তারেক জিয়া এখন বিএনপি'র ভারপ্রাপ্ত চেয়ারম্যান হিসেবে দায়িত্ব পালন করছেন, স্বঘোষিত চেয়ারম্যান বলা যায় তাকে। বিএনপিতে তারেক রাজত্বে সকলের ত্রাহি-ত্রাহি অবস্থা, কেউ স্বস্তিতে নেই। সকলে আতঙ্কে থাকেন কখন কাকে কি ভাষায় কথা বলেন তারেক জিয়া। রাজনৈতিক শিষ্টাচার মানতে রাজি নন, বরং চাকর-বাকরের মত ব্যবহার করেন নেতাদের সঙ্গে। এমনকি তার পিতার সঙ্গে যারা রাজনীতি করেছেন, তার মায়ের সঙ্গে যারা রাজনীতি করেছেন তাদেরকেও অশ্রাব্য ভাষায় গালাগালি করতে এতোটুকু কুণ্ঠাবোধ করেন না লন্ডনে পলাতক বিভিন্ন মামলায় দণ্ডিত এই ব্যক্তিটি। বিভিন্ন সময় বিভিন্ন ব্যক্তিকে ফোন করেন এবং ফোন করে তাকে তাকে বিভিন্ন কথাবার্তা বলার জন্য আদেশ প্রদান করেন। আর এ কারণেই বিএনপির অনেক নেতাই এখন তারেক আতঙ্কে ভুগে। কেউ প্রকাশ্যে কোনো কিছু না বলতে চাইলেও তারা গোপনে বলেন যে, তারেকের কারণে রাজনীতি ছাড়তে হবে। কারণ তারেকের সঙ্গে সম্মান নিয়ে রাজনীতি করা যায় না। তারেকের বিরুদ্ধে বিএনপি নেতাকর্মীদের সবচেয়ে বড় অভিযোগ যে, তিনি নেতাদেরকে ন্যূনতম সম্মান দেখান না এবং তাদের সাথে কথা বলার ক্ষেত্রে ন্যূনতম শ্রদ্ধাবোধটুকু রাখেন না।
সম্প্রতি এরকম একটি ঘটনা ঘটেছে বিএনপির সিনিয়র যুগ্ম মহাসচিব রুহুল কবির রিজভীর ক্ষেত্রে। রিজভী বিভিন্ন বিষয় নিয়ে কথা বলেন এবং দুঃসময়ে বিএনপিতে যারা দৃঢ় অবস্থানে ছিলেন তাদের মধ্যে রিজভী অন্যতম। কিন্তু সেই দিকেই তিনি কঠোর ভাষায় সমালোচনা করলেন। সম্প্রতি রিজভী রুশ-ইউক্রেন যুদ্ধ নিয়ে একটি মন্তব্য করেছিলেন, তিনি বাংলাদেশের পররাষ্ট্রনীতির ব্যর্থতার কথা বলেছিলেন। বলেছিলেন যে, সরকারের ব্যর্থতার জন্যই বাংলাদেশে কোন অবস্থান নিতে পারেননি। কিন্তু এই বক্তব্যটি পছন্দ হয়নি পাকিস্তানের এবং সে কারণেই রিজভীর এই বক্তব্যে ক্ষুব্ধ হয়েছেন তারেক জিয়া। এই বক্তব্য প্রচারিত হওয়ার পরপরই তারেক জিয়া রুহুল কবির রিজভীকে ফোন করেন এবং ফোন করার পর তাকে যা-তা ভাষায় গালাগালি করেন।
রুহুল কবির রিজভী যে রাজনৈতিক দলই করুক না কেন বা তার যে রাজনৈতিক পরিচয়ই থাকুক না কেন, তিনি বিএনপির একজন ত্যাগী ও পরীক্ষিত নেতা। ছাত্র রাজনীতি থেকে উঠে আসা একজন সত্যিকারের রাজনীতিবিদ তিনি। অথচ তাকে বিভিন্ন অশ্রাব্য গালাগালির পর তারেক জিয়া বলেছেন, তোর মুখে কসটেপ লাগিয়ে দেব। আর এসব নিয়ে কথা বলবি না। সারাদিন কথা বলিস কোন কাজ করিস না। তোর মত এ সমস্ত নেতাদেরকে ঘাড় ধাক্কা দিয়ে বিএনপি থেকে বের করে দিতে হবে। তারেক জিয়ার এই বক্তব্যের পর রিজভী ক্ষুব্ধ হয়ে ওঠেন এবং তিনি রাজনীতিবিদ হিসেবে শালীনতা বজায় রেখে কথা বলার নির্দেশ দেন তারককে। তিনি বলেন যে, একজন রাজনীতিবিদের সাথে কিভাবে কথা বলতে হয় তা আপনার জানা উচিত। এই ঘটনার পর থেকে রিজভী আর কোনো বক্তব্য রাখছেন না। তিনি বিএনপির একাধিক নেতাকে বলেছেন, ‘তারেকের মত একজন অসভ্যের সঙ্গে রাজনীতি করবো কিনা তা ভাবার সময় এসেছে।’