ইনসাইড টক

‘ফেব্রুয়ারির হিসাব দিয়ে পুরো রেমিট্যান্স প্রক্রিয়াকে বুঝা যাবে না’


প্রকাশ: 02/03/2022


Thumbnail

রেমিট্যান্স প্রবাহ কমে যাওয়ার প্রভাব নিয়ে বাংলাদেশ ব্যাংকের সাবেক গভর্নর ড. আতিউর রহমান বলেছেন, একটি মাসের রেমিট্যান্স প্রবাহ দিয়ে সব কিছু বুঝা যায় না। আমার ধারণা গত বছরের সমান না হলেও এর কাছাকাছিই রেমিট্যান্স প্রবাহ আছে। গত বছর ছিল ২৫ বিলিয়ন ডলারের মতো। এ বছর হয়তো অতো হবে না। কিন্তু কম হবে বলেও তো মনে হচ্ছে না। আমার মনে হয় এবার ২২ বিলিয়ন ডলারের কাছাকাছিই হবে। মনে রাখতে হবে ফেব্রুয়ারি মাস ২৮ দিনের। এছাড়া গত বছরের বেইজ লাইনটিও অনেক বড় ছিল। অনেক বড় বেইজ লাইন থেকে প্রবৃদ্ধি আনা খুব কঠিন। সেদিক থেকে বিচার করলে শুধুমাত্র ফেব্রুয়ারি মাসের হিসাব দিয়ে পুরো রেমিট্যান্স প্রক্রিয়াকে বুঝা যাবে না।

রেমিট্যান্স প্রবাহ কমে যাওয়া, রাশিয়া-ইউক্রেন চলমান যুদ্ধের ফলে বিশ্ব অর্থনীতিতে সঙ্কট এবং বাংলাদেশের অর্থনীতিতে এর প্রভাবসহ বিভিন্ন বিষয় নিয়ে বাংলা ইনসাইডার এর সঙ্গে একান্ত আলাপচারিতায় তিনি এসব কথা বলেন। পাঠকদের জন্য ড. আতিউর রহমান এর সাক্ষাৎকার নিয়েছেন বাংলা ইনসাইডার এর নিজস্ব প্রতিবেদক মাহমুদুল হাসান তুহিন।

ড. আতিউর রহমান বলেন, এ কথা ঠিক যে, সামনে রোজা এবং ঈদ। এই সময়ে পর পর দুইটি ঈদ আসবে। এ দুটো ঈদের সময়ই কিন্তু রেমিট্যান্স বাড়বে। সবসময়ই রোজা কিংবা ঈদ আসলে রেমিট্যান্স বাড়ে। পাশাপাশি করোনার প্রকোপ কাটিয়ে নতুন করে সব কিছু পুনরায় চালু হচ্ছে, অর্থনীতি গতি পাচ্ছে। শুধুমাত্র আমাদের দেশেই না, সারা পৃথিবীতেই অর্থনীতি সচল হচ্ছে। সুতরাং মধ্যপ্রাচ্যসহ যেসব দেশে আমাদের প্রবাসীরা বেশি থাকে, সেসব দেশে কাজ বাড়বে। আমার কাছে মনে হয় সামনের দিনগুলোতে রেমিট্যান্স কমবে না।

তিনি বলেন, ইউরোপে যে যুদ্ধ হচ্ছে, সেই কারণে হয়তো রাশিয়া থেকে যে রেমিট্যান্সটা আসতো কিংবা ইউক্রেন থেকে যা আসে, সেগুলো কমে যাবে। এটি সাময়িক সময়ের জন্য রেমিট্যান্সে প্রভাব রাখবে। আমার ধারণা অন্যান্য দেশগুলো থেকে যে পরিমাণ রেমিট্যান্স আসবে, সেগুলো দিয়ে মোটামুটিভাবে একটা জায়গায় চলে আসতে পারবো। পরিস্থিতি খারাপ আকার ধারণ করবে না। 

তিনি আরও বলেন, রেমিট্যান্স আসার কারণে অনেকটা স্বস্তি পাবে মানুষ। বিশেষ করে গ্রামে-গঞ্জের মানুষদের যে আয়-রোজগার, তা কিছুটা হলেও বাড়বে। বিশেষ করে মূল্যস্ফীতি যেভাবে বাড়ছে, তাতে এই রেমিট্যান্স কিছুটা হলেও সামাল দিতে পারবে। যাদের পরিবারের সদস্য দেশের বাহিরে আছে, তারা তো টাকা পাঠাবেই। কিন্তু তারপরও একটি গ্রুপ কিন্তু থেকেই যাবে, যাদের আয়-রোজগারের সাথে দামের সমন্বয় করতে হিমশিম খাবে। ইতোমধ্যেই অনেকে হিমশিম খাচ্ছে। কারণ মূল্যস্ফীতি হচ্ছে গরীবের নির্মম শত্রু। বিশেষ করে খাদ্যস্ফীতির যে চাপ, সেটা মানুষের জন্য কষ্টকর হবে। 

ড. আতিউর রহমান বলেন, আন্তর্জাতিকভাবে যেভাবে সংকট দেখা দিচ্ছে, তাতে গমের দাম বেড়ে যাওয়ার সম্ভাবনা আছে। অনেক বিশ্লেষকই এই আশঙ্কা করছেন। পরিবহন খরচ বেশি বলে আমদানি করা জিনিসপত্র বিশেষ করে ভোজ্যতেলের দাম বাড়ার আশঙ্কা তো আছেই। এ সবকিছুর আলোকে আমাদের সামাজিক নিরাপত্তার কথাটি আরেকটু ভাবতে হবে। যারা একেবারেই দারিদ্রসীমার নিচে বা আশেপাশে অবস্থান করছে, তাদের দিকে তাকাতে হবে। সরকার অবশ্য বলছে যে, এক কোটি মানুষকে তারা সামাজিক নিরাপত্তার মধ্যে আনবেন। সরকার তো করবেই, কিন্তু আমার মনে হয় সরকারের পাশাপাশি সরকারের বাইরে অবস্থাপন্ন মানুষ যারা আছেন, যতগুলো প্রতিষ্ঠান আছে, তাদেরও সামর্থ্য অনুযায়ী পাশে দাঁড়ানো উচিত।


প্রধান সম্পাদকঃ সৈয়দ বোরহান কবীর
ক্রিয়েটিভ মিডিয়া লিমিটেডের অঙ্গ প্রতিষ্ঠান

বার্তা এবং বাণিজ্যিক কার্যালয়ঃ ২/৩ , ব্লক - ডি , লালমাটিয়া , ঢাকা -১২০৭
নিবন্ধিত ঠিকানাঃ বাড়ি# ৪৩ (লেভেল-৫) , রোড#১৬ নতুন (পুরাতন ২৭) , ধানমন্ডি , ঢাকা- ১২০৯
ফোনঃ +৮৮-০২৯১২৩৬৭৭