ওয়ার্ল্ড ইনসাইড

চারটিতেই জয় বিজেপির, পাঞ্জাবে চমক কেজরিওয়ালের


প্রকাশ: 11/03/2022


Thumbnail

ভারতের সবচেয়ে জনবহুল রাজ্য উত্তরপ্রদেশের পাশাপাশি উত্তরাখণ্ড ও মণিপুরের বিধানসভা নির্বাচনে নিরঙ্কুশ সংখ্যাগরিষ্ঠতা পেয়েছে ক্ষমতাসীন ভারতীয় জনতা পার্টি (বিজেপি)। এছাড়া গোয়ায় অল্পের জন্য নিরঙ্কুশ সংখ্যাগরিষ্ঠতা অর্জন করতে পারেনি দলটি। এদিকে, পাঞ্জাবে প্রথমবারের মতো ক্ষমতায় এসেছে অরবিন্দ কেজরিওয়ালের নেতৃত্বাধীন আম আদমি পার্টি (আপ)। রাজধানী নয়াদিল্লির বাইরে পাঞ্জাবই প্রথম কোনো রাজ্য যেখানে দলটি ক্ষমতার স্বাদ নিতে যাচ্ছে।
 
সম্প্রতি কয়েক ধাপে ভোটগ্রহণের পর বৃহস্পতিবার (১০ মার্চ) একসঙ্গে ভারতের মোট পাঁচটি রাজ্যে বিধানসভা নির্বাচনের ফল ঘোষণা হয়। ফলে বিজেপির জয়জয়কারের পাশাপাশি দেখা যায়, ঐতিহ্যবাহী দল জাতীয় কংগ্রেস বেশ খারাপ করেছে। কোনো রাজ্যেই শক্ত প্রতিদ্বন্দ্বিতা গড়ে তুলতে পারেনি তারা।  

এবার সবচেয়ে বেশি নজর ছিল উত্তরপ্রদেশে। কারণ এই রাজ্যে রয়েছে সর্বাধিক ৮০টি লোকসভা আসন। উত্তরপ্রদেশে জয়ী দল অনেক সময়ই কেন্দ্রে সরকার গড়ে। সেকারণে এই রাজ্যের বিধানসভা ভোটের হিসাব দেখে আগামীতে লোকসভা ভোটের চিত্র অনেকটাই অনুমান করা যায়।  

নরেন্দ্র মোদি সরকারের বিতর্কিত কৃষি আইনের জেরে দীর্ঘদিনের কৃষক আন্দোলনের জেরে উত্তর প্রদেশে যোগী আদিত্যনাথের নেতৃত্বাধীন বিজেপি সরকারের জনপ্রিয়তা কমে যাওয়ার আশঙ্কা করা হচ্ছিল। ভোটের আগে রাজ্যের লখিমপুর খেরিতে কেন্দ্রীয় মন্ত্রীর ছেলের গাড়িবহরের চাপায় কৃষকের মৃত্যুর ঘটনাও ভোটের বাক্সে ধস নামাতে ভূমিকা রাখবে বলে অনুমান ছিল অনেকের।  

এ অবস্থায় ভোটের লড়াইকে ‘৮০ ভাগ বনাম ২০ ভাগ’ আখ্যা দিয়ে নির্বাচনকে হিন্দু বনাম মুসলিমের লড়াই বলে মরীয়া প্রচার চালান কট্টরপন্থী হিসেবে পরিচিত নেতা যোগী আদিত্যনাথ। অন্যদিকে অখিলেশ যাদবের সমাজবাদী পার্টি (এসপি) ও তার নেতৃত্বাধীন জোট নির্বাচনে মুসলিম ও নিম্নবর্ণের হিন্দুদের ভোট টানার চেষ্টা করেন। হাথরসে আলোচিত দলিত নারী ধর্ষণ ও হত্যা এবং লখিমপুর খেরির ঘটনা নিয়ে সোচ্চার ছিল কংগ্রেস। গান্ধী পরিবারের সদস্য প্রিয়াঙ্কা গান্ধী নির্বাচনে সক্রিয় ভূমিকা পালন করেন রাজ্যে। কিন্তু সবকিছুকে পাশ কাটিয়ে শেষ হাসিটা হাসলেন যোগী আদিত্যনাথই। ধারণা করা হচ্ছে, নির্বাচনে যোগীর এই সাফল্য আগামী দিনে কেন্দ্রীয় বিজেপিতে গুরুত্বপূর্ণ স্তরে উন্নীত করবে তাঁকে। ১৯৬০ সালের পর কোনো নেতা উত্তরপ্রদেশে টানা দুবার মুখ্যমন্ত্রী হননি। কিন্তু যোগী আদিত্যনাথ তা-ই হতে চলেছেন।  

রাজধানীতে বছরব্যাপী কৃষক আন্দোলনে সবচেয়ে বড় ভূমিকা রেখেছিল পাঞ্জাব রাজ্যের কৃষকরা। নির্বাচনের আগে রাজ্যটিতে ক্ষমতাসীন কংগ্রেসের গৃহবিবাদ শুরু হয়। কংগ্রেসদলীয় মুখ্যমন্ত্রী অমর সিংহ পদত্যাগ করে নতুন দল গড়েন। তার পদত্যাগের পরও মেটেনি দ্বন্দ্ব। কংগ্রেস নেতা নভোজিত সিং সিধু ও মুখ্যমন্ত্রী চরণজিত্ সিংহ চান্নির মধ্যে নতুন করে ক্ষমতার দ্বন্দ্ব বাঁধে। ক্ষমতাসীন দলের অস্থিরতার সুযোগ নিয়ে আম আদমি পার্টি (আপ) রাজ্যে জায়গা করে নিল। আপ-এর উত্থান রাজধানী নয়াদিল্লিতে একসময়ের দুর্নীতিবিরোধী নাগরিক আন্দোলনের নেতা অরবিন্দ কেজরিওয়ালের হাত ধরে। নয়াদিল্লিতে টানা তিনবারের মুখ্যমন্ত্রী তিনি। বলা হচ্ছে, দিল্লিতে কেজরিওয়ালের সরকারের ভূমিকা পাঞ্জাব জয়ে ভূমিকা রেখেছে।  ভারতে রাজ্য স্তর থেকে উঠে আসা কোনো দলের অন্য কোনো রাজ্যে গিয়ে ক্ষমতা দখলের নজির নেই। ভগবন্ত মনের নেতৃত্বে পাঞ্জাবে সেই বিরল কাজটি করেছে আপ।  


প্রধান সম্পাদকঃ সৈয়দ বোরহান কবীর
ক্রিয়েটিভ মিডিয়া লিমিটেডের অঙ্গ প্রতিষ্ঠান

বার্তা এবং বাণিজ্যিক কার্যালয়ঃ ২/৩ , ব্লক - ডি , লালমাটিয়া , ঢাকা -১২০৭
নিবন্ধিত ঠিকানাঃ বাড়ি# ৪৩ (লেভেল-৫) , রোড#১৬ নতুন (পুরাতন ২৭) , ধানমন্ডি , ঢাকা- ১২০৯
ফোনঃ +৮৮-০২৯১২৩৬৭৭