আশি-নব্বই দশকের ঢাকাই চলচ্চিত্রে সাড়া জাগানো চিত্রনায়ক সোহেল চৌধুরী। ক্যারিয়ারের সোনালি সময়ে তাকে গুলি করে হত্যা করে সন্ত্রাসীরা। দেড় যুগ পর এই নায়কের হত্যা মামলার বিচারকাজ শুরু হচ্ছে। হত্যা মামলায় সাক্ষ্যগ্রহণের জন্য আগামী ২০ মার্চ দিন ধার্য করেছেন আদালত।
বৃহস্পতিবার (১০ মার্চ) ঢাকার দ্রুত বিচার ট্রাইব্যুনাল-২-এর বিচারক জাকির হোসেন এ দিন ধার্য করেন। সংশ্লিষ্ট ট্রাইব্যুনালের অতিরিক্ত পাবলিক প্রসিকিউটর সাদিয়া আফরিন শিল্পী গণমাধ্যমকে বিষয়টি নিশ্চিত করেছেন।
তিনি বলেন, ‘আসামিদের উপস্থিতির জন্য আজ দিন ধার্য ছিল। আসামিদের মধ্যে তারিক সাঈদ মামুনকে কারাগার থেকে আদালতে হাজির করা হয়। তবে আসামি হারুন অর রশীদ ওরফে লেদার লিটন ওরফে বস লিটন কারাগারে থাকলেও তাকে হাজির করা হয়নি। এ ছাড়াও আসামি আদনান সিদ্দিকী, ফারুক আব্বাসীর পক্ষে সময়ের আবেদন করা হয়। সেই আবেদন গ্রহণ করে সাক্ষ্য শুরুর নতুন দিন ধার্য করেন বিচারক।’
এদিকে ট্রাম্পস ক্লাবের মালিক আফাকুল ইসলাম ওরফে বান্টি ইসলাম, ব্যবসায়ী আজিজ মোহাম্মদ ভাই ওরফে আব্দুল আজিজ ও সেলিম খানের পক্ষে কোনো পদক্ষেপ নেননি তাদের আইনজীবীরা। বাকি দুই আসামি শীর্ষ সন্ত্রাসী সানজিদুল ইসলাম ইমন ও আশিষ রায় চৌধুরী ওরফে বোতল চৌধুরী পলাতক।
উল্লেখ্য, ১৯৯৮ সালের ১৮ ডিসেম্বর রাজধানীর বনানীর ১৭ নম্বর রোডের আবেদীন টাওয়ারে ট্রাম্পস ক্লাবের নিচে নায়ক সোহেল চৌধুরীকে গুলি করে হত্যা করে সন্ত্রাসীরা। ঘটনার দিনই নিহত সোহেল চৌধুরীর ভাই তৌহিদুল ইসলাম চৌধুরী গুলশান থানায় আদনান সিদ্দিকীকে আসামি করে একটি হত্যা মামলা দায়ের করেন। ১৯৯৯ সালের ৩০ জুলাই ডিবি পুলিশের সহকারী কমিশনার আবুল কাশেম ব্যাপারী আসামি আদনান সিদ্দিকীসহ নয়জনের বিরুদ্ধে অভিযোগপত্র দাখিল করেন।
অভিযোগপত্রে ফারুক আব্বাসী ছাড়া অপর আসামিরা হলেন- ব্যবসায়ী আজিজ মোহাম্মদ ভাই ওরফে আব্দুল আজিজ, ট্রাম্পস ক্লাবের মালিক আফাকুল ইসলাম ওরফে বান্টি ইসলাম, তারিক সাঈদ মামুন, সেলিম খান, হারুন অর রশীদ ওরফে লেদার লিটন ওরফে বস লিটন, আশীষ রায় চৌধুরী ওরফে বোতল চৌধুরী ও শীর্ষ সন্ত্রাসী সানজিদুল ইসলাম ইমন।
২০০১ সালের ৩০ অক্টোবর ঢাকার তৃতীয় অতিরিক্ত মহানগর দায়রা জজ আদালত আসামিদের বিরুদ্ধে অভিযোগ গঠন করে। এর দুই বছর পর আসামিদের মধ্যে একজন হাইকোর্টে আবেদন করেন। সেই আবেদনের পরিপ্রেক্ষিতে ২০০৩ সাল থেকে দীর্ঘ ১৯ বছর হাইকোর্টের আদেশে সোহেল হত্যা মামলার বিচারকাজ স্থগিত ছিল। গত ২৭ ফেব্রুয়ারি স্থগিতাদেশ প্রত্যাহার হলে ফের মামলাটিতে সাক্ষ্য গ্রহণের প্রক্রিয়া শুরু হয়।