ইনসাইড পলিটিক্স

লাশ তোলা হবে হারিছের


প্রকাশ: 09/03/2022


Thumbnail

হারিছ চৌধুরী আসলেই মারা গেছেন কিনা, সে ব্যাপারে এখনও নিশ্চিত নয় আইন প্রয়োগকারী সংস্থা। গোয়েন্দারা বলছেন যে, তাদের এ নিয়ে এখনো যথেষ্ট সন্দেহ রয়েছে। আর এই প্রেক্ষিতে হারিছ চৌধুরীকে যেখানে সমাধিস্থ করা হয়েছে, সেই কবর খুঁড়ে তার লাশ উত্তোলন করা হবে এবং তার ডিএনএ টেস্ট করে সরকার নিশ্চিত হতে চায় যে এটি হারিছ চৌধুরী কিনা। সাম্প্রতিক সময়ে হারিছ চৌধুরীকে নিয়ে রাজনৈতিক অঙ্গনে তোলপাড় চলছে। এতদিন সবাই জানতো যে, হারিছ চৌধুরী দেশ ত্যাগ করেছেন। পালিয়ে তিনি ভারতে গিয়েছিলেন। সেখান থেকে কানাডা, লন্ডনের কথাও বলা হতো। কিন্তু সাম্প্রতিক সময়ে হঠাৎ করে জানাজানি হয় যে, হারিছ চৌধুরী মারা গেছেন। প্রথমে তার নিকট এক আত্মীয় বলেন যে, হারিছ চৌধুরী মারা গেছেন লন্ডনে। পরবর্তীতে বলা হয় যে, না তিনি লন্ডনে মারা যাননি। তিনি বাংলাদেশেই মৃত্যুবরণ করেছেন। কিন্তু বাংলাদেশে তিনি যদি মারা যান, তাহলে দীর্ঘ ১৪ বছর তিনি আইন-শৃঙ্খলা বাহিনীর নাকের ডগায় কিভাবে থাকলেন এটি একটি বড় প্রশ্ন হিসেবে সামনে এসেছে। 

সাম্প্রতিক সময়ে ট্যাবলয়েড দৈনিক মানবজমিনের প্রধান সম্পাদক মতিউর রহমান চৌধুরী হারিছ চৌধুরীর মৃত্যু নিয়ে একটি অনুসন্ধানী প্রতিবেদন প্রকাশ করেছেন। ওই প্রতিবেদনে তিনি বলেছেন, হারিছ নয় মাহমুদুর রহমান মারা গেছে। যেখানে তিনি বলেছেন যে, হারিছ চৌধুরী তার নাম পরিবর্তন করে মাহমুদুর রহমান নাম ধারণ করেছিলেন এবং সেই মাহমুদুর রহমান নামেই তিনি এনআইডি নিয়েছিলেন। এমনকি নতুন পাসপোর্টও করেছিলেন। ওই প্রতিবেদনে এটাও বলা হয়েছে যে, মাহমুদুর রহমান নামেই তিনি এভারকেয়ার হাসপাতালে ভর্তি হন এবং পরবর্তীতে তিনি করোনায় আক্রান্ত হয়ে মারা যান। তার মৃত্যুর পর তার মেয়ে ঢাকায় এসেছিল বলেও ওই প্রতিবেদনে উল্লেখ করা হয়। এর আগে থেকেই আইন-শৃঙ্খলা রক্ষাকারী বাহিনীর সদস্যরা হারিছ চৌধুরীর মৃত্যুর বিষয়টি নিয়ে সন্দেহ পোষণ করছিল। তারা বলছিল যে, একজন ব্যক্তি যখন মারা যাবে তখন নিশ্চয়ই তার পরিচয় থাকতে হবে। কারণ যদি হারিছ চৌধুরী মাহমুদুর রহমান নামে মারা যান, তাহলে তার উত্তরাধিকার বন্টন কিভাবে হবে সেটিও একটি গুরুত্বপূর্ণ প্রশ্ন।

কারণ হারিছ চৌধুরীর দেশে-বিদেশে নামে-বেনামে বিপুল সম্পদ রয়েছে। এই সম্পদের মালিকানা তখনই তার উত্তরাধিকাররা পাবে যখন নিশ্চিত হওয়া যাবে হারিছ চৌধুরী মৃত হয়েছেন। কিন্তু হারিছ চৌধুরীর যে ডেথ সার্টিফিকেট দেখানো হচ্ছে সেটি মাহমুদুর রহমানের। তাহলে মাহমুদুর রহমানের ডেথ সার্টিফিকেট দিয়ে কি হারিছ চৌধুরীকে মৃত দেখানো যাবে? এই সমস্ত জটিলতার অবসান চায় আইন প্রয়োগকারী সংস্থা। তারা এ কারণেই মাহমুদুর রহমান নামে যে ব্যক্তি মৃত্যুবরণ করেছে সেই ব্যক্তির লাশ উত্তোলন এবং ডিএনএ টেস্ট করার সিদ্ধান্ত নিয়েছে। হারিছ চৌধুরীর ঘটনা যদি সত্যি হয়, তাহলে বাংলাদেশে পলাতক এবং কথিত গুম হওয়া ব্যক্তিদের ক্ষেত্রে একটি নতুন প্রশ্নের জন্ম দেবে। এতদিন যাদেরকে গুম বলা হচ্ছে বা যাদেরকে নিখোঁজ বলা হচ্ছে, তারা আসলে আত্মগোপনে আছেন না, নিখোঁজ হয়েছেন সেই প্রশ্নটা সামনে চলে এসেছে হারিছ চৌধুরীর মৃত্যু ঘটনায়। কারণ বাংলাদেশে চাইলে একজন ব্যক্তি গোয়েন্দাদের নজর এড়িয়ে আত্মগোপনে থাকতে পারেন বছরের পর বছর। এমনকি তিনি ভুয়া এনআইডি এবং পাসপোর্টও বানিয়ে ফেলতে পারেন। এই বাস্তবতায় নতুন করে হারিছ চৌধুরীর ইস্যুটি সামনে এসেছে। আর এ নিয়ে যত প্রশ্ন সেই প্রশ্নের উত্তরগুলোর এখনই মীমাংসা চায় সংশ্লিষ্টরা। 


প্রধান সম্পাদকঃ সৈয়দ বোরহান কবীর
ক্রিয়েটিভ মিডিয়া লিমিটেডের অঙ্গ প্রতিষ্ঠান

বার্তা এবং বাণিজ্যিক কার্যালয়ঃ ২/৩ , ব্লক - ডি , লালমাটিয়া , ঢাকা -১২০৭
নিবন্ধিত ঠিকানাঃ বাড়ি# ৪৩ (লেভেল-৫) , রোড#১৬ নতুন (পুরাতন ২৭) , ধানমন্ডি , ঢাকা- ১২০৯
ফোনঃ +৮৮-০২৯১২৩৬৭৭