ইনসাইড টক

‘এই সময়ে দুই বছরের সিলেবাস শেষ করা সম্ভব না’


প্রকাশ: 01/03/2022


Thumbnail

জগন্নাথ বিশ্ববিদ্যালয়ের সাবেক উপাচার্য এবং ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের মার্কেটিং বিভাগের অধ্যাপক ড. মীজানুর রহমান বলেছেন, এসএসসি ও এইচএসসি পরীক্ষা কিন্তু দুই বছরের পড়ালেখার উপর নেয়া হয়। অর্থাৎ ক্লাস নাইন এবং টেন, এই দুই বছর যা পড়ালেখা হয়, তার উপর হয় এসএসসি পরীক্ষা। এইচএসসিও ঠিক তেমনি প্রথম বর্ষ ও দ্বিতীয় বর্ষের পড়ালেখার উপর। এখন দুই বছরের মধ্যে সময় আছে মাত্র ছয় মাসের মতো। কিন্তু এই যে করোনাকাল চলছে, এই করোনার কারণে স্কুল, কলেজ দুই বছর ঠিকমতো চলেনি, বন্ধ ছিল। কিছু কিছু ভালোমানের স্কুল-কলেজগুলোতে অনলাইনে ক্লাস হলেও অধিকাংশ জায়গায় কিন্তু ঠিকমতো হয়নি। শহরাঞ্চলের স্কুল-কলেজগুলোতে হয়তো ঠিকঠাকমতো অনলাইনে ক্লাস চলেছে। কিন্তু গ্রামের স্কুলগুলোতে ওইভাবে হয়নি। যদিও চেষ্টা করা হয়েছে, কিন্তু ডিভাইসের স্বল্পতা, ইন্টারনেটের স্পিডসহ বিভিন্ন কারণে গ্রামের ছাত্র এবং শহরের ছাত্রের মধ্যে একটি দূরত্ব তৈরি হয়ে গেছে। এখন পরীক্ষা যদি না পেছানো হয় এবং পুরো সিলেবাস অনুযায়ী হয়, তাহলে তো গ্রামের শিক্ষার্থীদের জন্য পরীক্ষা দেওয়া মুশকিল হয়ে যাবে। এছাড়া এখন তো বলাও যাচ্ছে না, এসএসসি ও এইচএসসি পরীক্ষার সময় করোনার প্রকোপ কেমন থাকবে। তখন যদি বাড়ে, সেটি হবে আরেক যন্ত্রণা। স্কুল-কলেজ খোলার দুই মাস পর আবার বন্ধ হয়েছিল। সেই ক্ষেত্রে এই সময়ের মধ্যে দুই বছরের সিলেবাস শেষ করা আসলেই সম্ভব না।

এসএসসি ও এইচএসসি পরীক্ষা সংক্ষিপ্ত সিলেবাসে নেয়া,  শিক্ষাপ্রতিষ্ঠানে ছাত্রছাত্রীদের নেতৃত্বের গুণাবলি অর্জনের সুযোগসহ নানা বিষয়ে বাংলা ইনসাইডার এর সঙ্গে একান্ত আলাপচারিতায় অধ্যাপক ড. মীজানুর রহমান এসব কথা বলেছেন। পাঠকদের জন্য অধ্যাপক ড. মীজানুর রহমান এর সাক্ষাৎকার নিয়েছেন বাংলা ইনসাইডার এর নিজস্ব প্রতিবেদক অলিউল ইসলাম।

