিন্তু তারা বোকা নয়। আসলে আমরা তাদের বোকা বানানোর চেষ্টা করছি। তাদের হাতে কিন্তু সব অপশন আছে। সব দেশের চ্যানেল তারা দেখছে। তারা কিন্তু সকল বিষয়ে খেয়াল রাখছে। সম্ভাবনা অনেক আছে। আমি সবকিছু ফেলে রেখে উপস্থাপনাকেই প্রাধান্য দিচ্ছি।  এখানে আসতে চাইলে ওয়েলকাম। তবে জেনে বুঝে আসলে টিকে থাকতে পারবে।

অভিনয়ের খোঁজ কি?

অভিনয় হচ্ছে আমার একটা ভালবাসার জায়গা। শোবিজে একটা বিষয় আছে। নতুন কেউ কাজ শুরু করলে তাকে সবদিক থেকে কল করা হয়। মডেলিং, নাটক এমনকি চলচ্চিত্র সহ শোবিজের সব মাধ্যমে থেকেই ডাকা হয়। আমারই অনেক সিনেমার অফার এসেছে, এখনো আসে। সেক্ষেত্রে আমি বলবো সবকিছুই তো একটা সাধনার ব্যাপার। অভিনয়ের ক্ষেত্রে সাধনাটা আরো বেশি থাকতে হয়। উপস্থাপনার ক্ষেত্রে আমি শান্তা জাহান পরিচয়েই কথা বলছি। কিন্তু অভিনয়ের ক্ষেত্রে অন্য কোন চরিত্রের মধ্যে ঢুকে যেতে হবে। এক্ষেত্রে ভাললাগার ভালবাসার জায়গাটায় যে কাজ করবো না তা নয়, তবে খুবই কম। সারাবছর উপস্থাপনায় থেকে যতটা অভিনয়ের জন্য সময় বের করতে পারি। তখনই আসলে অভিনয় নিয়ে ভাববো। আর বিজ্ঞাপনেও নিয়মিত কাজ করবো। এছাড়া বেশ কিছু ডকুমেন্টরিতে কাজ করার কথা রয়েছে। আমার কাছে ভালো লাগে যেকোন কাজ অর্থবহ এবং তথ্য সমৃদ্ধ।


বাংলা ইনসাইডার/এমআরএইচ/জেডএ

 

 



প্রধান সম্পাদকঃ সৈয়দ বোরহান কবীর
ক্রিয়েটিভ মিডিয়া লিমিটেডের অঙ্গ প্রতিষ্ঠান

বার্তা এবং বাণিজ্যিক কার্যালয়ঃ ২/৩ , ব্লক - ডি , লালমাটিয়া , ঢাকা -১২০৭
নিবন্ধিত ঠিকানাঃ বাড়ি# ৪৩ (লেভেল-৫) , রোড#১৬ নতুন (পুরাতন ২৭) , ধানমন্ডি , ঢাকা- ১২০৯
ফোনঃ +৮৮-০২৯১২৩৬৭৭