ইনসাইড পলিটিক্স

বাম দলগুলোকে ঐক্যবদ্ধ করতে পারবে সিপিবি?


প্রকাশ: 26/02/2022


Thumbnail

বাংলাদেশ থেকে অনেকটাই উঠে গেছে বাম রাজনীতি।  বিভিন্ন জাতীয় গুরুত্বপূর্ণ ইস্যুতে বাম দলগুলোর একের পর এক ভুল সিদ্ধান্ত তাদের এ করুণ পরিণতি ডেকে এনেছে। বর্তমানে বাম দলগুলো শতধা বিভক্ত। বিভিন্ন জোটে ছড়িয়ে-ছিটিয়ে থাকা এ সকল বামদলগুলোকে এক ছাতার নিচে এনে বাংলাদেশে বাম গণতান্ত্রিক শক্তির উত্থান ঘটাতে চায় বাংলাদেশের কমিউনিস্ট পার্টি (সিপিবি)। এ লক্ষ্যে সবগুলো বাম দলের প্রতি ঐক্যের ডাক দিয়েছে দলটি। তবে তাদের এ ঐক্যের ডাক কতটুকু সফল হবে তা নিয়ে খোদ সিপিবির মধ্যেই সংশয় রয়েছে।

গতকাল শুক্রবার ছিল সিপিবির দ্বাদশ কংগ্রেসের প্রথম অধিবেশন। রাজধানীর ‘মহানগর নাট্য মঞ্চে’ অনুষ্ঠিত ওই অধিবেশনে দলটির সভাপতি মুজাহিদুল ইসলাম সেলিম দেশের সবগুলো বাম দলের প্রতি আহ্বান জানিয়ে বলেন, আসুন বামপন্থীরা ঐক্যবদ্ধ হই, পরিবর্তনের জন্য বৃহত্তর ঐক্য গড়ে তুলি। সংকীর্ণতার ঊর্ধ্বে উঠে সর্বোচ্চ আন্তরিকতা নিয়ে দ্বি-দলীয় ধারার বাইরে দেশের সকল বাম, প্রগতিশীল ও প্রকৃত গণতান্ত্রিক রাজনৈতিক দল-ব্যক্তি ও শক্তি ঐক্যবদ্ধ হই। এটাই আজকে কংগ্রেস থেকে আমাদের আহ্বান। সিপিবি মনে করছে, বামদলগুলো যদি একসাথে থাকে, তাহলে পরে আওয়ামী লীগ ও বিএনপির বাইরে তৃতীয় শক্তি হিসেবে বাম দলগুলোর উত্থানের সম্ভাবনা ব্যাপক। কিন্তু প্রশ্ন হলো লুটপাটতন্ত্র, গণতন্ত্রহীনতা, সাম্প্রদায়িকতা, সাম্রাজ্যবাদী আধিপত্যের ব্যবস্থা বদলাতে সিপিবির এ আহ্বান বাম দলগুলোতে কতটা সাড়া ফেলবে?

বাম দলগুলোর মধ্যে বর্তমানে আওয়ামী লীগের নেতৃত্বধীন ১৪ দলীয় জোটে রাশেদ খান মেননের ওয়ার্কাস পার্টি, হাসানুল হক ইনুর জাসদসহ ১০টি বাম দল আছে। আবার অন্যদিকে ২০ দলীয় জোটে রয়েছে দুইটি বাম দল। এর বাইরে বাম দলগুলোর আরও ২টি জোট রয়েছে। সিপিবি, বাসদ, বিপ্লবী ওয়ার্কার্স পার্টি, গণতান্ত্রিক বিপ্লবী পার্টি, ইউনাইটেড কমিউনিস্ট লীগ, সমাজতান্ত্রিক আন্দোলন, গণসংহতি আন্দোলন, বাসদ (মার্ক্সবাদী) মিলে গঠন করা হয়েছে বাম গণতান্ত্রিক জোট। আর জাতীয় মুক্তি কাউন্সিল, জাতীয় গণফ্রন্ট, বাংলাদেশে সমাজতান্ত্রিক আন্দোলন নিয়ে গঠিত হয়েছে জাতীয় মুক্তি জোট। কিন্তু নাম সর্বস্ব এ রাজনৈতিক দলগুলোর খুব একটা রাজনৈতিক তাৎপর্য নেই বলে মনে করছেন রাজনৈতিক বিশ্লেষকরা। বিশেষ করে নির্বাচনের মাঠে এবং ভোটের অঙ্কে এখনও নিচের দিকেই অবস্থান করছে বামদলগুলো। রাজনৈতিক অঙ্গনের অনেকেই বলে থাকেন যে, আওয়ামী লীগের করুনায় বাম দলগুলো জাতীয় নির্বাচনে কয়েকটি আসন পায়। আওয়ামী লীগ যদি নিজেদের পার্থীকে বসিয়ে না দেয়, তাহলে সাংসদ তো বহুদূরে, ইউনিয়ন পরিষদের মেম্বার হওয়ার যোগ্যতাও রাখেন না বলেও মনে করছেন তারা।

অন্যদিকে রাজপথেও বাম দল ও তাদের অংগসহযোগী সংগঠনগুলোর তেমন দাপট নেই। একদিকে তারা সরকার বিরোধী কথা বলছে, কিন্তু কোনো কর্মসূচি দিতে পারছে না। বস্তুত তাদের কোনো সাংগঠনিক কর্মকাণ্ডই নেই। অন্যদিকে মৌলবাদীরাও জ্যামিতিক হারে বাড়ছে। সাধারণ মানুষদের মধ্যে বামদের নিয়ে কোনো প্রভাব-প্রতিক্রিয়াও অবশিষ্ট নেই। তাদের কর্মকাণ্ড তেল-গ্যাস রক্ষা আন্দোলনেই সীমাবদ্ধ। অনেকেই মনে করেন তেল-গ্যাস ইস্যু ছাড়া তাদের সামনে কোনো ইস্যু নেই। এরকম পরিস্থিতিতে বাম দলগুলো নয়, বরং দেশের রাজনীতিতে আওয়ামী লীগ এবং বিএনপির বাইরে কট্টরপন্থী ইসলামী দলগুলোর তৃতীয় শক্তি হিসেবে উত্থানের সম্ভাবনা বেশি দেখছেন রাজনৈতিক বিশ্লেষকরা।


প্রধান সম্পাদকঃ সৈয়দ বোরহান কবীর
ক্রিয়েটিভ মিডিয়া লিমিটেডের অঙ্গ প্রতিষ্ঠান

বার্তা এবং বাণিজ্যিক কার্যালয়ঃ ২/৩ , ব্লক - ডি , লালমাটিয়া , ঢাকা -১২০৭
নিবন্ধিত ঠিকানাঃ বাড়ি# ৪৩ (লেভেল-৫) , রোড#১৬ নতুন (পুরাতন ২৭) , ধানমন্ডি , ঢাকা- ১২০৯
ফোনঃ +৮৮-০২৯১২৩৬৭৭