ইনসাইড পলিটিক্স

অলংকারিক সাধারণ সম্পাদক কাদের?


প্রকাশ: 05/03/2022


Thumbnail

আওয়ামী লীগের সাধারণ সম্পাদক দলের দ্বিতীয় গুরুত্বপূর্ণ পদ। জাতির পিতা বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবুর রহমান এই পদে দায়িত্ব পালন করেছিলেন। সে কারণে এই পদটি আবেগপূর্ণ, স্পর্শকাতর এবং গুরুত্বপূর্ণ। আওয়ামী লীগের সাংগঠনিক কর্মকাণ্ড মূলত সাধারণ সম্পাদককে ঘিরেই পরিচালিত হয়ে থাকে। দলের সভাপতি এবং তৃণমূলের সঙ্গে যোগসূত্র হিসেবে কাজ করেন দলের সাধারণ সম্পাদক। পুরো দেশের তৃণমূলের নেতৃত্বের সঙ্গে যোগসূত্র রচনা করার ক্ষেত্রে গুরুত্বপূর্ণ ভূমিকা পালন করেন সাধারণ সম্পাদক। আওয়ামী লীগের রাজনৈতিক কার্যক্রম পরিচালিত হয় সাধারণ সম্পাদককে ঘিরেই। কিন্তু আওয়ামী লীগের বর্তমান সাধারণ সম্পাদক ওবায়দুল কাদের যেন কিছুটা হলেও গুটিয়ে থাকা এবং অনেকটা অলংকারিক সাধারণ সম্পাদকে পরিণত হয়েছেন। প্রথম মেয়াদের দায়িত্বের সময় তিনি ছিলেন দলের অন্যতম নিউক্লিয়াস। আওয়ামী লীগ সভাপতির নির্দেশ প্রতিপালন করা, সারাদেশের কর্মীদের সঙ্গে যোগাযোগ, সাংগঠনিক বিষয়-আশয় দেখভাল করার ক্ষেত্রে তিনি সেসময় মুখ্য ভূমিকা পালন করেছিলেন। কিন্তু দ্বিতীয় মেয়াদে সাধারণ সম্পাদক হওয়ার পর তিনি অসুস্থ হন। এই অসুস্থতার রেশ কাটতে না কাটতেই বিশ্বে করোনার প্রকোপ শুরু হয়। করোনা প্রকোপের পর ওবায়দুল কাদের অনেকটাই ঘরবন্দি হয়েছেন। খুব জরুরি প্রয়োজন ছাড়া তিনি ঘরে থেকেই বক্তৃতা-বিবৃতির মাধ্যমে দল পরিচালনা করছেন। শারীরিকভাবেও তিনি অনেকটা অসুস্থ। অতি সম্প্রতি তিনি দিল্লীতে গিয়েছিলেন স্বাস্থ্য পরীক্ষার জন্য। আর এই সমস্ত বিবেচনায় স্বাস্থ্যগত কারণে এবং অন্যান্য নানা বাস্তবতায় তিনি সাধারণ সম্পাদক হিসেবে আর দলের মধ্যমণির ভূমিকা পালন করছেন না বলেই আওয়ামী লীগের ঘনিষ্ঠ সূত্রগুলো বলছে। বরং আওয়ামী লীগ এখন বিকল্প নেতৃত্বের মাধ্যমেই চলছে। 

আওয়ামী লীগ সভাপতি নিজে সার্বক্ষণিকভাবে দলের সব নেতা-কর্মীদের সঙ্গে যোগাযোগ রাখছেন। যখন যাকে প্রয়োজন তাকে সেই দায়িত্ব দিচ্ছেন। এমনকি তৃণমূলের ছোটখাটো বিষয়গুলোও আওয়ামী লীগ সভাপতির নজরে আসছে এবং তিনি এই বিষয়গুলো তড়িৎভাবে সমাধান দিচ্ছেন। এছাড়া আওয়ামী লীগে ক্রমশ গুরুত্বপূর্ণ হয়ে উঠছেন পঞ্চপাণ্ডব হিসেবে পরিচিত পাঁচ নেতা। এদের মধ্যে রয়েছেন জাহাঙ্গীর কবির নানক, আব্দুর রহমান, যুগ্ম সাধারণ সম্পাদক আ ফ ম বাহাউদ্দিন নাছিম, মির্জা আজম এবং এসএম কামাল। এছাড়াও মাহবুবুল আলম হানিফ দলের সাংগঠনিক বিষয়ে গুরুত্বপূর্ণ ভূমিকা পালন করছেন। এর বাইরে অন্যান্য নেতা-কর্মীরা অনেকটা নিষ্ক্রিয়। 

আওয়ামী লীগ সবগুলো বিভাগের জন্য একজন করে সাংগঠনিক সম্পাদকে দায়িত্ব দিয়েছেন। এই সাংগঠনিক সম্পাদকরা এখন যেকোনো দলীয় বিষয়ে সরাসরি আওয়ামী লীগ সভাপতির সাথে কথা বলছেন। কোনো কোনো ক্ষেত্রে তারা প্রেসিডিয়ামের সদস্য জাহাঙ্গীর কবির নানকের সঙ্গে কথা বলছেন। আওয়ামী লীগের মাহবুবুল আলম হানিফ ছাড়াও দুইজন যুগ্ম-সাধারণ সম্পাদক দলীয় কর্মকাণ্ডে সক্রিয় দেখা যাচ্ছে। এদের মধ্যে রয়েছেন ড. হাছান মাহমুদ এবং ডা. দীপু মনি। তবে মন্ত্রিত্ব থাকার কারণে সার্বক্ষণিকভাবে সাংগঠনিক বিষয়ে তারা মনোযোগ দিতে পারছে না। আওয়ামী লীগের রাজনীতিতে এটি বিরল ঘটনা যে, সাধারণ সম্পাদক অনেকটা নিষ্ক্রিয় এবং রুটিন কাজের মধ্যে নিজেকে আবদ্ধ রেখেছেন। 

তবে আওয়ামী লীগের নেতারা বলছেন যে, ওবায়দুল কাদের অনেক অসুস্থ। তিনি চলছেন শুধু মনের জোরে। এজন্য তার চাপ কমাতেই এরকম ব্যবস্থা করা হচ্ছে। আওয়ামী লীগ একটি বিশাল রাজনৈতিক দল এবং তৃণমূলে প্রতিদিন বিভিন্ন রকম ইস্যু সামনে আসে, যে ইস্যুগুলো তাৎক্ষণিকভাবে সমাধান করতে করতে হয়। কিন্তু ওবায়দুল কাদেরের শারীরিক অসুস্থতার কারণে তাকে এসব বিষয়ে চাপ কম দেওয়ার নীতিগত সিদ্ধান্ত নেয়া হয়েছে। এর পেছনে অন্য কোনো কারণ নেই বলেই আওয়ামী লীগের নেতাকর্মীরা মনে করছেন।


প্রধান সম্পাদকঃ সৈয়দ বোরহান কবীর
ক্রিয়েটিভ মিডিয়া লিমিটেডের অঙ্গ প্রতিষ্ঠান

বার্তা এবং বাণিজ্যিক কার্যালয়ঃ ২/৩ , ব্লক - ডি , লালমাটিয়া , ঢাকা -১২০৭
নিবন্ধিত ঠিকানাঃ বাড়ি# ৪৩ (লেভেল-৫) , রোড#১৬ নতুন (পুরাতন ২৭) , ধানমন্ডি , ঢাকা- ১২০৯
ফোনঃ +৮৮-০২৯১২৩৬৭৭