ওয়ার্ল্ড ইনসাইড

পুতিনকে ঠেকাতে জটিল হিসাব-নিকাশ পশ্চিমা নেতাদের


প্রকাশ: 06/03/2022


Thumbnail

রাশিয়া-ইউক্রেন যুদ্ধ চলমান। এরই মধ্যে ইউক্রেনের আকাশসীমায় বিমান উড্ডয়ন নিষিদ্ধ এলাকা বা নো-ফ্লাই জোন ঘোষণা করতে কিয়েভ আবেদন করেছিল। কিন্তু সেই আবেদন প্রত্যাখ্যান করেছে সামরিক জোট ন্যাটো। ন্যাটোভুক্ত দেশগুলো ইউক্রেনের যুদ্ধ নিজেদের ঘরে টেনে না এসে নানা অবরোধ ও কূটনৈতিক প্রচেষ্টার পথে হাঁটতে চায়। এর ফলে রাশিয়ার প্রেসিডেন্ট ভ্লাদিমির পুতিনকে ঠেকাতে সরাসরি কেউই তার মুখোমুখি না হয়ে নানা জটিল হিসাব-নিকাশ করছেন পশ্চিমা নেতারা।

বার্তা সংস্থা এএফপি জানিয়েছে, রাশিয়ার ওপর নজিরবিহীন নিষেধাজ্ঞা এবং ইউক্রেনকে জোরালো সমর্থন সত্ত্বেও পশ্চিমা রাষ্ট্রগুলো রুশ বাহিনীর হামলা বন্ধ করতে ব্যর্থ হয়েছে। পরিস্থিতি দিনকে দিন আরও খারাপ হওয়ার আশঙ্কা সৃষ্টি হয়েছে। কিন্তু রাশিয়ার প্রেসিডেন্ট ভ্লাদিমির পুতিনের ওপর চাপ বাড়ানোর ক্ষেত্রে পশ্চিমা নেতাদের হাতে খুব বেশি বিকল্পও নেই।

এদিকে বিশ্বের উন্নত অর্থনীতির সাত দেশ জি-৭-এর নেতারা গত শুক্রবার রাশিয়ার ওপর আরও কঠোর নিষেধাজ্ঞা আরোপের ঘোষণা দিয়েছেন। মার্কিন পররাষ্ট্রমন্ত্রী অ্যান্টনি ব্লিঙ্কেনের পক্ষ থেকেও রাশিয়ার ওপর চাপ বাড়ানোর কথা বলা হয়েছে। ইতিমধ্যে ইউরোপীয় মিত্রদের সঙ্গে যুক্তরাষ্ট্র রাশিয়ার আর্থিক ব্যবস্থার বিরুদ্ধে নজিরবিহীন নিষেধাজ্ঞা জারি করেছে। এ ছাড়া গুরুত্বপূর্ণ প্রযুক্তির রপ্তানি নিষিদ্ধ করার পাশাপাশি বিমান চলাচলে নিষেধাজ্ঞাও দিয়েছে। রাশিয়াকে বিভিন্ন খেলা থেকে নিষিদ্ধ করা হয়েছে এবং কয়েক ডজন কোম্পানির ওপর নিষেধাজ্ঞা জারি হয়েছে। তবে এখন পর্যন্ত রাশিয়ার জ্বালানি খাত তুলনামূলকভাবে নিষেধাজ্ঞা থেকে রেহাই পেয়েছে। 

ইউক্রেনে কাজ করা সাবেক মার্কিন রাষ্ট্রদূত উইলিয়াম টেলর বলেন, ‘অনেকেই ভেবেছিলেন নিষেধাজ্ঞার হুমকিতে পুতিনকে আটকানো যাবে। কিন্তু তা হয়নি। বাড়তি নিষেধাজ্ঞাতেও যে কাজ হবে, তা-ও স্পষ্ট নয়।’

