ইনসাইড গ্রাউন্ড

দোষ কি কেবল সাকিবের, বিসিবি কি দায় এড়িয়ে যাচ্ছে না?


প্রকাশ: 11/03/2022


Thumbnail

বার বার বিতর্কের চূড়ান্ত সীমানায় সাকিব আল হাসান। রেকর্ডের সাকিব যেমন আলোচনায়, তেমন টেস্ট খেলা না খেলা নিয়েও আছেন সমালোচনায়। বিশ্বের অন্যতম এই অলরাউন্ডার টেস্টে নিয়মিত নন। সম্প্রতি বোর্ডের কাছে ৯ মাসের ছুটিও চেয়েছিলেন। এরইমধ্যে সাকিবকে ৩০ এপ্রিল পর্যন্ত ছুটি দিয়েছে বিসিবি। তবুও সাকিব আছেন তিন ফরম্যাটের চুক্তিতে। ব্যাপারটা অনেকের কাছেই বিস্ময়কর। এক্ষেত্রে সম্পূর্ণ দোষ সাকিবের ওপর চালিয়ে দেয়াটাও ঠিক নয়। বিসিবিরও ব্যাপারটা ক্লিয়ার করার প্রয়োজন ছিল। সাকিব যেমন বাংলাদেশের ক্রিকেটকে অনেককিছু দিয়েছে, আজকে ক্রিকেটের জন্যই সাকিব আল হাসানকে পুরো দুনিয়া চেনে এটাও ভুলে গেলে চলবে না।

সাকিবকে নিয়ে বিসিবির নির্বাচকেরা একেক সময় দিচ্ছেন একেক মন্তব্য দিচ্ছেন। শুক্রবার মিরপুরে নির্বাচক আব্দুর রাজ্জাকের কাছেও তাই এ নিয়ে ছিলো সাংবাদিকদের প্রশ্ন। জবাবে আব্দুর রাজ্জাক বললেন ‘ছুটির (৩০ এপ্রিল পর্যন্ত সাকিবের ছুটি) যে কথা বলছেন তা আনুষ্ঠানিক কিছু না। কেউ দুইটা সিরিজ বিশ্রাম নিলে তাকে তিন ফরম্যাটের চুক্তিতে রাখা যাবে না, এমন নিয়ম নেই। এখানে সিস্টেম হলো, বোর্ড প্রথমে কথা বলেছে কে কোন ফরম্যাটে খেলতে চায় এবং তারপরই সিদ্ধান্ত নেওয়া হয়েছে।’ তাছাড়াও সাকিব এখনও টেস্ট থেকে অবসর বা সরে দাঁড়ানোর ঘোষণা দেননি, এমন দাবি করে রাজ্জাক জানালেন- ‘সাকিব কিন্তু এখনো কোনো ফরম্যাট থেকে সরে যায়নি বা অবসর নেয়নি। সে ওই মাপের খেলোয়াড় যে, নিজে স্বেচ্ছায় কোনো ফরম্যাট থেকে না সরলে বোর্ড তাকে সরিয়ে দিতে পারে না, এটা কঠিন। এখনো সাকিবের সঙ্গে আমাদের ওইভাবে কথা হয়নি। তাই ফট করে একটা কথা বলা ঠিক না, কথা হলে জানতে পারবেন।’

আবার এদিকে সাকিব না খেললে বিসিবি ‘ডোন্ট কেয়ার’, খুব তো বলে দিলেন জাতীয় ক্রিকেট দলের টিম ডিরেক্টর খালেদ মাহমুদ সুজন। উল্লেখ্য, তিনি এও বলেছিলেন তার বয়স ৫১, কিন্তু এখনো খেলতে ইচ্ছে করে। এখানে প্রশ্ন হলো, উনার সময় কি তিনি সাকিবের মতো পারফরমেন্স দেখিয়েছিলেন? তিনি আরো বলেছেন, "কেউ যদি খেলতে না চায় তাঁর জন্য বাংলাদেশ দল বসে থাকবে এটা ভুল চিন্তা। ওকে রিকোয়েস্ট করার কিছুই নেই, ও তো আমাদের এমপ্লয়ি।" সাকিবের এখন থামার সময় হয়েছে বলে মনে করে খালেদ মাহমুদ সুজন বলেন, "সাকিব বিসিবি চালাতে পারে না। সে বলতে পারে না, আমি আজ খেলবো কাল খেলবো না।" এক্ষেত্রেও অনেক জবাব দেয়ার থাকতে পারে। সাকিবকে নিয়ে এরকম মন্তব্য কতটা গ্রহণযোগ্য? বিসিবির উচিৎ ছিলো সাকিবকে নিয়ে প্রেস কনফারেন্স করে দুই পক্ষের মতামত নিয়ে একটা সিদ্ধান্তে আসা। সেটি না করে হুট করে ৩০ এপ্রিল পর্যন্ত বিশ্রাম দিয়ে দেয়ার বিষয়টা অনেকটাই বোর্ডের দায়সারা ছেলেখেলা মনোভাবের বহিঃপ্রকাশ। সাকিব ছাড়াও এই মুহূর্তে তামিম ইকবাল ছয় মাসের জন্য টি-টোয়েন্টি থেকে বিরতি নিয়েছেন এবং মুস্তাফিজুর রহমান ঘোষণা দিয়েছেন, যতদিন বায়ো-বাবল থাকবে তিনি টেস্ট ক্রিকেট খেলবেন না।

সাকিবের বিরুদ্ধে এখন অভিযোগ উঠেছে, সাকিব নিজের অবস্থান স্পষ্ট করছেন না। সাকিব আল হাসান বোর্ডের অধীনে খেলেও রুলসের বাইরে তো যাওয়ার অধিকার রাখেন না। সাকিবের মতো রোল মডেল একজন খেলোয়াড় যদি এরকম করে এবং বোর্ড তার বিরুদ্ধে ব্যবস্থা না নিয়ে এভাবে চলতে থাকে, কিছুদিন পর জুনিয়ররাও এমন করলে ক্রিকেট দল কোথায় গিয়ে দাঁড়াবে, এই ভাবনাটা কি ভাবার সময় এখনো আসেনি বিসিবির? প্রশ্ন কিন্তু থেকেই থেকেই যায়। এই ধোঁয়াশা থেকে বের হতে হলে ভারটা নেয়ার দায়িত্ব বিসিবিকেই নিতে হবে।


প্রধান সম্পাদকঃ সৈয়দ বোরহান কবীর
ক্রিয়েটিভ মিডিয়া লিমিটেডের অঙ্গ প্রতিষ্ঠান

বার্তা এবং বাণিজ্যিক কার্যালয়ঃ ২/৩ , ব্লক - ডি , লালমাটিয়া , ঢাকা -১২০৭
নিবন্ধিত ঠিকানাঃ বাড়ি# ৪৩ (লেভেল-৫) , রোড#১৬ নতুন (পুরাতন ২৭) , ধানমন্ডি , ঢাকা- ১২০৯
ফোনঃ +৮৮-০২৯১২৩৬৭৭