অধ্যাপক ড. মীজানুর রহমান বলেন, আমি মনে করি সীমিত সিলেবাসের যে পরীক্ষা, সেটি এমনভাবে করা হোক যেন পরবর্তী ধাপে যখন পরীক্ষা হবে বা পড়াশোনা করতে যাবে, তখন যেন সমস্যা না হয়। অর্থাৎ আবশ্যকীয়, অত্যাবশ্যকীয় যে বিষয়গুলো আছে, সেগুলো যেন শিক্ষার্থীদের পরীক্ষা কিংবা পড়াশোনা থেকে বাদ না পড়ে। সেটার জন্য আমি মনে করি চেষ্টা করা উচিত। আর পরিপূর্ণ সিলেবাসে পরীক্ষা হওয়া আমারও কেন জানি মনে হয় এই সময়ের মধ্যে শেষ করা যাবে না। যেহেতু শেষ করা যাবে না, সেটি অবশ্যই শিক্ষার্থীদের উপর চাপ পড়বে। কিছু কিছু বিষয় থাকে, যেটি হয়তো অতো গুরুত্বপূর্ণ না, অথবা অপেক্ষাকৃত সহজতর এবং ছাত্ররা বাড়িতে পড়তে পারবে, সেগুলো এই সময়ে নেয়ার দরকার নেই। কিন্তু কিছু কিছু বিষয় আছে, যেগুলো জন্য ক্লাস করার দরকার এবং বুঝার প্রয়োজন আছে, সেগুলোর জন্য অবশ্যই শিক্ষার্থীদের ক্লাস দরকার এবং সেগুলোর উপরই যেন পরীক্ষা হয়। কারণ, পরবর্তী পর্যায়ে তারা যখন গবেষণা করতে যাবে, তখন কিন্তু তারা যেগুলো বাদ দিয়ে এসেছে, সেগুলোকে আবার পড়তে হবে। ফলে এগুলো যেন বাদ না পড়ে, এটাই আমি বলবো।

আমাদের শিক্ষাব্যবস্থা এবং শিক্ষাপ্রতিষ্ঠানের পরিবেশ থেকে ছাত্রছাত্রীদের নেতৃত্বের গুণাবলি অর্জনের সুযোগ আগের চেয়ে কমেছে না বেড়েছে প্রশ্নে অধ্যাপক ড. মীজানুর রহমান বলেন, শিক্ষাপ্রতিষ্ঠানে ছাত্রছাত্রীদের  নেতৃত্বের গুণাবলি অর্জনের সুযোগ আগের চেয়ে কমেছে। আসলে বর্তমানে শিক্ষা যে কারিকুলামে চলছে কিংবা যেভাবে শিক্ষাপ্রতিষ্ঠানগুলোতে পড়াশোনা হয়, এতে করে একজন শিক্ষার্থী টপিক মুখস্থ করবে এবং পরীক্ষা দিবে। এর বাইরে কিছুই নেই। আমরা যদি ছাত্রদেরকে টিম ওয়ার্ক করা, গ্রুপ ওয়ার্ক করা এবং এগুলো যেন বাস্তব জীবনে প্রয়োগ করতে পারে তার জন্য হাতে-কলমে দেখানো ও শিখানো, এগুলো কিন্তু আমাদের নেই। কিন্তু শিক্ষকরা চাইলেই এগুলো দিতে পারতেন। তবে আমাদের নতুন কারিকুলামে এগুলো রাখা হয়েছে এবং পরীক্ষামূলকভাবে কিছু কিছু জায়গায় শুরুও হয়েছে। নতুন কারিকুলামে শিক্ষার্থীরা দলগতভাবে কাজ করতে পারে কি না, দলগতভাবে কাজ করতে গেলে কেমন আচরণ করতে হবে এবং দলগতভাবে কাজ করতে গেলে যেসব সমস্যা তৈরি হয়, ওগুলো কিভাবে মোকাবেলা করবে, এর জন্য অনেক কিছুই নতুন কারিকুলামে রাখা হয়েছে।


প্রধান সম্পাদকঃ সৈয়দ বোরহান কবীর
ক্রিয়েটিভ মিডিয়া লিমিটেডের অঙ্গ প্রতিষ্ঠান

বার্তা এবং বাণিজ্যিক কার্যালয়ঃ ২/৩ , ব্লক - ডি , লালমাটিয়া , ঢাকা -১২০৭
নিবন্ধিত ঠিকানাঃ বাড়ি# ৪৩ (লেভেল-৫) , রোড#১৬ নতুন (পুরাতন ২৭) , ধানমন্ডি , ঢাকা- ১২০৯
ফোনঃ +৮৮-০২৯১২৩৬৭৭