এদিকে আল-জাজিরার এক প্রতিবেদনে বলা হয়, ইউক্রেনের প্রেসিডেন্ট ভলোদিমির জেলেনস্কি তার দেশের আকাশসীমায় নো-ফ্লাই জোন ঘোষণা করতে ন্যাটোর প্রতি অনুরোধ জানান। এ নিয়ে শুক্রবার ব্রাসেলসে বৈঠকে বসে ন্যাটো। বৈঠকে ন্যাটো মহাসচিব জেনস স্টলটেনবার্গ জেলেনস্কির অনুরোধ প্রত্যাখ্যান করে বলেন, ‘রাশিয়ার ক্ষেপণাস্ত্র ও বিমান হামলা থেকে ইউক্রেনকে সুরক্ষা দিতে গেলে ন্যাটো বাহিনীকে রুশ বিমান ভূপাতিত করতে হবে। এ পদক্ষেপের কারণে ইউরোপে পুরোদমে যুদ্ধ বেধে যেতে পারে, যেখানে আরও অনেক দেশ জড়িত হবে। আমরা এ সংঘাতের অংশ নই।’

ন্যাটোর এমন ঘোষণার পর শুক্রবার রাতে ক্ষোভ জানিয়ে টেলিভিশনে ভাষণ দেন ভলোদিমির জেলেনস্কি। তিনি বলেন, ‘আজ যে ন্যাটোর সম্মেলন হলো, তা একটি দুর্বল সম্মেলন। এখানে পরিষ্কার হয়ে গেছে যে ইউরোপের স্বাধীনতার জন্য লড়াইকে সবাই একমাত্র লক্ষ্য হিসেবে বিবেচনা করে না। নো-ফ্লাই জোন ঘোষণার প্রস্তাব প্রত্যাখ্যানের মধ্য দিয়ে ইউক্রেনে আরও বেশি বোমা হামলার সবুজ সংকেত দিয়ে দিলেন ন্যাটোর নেতারা।’ 

মার্কিন গবেষণা প্রতিষ্ঠান র‌্যান্ড করপোরেশনের বিশেষজ্ঞ স্যামুয়েল চারাপের মতে, ফ্রান্সের প্রেসিডেন্ট এমানুয়েল মাখোঁ ও জার্মানির চ্যান্সেলর ওলাফ শলৎজের মতো মার্কিন প্রেসিডেন্ট জো বাইডেনের কূটনৈতিক সমাধানের জন্য চেষ্টা চালিয়ে যাওয়া উচিত। নিষেধাজ্ঞার ওপর নির্ভর করেই রাশিয়ার প্রেসিডেন্টকে সৈন্য হঠাতে রাজি করানোর চেষ্টা করতে হবে। চারাপ বলেন, ‘এটা অসম্ভব কাজ। তবে আমি মনে করি, এ মুহূর্তে এটাই সবচেয়ে ভালো উপায়।’এদিকে চীন যুক্তরাষ্ট্র ও ইউরোপীয় ইউনিয়নের জায়গায় নিজস্ব বাজি ধরছে। পশ্চিমা কূটনীতিকেরা মনে করছেন, বর্তমান পরিস্থিতিতে বেইজিং আরও বেশি অস্বস্তিতে পড়ছে। 


প্রধান সম্পাদকঃ সৈয়দ বোরহান কবীর
ক্রিয়েটিভ মিডিয়া লিমিটেডের অঙ্গ প্রতিষ্ঠান

বার্তা এবং বাণিজ্যিক কার্যালয়ঃ ২/৩ , ব্লক - ডি , লালমাটিয়া , ঢাকা -১২০৭
নিবন্ধিত ঠিকানাঃ বাড়ি# ৪৩ (লেভেল-৫) , রোড#১৬ নতুন (পুরাতন ২৭) , ধানমন্ডি , ঢাকা- ১২০৯
ফোনঃ +৮৮-০২৯১২৩৬৭৭