কালার ইনসাইড

‘শিল্পী সমিতির ক্ষমতা নেই চলচ্চিত্রের পরিবর্তন করার’


প্রকাশ: 01/03/2022


Thumbnail

ঢাকাই সিনেমার জনপ্রিয় চিত্রনায়িকা আঞ্জুমান আরা শিল্পী। নব্বইয়ের দশকে অনেক সিনেমা উপহার দিয়েছেন তিনি। ২১ বছরের বেশি সময় ধরে চলচ্চিত্র থেকে দূরে আছেন ‘প্রিয়জন’ সিনেমার এই নায়িকা। বর্তমানে চলচ্চিত্রে কাজ না করলেও এই অঙ্গনের মানুষের সঙ্গে তার আত্মার সম্পর্ক বলা যায়। বিভিন্ন সময় চলচ্চিত্র সংশ্লিষ্ট বিভিন্ন অনুষ্ঠানে দেখা যায় তাকে। সর্বশেষ ফিল্ম ক্লাবের নির্বাচনে এফডিসিতে ভোট দিতে আসেন শিল্পী। চলচ্চিত্রের সমসাময়িক বিষয় নিয়ে কথা বলেছেন তিনি।

প্রশ্ন: শিল্পী সমিতির নির্বাচন ঘিরে নানা আলোচনা-সমালোচনা। এতে শিল্পী সত্তায় আঘাত লেগেছে বলে মনে করেন?

আঞ্জুমান আরা শিল্পী: অবশ্যই আঘাত লেগেছে। শিল্পীদের সমস্ত সম্মান নষ্ট হয়েছে, হচ্ছে। শিল্পীরা টাকায় বিক্রি হয় না। একজন একটা উপহার দেবে তাতেই তাকে ভোট দিয়ে দেবে সেটা ভাবা ভুল। টাকায় ভোট বিক্রি হয় না। এবারে নির্বাচন ঘিরে নোংরামি একটু বেশিই হয়েছে। এমনটা প্রত্যাশা করি না। ইন্ডাস্ট্রির যে সম্মান ছিল তা পুরো মাটিতে মিশে গেছে।

প্রশ্ন: চলমান সমস্যাটি চাইলে নিজেরা সমাধান করতে পারতো?

আঞ্জুমান আরা শিল্পী: কেউ তো সমাধান করতে এগিয়ে আসেনি। সিনিয়র অনেকেই ছিল। যার যেখানে মন চেয়েছে সাপোর্ট করেছে। পক্ষ নিয়ে কথা বলেই যাচ্ছে। তারাও তো পারতো বিষয়টি সমাধানের চেষ্টা করতে। সিনিয়রদের উচিত ছিল ঘরের বিষয় ঘরে বসে সমাধান করা। আদালত পর্যন্ত যাওয়া ঠিক হয়নি। এখন যে অবস্থায় চলে গেছে তাতে আর উপায় নেই। পাশ করেও যখন বলা হয় পাশ করেনি তখন তো আদালতে যেতেই হবে। নিজেরা চাইলে সমাধান করা যেত। এবার নির্বাচন ঘিরে এফডিসিতে অসংখ্য ইউটিউব চ্যানেলের আনাগোনা বেড়েছে। তারা একটা পজিটিভ বিষয়কে রসিয়ে বিতর্ক সৃষ্টি করছে। আবার ইউটিউবারদের পেয়ে আমরাও বলার সময় কিছু না ভেবেই যার যার মতো করে বলে যাচ্ছি। এতে করে দিনশেষে আমাদেরই বদনাম হয়।

প্রশ্ন: শিল্পী সমিতির ১৮৪ জন শিল্পীর সদস্যপদ নিয়ে নানা কথা চর্চা হচ্ছে। বিষয়টি নিয়ে কি বলবেন?

