ইনসাইড আর্টিকেল

নেতাজি সুভাষচন্দ্র বসুর জন্মবার্ষিকী


প্রকাশ: 23/02/2022


Thumbnail

সুভাষচন্দ্র বসু ভারতের স্বাধীনতা সংগ্রামের কিংবদন্তি নেতা। তিনি একবাক্যে নেতাজি নামে সমধিক পরিচিত। আজ ২৩ জানুয়ারি তার জন্মবার্ষিকী। তিনি ১৮৯৭ সালের এই দিনে বর্তমান ওড়িশা রাজ্যের কটক শহরে (ওড়িয়া বাজার) জন্মগ্রহণ করেন।

সুভাষচন্দ্র মেধাবী ছাত্র ছিলেন। তিনি কটকের স্টিওয়ার্ট স্কুলে ষষ্ঠ শ্রেণি পর্যন্ত পড়াশোনা করেন। ১৯১১ সালে ম্যাট্রিকুলেশন পরীক্ষায় তিনি কলকাতা থেকে প্রথম স্থান অধিকার করেন। ১৯১৮ সালে কলকাতা বিশ্ববিদ্যালয় অধিভুক্ত স্কটিশ চার্চ কলেজ থেকে বিএ পরীক্ষায় উত্তীর্ণ হন।

এরপর সুভাষচন্দ্র ক্যামব্রিজ বিশ্ববিদ্যালয়ের ফিজউইলিয়াম হলে উচ্চশিক্ষার্থে ভর্তি হন। সিভিল সার্ভিস পরীক্ষায় ভাল নম্বর পেয়ে তিনি নিয়োগপত্র পেয়ে যান। কিন্তু বিপ্লব-সচেতন দৃষ্টিভঙ্গি নিয়ে তিনি সেই নিয়োগ প্রত্যাখ্যান করেন। এই প্রসঙ্গে তিনি বলেছিলেন, ‘কোনো সরকারের সমাপ্তি ঘোষণা করার সর্বশ্রেষ্ঠ পন্থা হলো তা থেকে নিজেকে প্রত্যাহার করে নেওয়া।’

সুভাষচন্দ্র ছিলেন একজন ধর্মপ্রাণ হিন্দু। স্বামী বিবেকানন্দের ভাবাদর্শ তাকে উদ্বুদ্ধ করেছিল। তার রাজনৈতিক গুরু ছিলেন বাংলায় উগ্র জাতীয়তাবাদের প্রবক্তা দেশবন্ধু চিত্তরঞ্জন দাশ। সুভাষচন্দ্র তার পুরো জীবনই ব্রিটিশবিরোধী বিপ্লবে অতিবাহিত করেছেন। তিনি ‘ফরওয়ার্ড ব্লক’ নামে একটি রাজনৈতিক দল প্রতিষ্ঠা করে ব্রিটিশ শাসন থেকে ভারতের পূর্ণ ও দ্রুত স্বাধীনতার দাবি জানাতে থাকেন। ব্রিটিশ কর্তৃপক্ষ তাকে এগারো বার কারারুদ্ধ করেছিল।

দ্বিতীয় বিশ্বযুদ্ধ ঘোষিত হওয়ার পরেও তার বিপ্লবী মতাদর্শের কোনো পরিবর্তন ঘটেনি। বরং এই যুদ্ধকে ব্রিটিশদের দুর্বলতার সুবিধা আদায়ের একটি সুযোগ হিসেবে দেখেন তিনি। দ্বিতীয় বিশ্বযুদ্ধের সূচনালগ্নে ভারতে ব্রিটিশদের আক্রমণ করার জন্য সহযোগিতা লাভের উদ্দেশ্যে তিনি লুকিয়ে ভারত ত্যাগ করে সোভিয়েত ইউনিয়ন, জার্মানি ও জাপান ভ্রমণ করেন ।

জাপানিদের সহযোগিতায় সুভাষচন্দ্র বসু ভারতীয় যুদ্ধবন্দি এবং দক্ষিণ এশিয়ার অন্যান্য অঞ্চলে কর্মরত ভারতীয়দের নিয়ে ‘আজাদ হিন্দ ফৌজ’ পুনর্গঠন করেন। এ ফৌজের নেতৃত্বদান করে ব্রিটিশ মিত্রবাহিনীর বিরুদ্ধে যুদ্ধ পরিচালনা করেন।

সুভাষচন্দ্র পরপর দুইবার ভারতীয় জাতীয় কংগ্রেসের সভাপতি নির্বাচিত হন। কিন্তু মহাত্মা গান্ধীর সঙ্গে আদর্শগত সংঘাত এবং কংগ্রেসের বৈদেশিক ও অভ্যন্তরীণ নীতির প্রকাশ্য সমালোচনা করার জন্য তাকে পদত্যাগ করতে হয়।

ঐতিহাসিকদের মতে, ১৯৪৫ সালের ১৮ আগস্ট সুভাষচন্দ্র বসুকে বহনকারী জাপানি বিমান, জাপান শাসিত ফোরমোসায় (বর্তমান তাইওয়ান) বিধ্বস্ত হওয়ার পর, আগুনে দগ্ধ হয়ে তাঁর মৃত্যু ঘটে। তবে তার অনেক অনুগামীই সে সময় ঘটনাটি অস্বীকার করে এবং এমনকি এখনও তার মৃত্যু সম্পর্কিত পরিস্থিতি ও তথ্য অবিশ্বাস করে। তার মৃত্যুর কয়েক ঘণ্টার মধ্যেই বহু ষড়যন্ত্র তত্ত্ব আবির্ভূত হয় এবং দীর্ঘকাল এগুলো তার মৃত্যু সম্পর্কে বিভিন্ন কল্পকাহিনী জীবিত রেখেছে।


প্রধান সম্পাদকঃ সৈয়দ বোরহান কবীর
ক্রিয়েটিভ মিডিয়া লিমিটেডের অঙ্গ প্রতিষ্ঠান

বার্তা এবং বাণিজ্যিক কার্যালয়ঃ ২/৩ , ব্লক - ডি , লালমাটিয়া , ঢাকা -১২০৭
নিবন্ধিত ঠিকানাঃ বাড়ি# ৪৩ (লেভেল-৫) , রোড#১৬ নতুন (পুরাতন ২৭) , ধানমন্ডি , ঢাকা- ১২০৯
ফোনঃ +৮৮-০২৯১২৩৬৭৭