আঞ্জুমান আরা শিল্পী: তাদের তো কারো একার সিদ্ধান্তে সহযোগী করা হয়নি। মিটিংয়ের মাধ্যমে সবার মতামতের পরিপ্রেক্ষিতে সহযোগী করা হয়। এতে কমিটি ও সিনিয়র উপদেষ্টারা স্বাক্ষর করেছেন। তারপরই সহযোগী সদস্য করা হয়। এককভাবে তো কোনো সিদ্ধান্ত হয়নি। তারপরও এটা নিয়ে কেন এত কাদা ছোড়াছুড়ি হচ্ছে বুঝতে আছি না। এটাকে ইস্যু করে এতো নোংরামি করা ঠিক না। চলচ্চিত্রের গুরুত্বপূর্ণ অনেক ইস্যু বাদ দিয়ে এটা নিয়ে কেন এত কাদা ছোড়াছুড়ি হচ্ছে? চলচ্চিত্র ধ্বংস হয়ে যাচ্ছে, ইন্ডাস্ট্রি বন্ধ হওয়ার পথে। সেটা নিয়ে কারো মাথা ব্যথা নেই। একটা ইস্যু নিয়েই সবাই পরে আছে। ইন্ডাস্ট্রি ধ্বংস হয়ে যাচ্ছে তা নিয়ে মাথা ব্যথা না থাকলেও চেয়ার দখল নিয়ে চলছে নোংরামি। এটা ঠিক না।

প্রশ্ন: সাধারণ সম্পাদকের চেয়ারে কি আছে?

আঞ্জুমান আরা শিল্পী: এটা কাঠের চেয়ার, তবে ক্ষমতার জন্য এই লড়াই। কিন্তু চাইলে নির্বাচন না করেও বাইরে থেকে অনেক কাজ করা যায়, যেটা আমি করে আসছি। ২০ বছর আগে ইন্ডাস্ট্রি ছাড়লেও এখনো সহযোগিতা করছি। সবসময় চেষ্টা করি স্বল্প আয়ের মানুষদের পাশে থাকতে। আগামী দিনেও সবাই আমাকে পাশে পাবে। শিল্পী সমিতির নির্বাচন আসলেই খুব উচ্চারিত হয় সিনেমার অবস্থা পরিবর্তনের এবং নতুন সিনেমা নির্মাণের। তখন উন্নয়নের নানা কথা শোনা যায়। যেখানে দিনদিন সিনেমার সংখ্যা কমে যাচ্ছে। প্রেক্ষাগৃহ বন্ধ হয়ে যাচ্ছে।

প্রশ্ন: এমন অবস্থায় শিল্পী সমিতির দ্বারা সম্ভব সমস্যাগুলোর পরিবর্তন করা?

আঞ্জুমান আরা শিল্পী: শিল্পী সমিতির ক্ষমতা নেই চলচ্চিত্রের পরিবর্তন করার। শিল্পী সমিতি হচ্ছে শিল্পীদের উন্নয়নের জন্য। তাদের ভালো-মন্দ দেখভাল করবে। সমিতির মূল উদ্দেশ্য হচ্ছে শিল্পীদের স্বার্থ রক্ষা করা। এখানে নতুন নতুন অনেক প্রযোজক দরকার। প্রযোজক আসলে সিনেমা হবে। চলচ্চিত্রের পরিবর্তন হবে। দীর্ঘদিন ধরে প্রযোজক সমিতি বন্ধ। বর্তমানে এখানে প্রশাসন বসানো। তা নিয়ে কারো মাথা ব্যথা নেই। কিন্তু সবার মাথা ব্যথা শিল্পী সমিতি নিয়ে। চলচ্চিত্রের উন্নয়নের জন্য প্রযোজকদের এগিয়ে আসতে হবে। মাঝখান দিয়ে শিল্পীদের লাফালাফি করে লাভ নেই।

প্রশ্ন: জায়েদ খান-নিপুণ আক্তারের জন্য আপনার পরামর্শ কী?

আঞ্জুমান আরা শিল্পী: তারা তো কারো পরামর্শ নিচ্ছে না। আমার চেয়ে অনেক সিনিয়র তাদের পাশে দাঁড়িয়ে কথা বলছে। যেহেতু বিষয়টি আদালত পর্যন্ত চলে গেছে এখন কথা বলেও লাভ হবে না। আদালত যে রায় দেবে সেটা মেনে নিয়ে এগিয়ে যেতে হবে।


প্রধান সম্পাদকঃ সৈয়দ বোরহান কবীর
ক্রিয়েটিভ মিডিয়া লিমিটেডের অঙ্গ প্রতিষ্ঠান

বার্তা এবং বাণিজ্যিক কার্যালয়ঃ ২/৩ , ব্লক - ডি , লালমাটিয়া , ঢাকা -১২০৭
নিবন্ধিত ঠিকানাঃ বাড়ি# ৪৩ (লেভেল-৫) , রোড#১৬ নতুন (পুরাতন ২৭) , ধানমন্ডি , ঢাকা- ১২০৯
ফোনঃ +৮৮-০২৯১২৩৬৭৭